4.6 C
New York
Thursday, December 25, 2025
No menu items!

Buy now

No menu items!
Home Blog

পিপিএ ২০০৬(পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬)-PPA 2006

0

পিপিআর ও পিপিএ এর মধ্যে পার্থক্য কি?

 পিপিআর (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা) এবং পিপিএ (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন) দুটোই সরকারি প্রকিউরমেন্ট প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।

পার্থক্য:

বিষয়পিপিএপিপিআর
পূর্ণ নামপাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮
কার্যকর৩১ জানুয়ারী ২০০৮৩১ জানুয়ারী ২০০৮
উদ্দেশ্যসরকারি প্রকিউরমেন্টে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করাপিপিএ ২০০৬ এর বিধান বাস্তবায়নের জন্য নিয়ম-কানুন প্রণয়ন
বিষয়বস্তুপ্রকিউরমেন্ট নীতি, পদ্ধতি, দরপত্র নথি, কমিটি, আপত্তি, শাস্তিদরপত্র আহ্বান, মূল্যায়ন, চুক্তি, তদন্ত, শাস্তি
আইনি অবস্থানমূল আইনমূল আইনের পরিপূরক
পরিবর্তনবারবার সংশোধিতবারবার সংশোধিত
উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনই-প্রকিউরমেন্ট, SME, প্রযুক্তি ব্যবহার

সহজ ভাষায়: পিপিএ হল মূল নীতিমালা এবং পিপিআর হল নীতিমালা বাস্তবায়নের নিয়মাবলী

উদাহরণ: পিপিএ বলে যে দরপত্র প্রক্রিয়া উন্মুক্ত হতে হবে। পিপিআর বলে কিভাবে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করতে হবে, মূল্যায়ন করতে হবে এবং ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পিপিএ ও পিপিআর একসাথে কাজ করে সরকারি প্রকিউরমেন্টে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে। আইন ও বিধিমালা পরিবর্তনশীল হতে পারে। 

Cox’s Bazar To Chittagong Train Schedule With Ticket Price

0
Cox's Bazar To Chittagong Train Schedule With Ticket Price

Cox’s Bazar is one of the main attractions of Bangladesh. The Cox’s Bazar Sea Beach is the world’s largest unbroken natural sea beach about 150 Kilometers. There are many options for traveling to Cox’s Bazar. You can go there easily and can return from Cox’s Bazar easily too.

Cox’s Bazar To Chittagong Intercity Train Schedule

Traveling from Cox’s Bazar to Chittagong or If you are just returning from a tour to Cox’s Bazar it’s not a pain at all. Cause Bangladesh Railway has made available two Intercity trains on the route.

Train Name Off Day Departure Arrival
COXS BAZAR EXPRESS (813) Mon 12:30 pm 03:40 pm
PARJOTAK EXPRESS (815) Sun 08:00 pm 10:50 pm

Cox’s Bazar To Chittagong Intercity Train Ticket Price

Here you are seeing the list of the train tickets available for Cox’s Bazar route when you are traveling from Cox’s Bazar to Chittagong. The Train ticket’s price is minimal and the journey is worth it. So, have a safe journey.

Seat Category Ticket Price (15% VAT)
Shovan
Shovan Chair 250
1st Seat
1st Birth
Snigdha 470
Ac Seat
AC Birth —-

Dhaka To Cox’s Bazar Train Schedule With Ticket Price

0

Cox’s Bazar Train
Cox’s Bazar Train

Dhaka is the capital city of Bangladesh; linking all the cities of Bangladesh and standing in the middle. A train journey from Dhaka to Cox’s Bazar is a pleasant one; a home sick mind can be refreshed through the journey.

Dhaka To Cox’s Bazar Intercity Train Schedule

There are two trains on the route. The off day of this train service in Monday. And If you rea willing to book a ticket from Dhaka to Cox’s Bazar’; then wait nop longer and check this list.

Train Name Off Day Departure Arrival
COXS BAZAR EXPRESS (814) Mon 10:30 pm 07:20 am
PARJOTAK EXPRESS (816) Sun 06:15 am 03:00 pm

Dhaka To Cox’s Bazar Train Ticket Price

To arrange a journey from Dhaka To Cox’s Bazar you must need to know Dhaka To Cox’s Bazar Train ticket Price. The Coxs Bazar Express (814) is an inter-city direct train from Dhaka to Chittagong and to Cox’s Bazar.

Seat Category Ticket Price (15% VAT)
Shovan
Shovan Chair 695
1st Seat
1st Birth
Snigdha 1325
Ac Seat
AC Birth

ই-জিপি গাইড লাইন (e-GP Guideline)

0

বাংলাদেশে ইলেক্ট্রনিক প্রকিউরমেন্ট কার্যক্রম (e-GP) পরিচালনার লক্ষ্যে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এর ৬৫(২) ধারার ক্ষমতাবলে সরকার Bangladesh e-Government Procurement (e-GP) Guidelines প্রণয়ন করেছে ……

টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতি, ২০২৩

প্রজ্ঞাপন

টেকসই সরকারি ক্রয় (এসপিপি) নীতি, ২০২৩

Sustainable Public Procurement (SPP) Policy, 2023

রবিবার, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩
নং ২১.০০.০০০০,৩৬৩,.২২.১৪৯.২৩,.১৩৭ তারিখঃ ১৬ নভেম্বর ২০২৩

১. প্রস্তাবনা

১.১ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জলবায়ু-পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হিসাবে বাংলাদেশ সামন্টিক-অর্থনৈতিক এবং বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় জলবায়ু সমস্যাকে একীভূত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। সরকার এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনকে সরকারের পরিকল্পনা ও সরকারি ব্যয় প্রক্রিয়ার মূলধারায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে সরকার তার নীতি, প্রেক্ষাপট, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, দুর্বলতা পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের জন্য জলবায়ুসংক্রান্ত সরকারি ব্যয়ের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো (CPEIR 2012) শীর্ষক একটি সমীক্ষা পরিচলনা করে। CPEIR 2012-এর সুপারিশ অনুসরণ করে সরকার ২০১৪ সালে একটি জলবায়ু সংক্রান্ত রাজস্ব কাঠামো (CFF) প্রণয়ন করে। এর দুটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য (পাঁচটির মধ্যে) ছিল:

(ক) জলবায়ু অর্থায়নে একটি বৃহত্তর জাতীয় অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা; এবং
(খ) বাংলাদেশে “ঝুঁকিসহনীয় উন্নয়ন” এবং “সবুজ উন্নয়ন”-এর সুযোগ সম্প্রসারিত করা। বর্তমানে বাজেট পরিপত্র (BC)-4 জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন দিক বিবেচিত হচ্ছে। মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো (Mid-term Budgetary Framework-MTBF)-এর অধীনে জলবায়ু নীতি, কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা (যেমন – BCCSAP) অন্তর্ভুক্ত করে বাজেট প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। বর্তমানে ২৫ টি মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তরকে জলবায়ু-সম্পৃক্ত বিবেচনা করা হয়েছে, যেখানে কার্বন নিঃসরণ কমানো এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহায়তা করার জন্য দেশের সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাজেটের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।

১.২ সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বছরে প্রায় ২৫ বিলিয়ন অর্থ ব্যয় করে, যা দেশটির বার্ষিক বাজেটের প্রায় ৪০%-এর সমপরিমাণ। কার্যকর সরকারি ক্রয় জনগণের কাছে যথাসময়ে মানসম্পন্ন সরকারি সেবা সরবরাহ নিশ্চিত করার মূল চাবিকাঠি। সরকারি ক্রয় এবং বিদ্যমান আইনি-কাঠামো অনুশীলনের ক্ষেত্রে কিছু “মান” যাচাইয়ের মাধ্যমে “সর্বনিম্ন-মূল্য” চুক্তি অনুসরণ করা হয়। সর্বনিম্ন মূল্য চুক্তি দীর্ঘমেয়াদে পণ্যগুলোর সর্বাধিক সুবিধা নিশ্চিত নাও করতে পারে। কারণ প্রথাগত ক্রয়, ক্রয়ের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যয় বিবেচনা করে না।

১.৩ দেশের সরকারি ক্রয়-পদ্ধতিতে এখনও টেকসই ক্রয়ের বিভিন্ন দিক (সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশ ও পরিচালন) বিবেচিত হয়নি; প্রত্যাশিত যে, টেকসই ক্রয়ের দিকগুলো অন্তর্ভূক্ত এবং “সমগ্র জীবনচক্র ব্যয়” (WLCC) বিবেচনা করে “সর্বোচ্চ সাশ্রয়ী সুবিধাজনক দরপত্র” (MEAT) নির্বাচন সর্বোচ্চ সুবিধা নিশম্চিতকরণে সহায়তা করতে পারে। বিদ্যমান আইনি কাঠামোতে টেকসই সরকারি ক্রয়ের (SPP) বিভিন্ন দিকের প্রবর্তন দেশকে টেকসই/সবুজ সরকারি ক্রয়ের দিকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখতে পারে।

১.৪ টেকসই ফলাফল প্রবর্তন এবং অব্যাহত উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে সরকার নতুন চুক্তির জন্য এই টেকসই সরকারি ক্রয় (এসপিপি) নীতি তৈরি করেছে, যার আলোকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো (PSO) নিজেদের বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ক্রয়সেবা প্রদান করে। সরকারি টেকসই ক্রয়নীতি নিম্নলিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিত করার জন্য ক্রয়কারী সংস্থাকে (PE) নির্দেশনা প্রদান করবে:

  • টেকসই ক্রয় বিষয়ক (সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশ) জ্ঞানের বিকাশ;
  • টেকসই কর্মসূচির বিষয়ে কার্যকরভাবে সাড়া দেওয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি;
  • সরবরাহ ব্যবস্থায় (supply chain) টেকসই-বিষয়ক এজেন্ডার দৃশ্যমানতা ও উপলব্ধির বিকাশ এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্তকরণ; এবং
  • টেকসই সরবরাহ সক্রিয়ভাবে পরিচালনা, পরিবীক্ষণ এবং প্রতিবেদন করার জন্য চুক্তি ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার উন্নয়ন।

১.৫ সরকারি ক্রয়কে তখনই টেকসই ক্রয় বলা হবে যখন এটি টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) চাহিদা, কারিগরি বিনির্দেশ এবং মানদণ্ডগুলোকে একীভূত করবে এবং যা সম্পদের কার্যকারিতা, পণ্যের মান ও সেবার গুণগতমান বৃদ্ধি এবং ক্রয়ের ক্ষেত্রে সামগ্রিক ব্যয় (TC) সমন্বয় করার মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষা, সামাজিক অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমর্থন করবে।

১.৬ কার্যকর, সামঞ্জস্যপূর্ণ, ন্যায়সংগত ও জবাবদিহিমূলক পদ্ধতিতে টেকসই ব্যবস্থার সংজ্ঞার্থ অনুসরণ করে পণ্য, কার্য এবং সেবাসমূহ ক্রয়ের লক্ষ্যে ক্রয়কারী (PE)-S সহায়তার জন্য টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতি পরিকল্পনা করা হয়েছে। সরকারি ক্রয়ে কীভাবে টেকসই গুণাগুণ নিশ্চিতকরণ এবং সর্বোচ্চ সাশ্রয়ী ও সুবিধাজনক ক্রয়-সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় সে-বিষয়ে এই নীতি প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রদান করে। সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (CPTU) টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ক্রয়কারী (PE)-এর সুবিধা ও ব্যবহারের জন্য মানদন্ড (template) ও আদর্শ দরপত্র দলিল সরবরাহ করবে। অন্যান্য আইনি পাঠ সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত সিপিটিইউ থেকে সরবরাহকৃত এসপিপি নীতি এবং পরবর্তী মানদণ্ড ও নির্দেশিকা সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান অনুসরণ করবে।

২. সাধারণ বিধান

২.১ টেকসই সরকারি ক্রয় বাস্তবায়নে সরকারের নির্বাচিত ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে সক্ষম করতে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (IMED)-এর সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (CPTU) টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতি প্রণয়ন করছে।

২.২ ক্রয়কারী (PE) টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং এই নীতির আলোকে (বিভিন্ন সময়ে) নির্ধারিত ও উদ্ভাবিত মাপকাঠি অনুযায়ী টেকসই সরকারি ক্রয় সম্পন্ন করবে।

২.৩ সকল ক্রয়কারী (PE) টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP)-এর জন্য উপযুক্ত শৃঙ্খলা এবং সকল সংস্থায় প্রয়োগকৃত যে-কোনো সংগতিপূর্ণ আইনি বা নীতিগত শর্ত নিশ্চিত করবে।

২.৪ টেকসই সরকারি ক্রয় টেকসই-সংক্রান্ত তিনটি স্তম্ভ যথা- পরিবেশগত, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক নীতি মেনে চলবে;

২.৫ টেকসই সরকারি ক্রয় এমনভাবে পরিচালিত হবে যা জবাবদিহিতা, ন্যায্যতা, প্রতিযোগিতা, সমানুপাতিকতা এবং স্বচ্ছতাকে উৎসাহিত করে।

২.৬ টেকসই সরকারি ক্রয়নীতি প্রয়োগের সময় “অর্থের সর্বোত্তম উপযোগিতা” (VfM) প্রধান বিবেচ্য হবে।

২.৭ টেকসই সরকারি ক্রয়নীতি সংক্রান্ত নির্দেশিকা এবং আদর্শ ছক (ফর্ম) এ নীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে বিবেচিত হবে এবং তা সিপিটিইউ-এর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

৩. উদ্দেশ্য

৩.১ টেকসই সরকারি ক্রয়নীতির সাধারণ লক্ষ্য হলো সরকারি ক্রয়ে টেকসই ক্রয়ের মূলনীতি প্রবর্তন এবং বাংলাদেশের সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত আইনি-কাঠামোর সঙ্গে এর ক্রমান্বয়িক একীভূতকরণ ও বাস্তবায়ন।

৩.২ অভীষ্ট কর্মপ্রক্রিয়াসহ সুনির্দিষ্ট কতিপয় লক্ষ্যমাত্রা প্রণীত হবে, যা সেই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করবে (সারণি-১)। সরকার এসডিজি-এর অধীন টেকসই-বিষয়ক উদ্দেশ্য ও প্রতিশ্রুতিসমূহ পূরণে ক্রয়কারী ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যাতে সরকারি ক্রয় কার্যক্রমকে টেকসইকরণ এবং শিশুশ্রম ও অপচয় হ্রাসকরণ বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

৩.৩ উল্লেখযোগ্য টেকসই প্রভাব থাকতে পারে এমন চুক্তির ক্ষেত্রে এই নীতিটি সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান (PSO)-কে টেকসই পণ্য ও সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রয়-প্রক্রিয়া শুরু করার পূর্বে অর্থনৈতিক, পরিবেশগত, সামাজিক সুবিধা এবং ঝুঁকিসমূহ বিবেচনা করতে দায়বদ্ধ করবে।

৩.৪ টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতি বাস্তবায়নকল্পে এসপিপি গাইডসহ সকল দলিলাদি সিপিটিইউ-এর ওয়েবসাইটে (www.cptu.gov.bd) প্রকাশ করা হবে এবং যে-কোনো অংশীজন বিনামূল্যে তা ডাউনলোড করতে পারবে।

সারণি – ১

8. প্রয়োগ ও পরিধি

৪.১ উপর্যুক্ত লক্ষ্যমাত্রায় টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতির পরিধি এবং আওতা হবে নিম্নবুপ :

৪.১.১ সারাদেশে সরকারি ক্রয়ের দরপত্র প্রক্রিয়াকরণ এবং চুক্তি ব্যবস্থাপনায় এ নীতিটি প্রযোজ্য হবে।

৪.১.২ কোনো সরকারি ক্রয়কারী সংস্থা কর্তৃক নিজস্ব ক্রয় সম্পাদন অথবা নির্বাহক এজেন্সি হিসাবে অন্য কোনো স্বত্বাধিকারী সংস্থার ক্রয়ের ক্ষেত্রে টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতির ধারাগুলো প্রযোজ্য হবে৷

8.১.৩ টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতি প্রার্থমিকভাবে নির্বাচিত SPP পণ্যগুলোর জন্য প্রযোজ্য হবে (পরিশিষ্ট-১); এবং বাজার অধ্যয়ন, প্রভাব মূল্যায়ন ও বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে ক্রমাগতভাবে সম্প্রসারণ করা হবে৷

৪.১.৪ প্রাথমিকভাবে চুক্তির গ্রহণযোগ্যতা কেবল সর্বনিম্ন-মূল্যায়িত-গ্রহণযোগ্য দর হিসাবে নির্ধারণ করা হবে না, বরং ক্রয়কৃত যে-কোনো পণ্য এবং সেবার মেয়াদ পর্যন্ত বিদ্যমান উপযোগিতা বিবেচনা করা হবে। টেকসই-সংক্রান্ত প্রভাব মূল্যায়নে যে-কোনো সরঞ্জামের প্রত্যাহার এবং “সমগ্র জীবনচক্রে’ অন্য যে-কোনো বিষয় বিবেচিত হবে।

৪.১.৫ প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সমগ্র জীবনচক্র ব্যয় (WLC) এর বিশ্লেষণ আবশ্যিকভাবে ক্রয়-প্রক্রিয়ার অংশ হবে, যার ন্যুনতম আওতা :

  • উৎপাদন, বিতরণ, স্থাপন (installation),
  • জ্বালানি, পানির ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণসহ পরিচালন ব্যয়;
  • প্রত্যাহার এবং নিষ্পত্তিসহ মেয়াদোত্তীর্ণ ব্যয়।

৪.১.৬ এই টেকসই সরকারি ক্রয়নীতির প্রয়োগ প্রশ্নে অন্তর্ভুক্ত কার্যকলাপ সম্ভাব্য প্রভাবের সমানুপাতিক হবে। উদাহরণস্বরুপ: মুখ্য ও বহু-সরবরাহকারীর নিকট হতে ক্রয় এবং দীর্ঘমেয়াদি ফ্রেমচুক্তির ক্ষেত্রে সাধারণ ক্রয় কার্যক্রমের চেয়ে সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।

৫. সংজ্ঞার্থ

৫.১ “পণ্যের মূল্য (CoP)” অর্থ একটি নির্দিষ্ট মূল্যে প্রাপ্য টেকসই পণ্য ও সেবা যা অ-টেকসই পণ্য ও সেবার মূল্যের তুলনায় ১০%-এর অধিক হবে না;

৫.২ “সবুজ ক্রয় (GP)” অর্থ এমন পণ্য বা সেবা ক্রয়, যা পরিবেশের উপর ন্যুনতম বিরুপ প্রভাব সৃষ্টি করে;

৫.৩ “সর্বোচ্চ সাশ্রয়ী সুবিধাজনক দরপত্র (MEAT)” অর্থ সেই দরপত্র যা কারিগরি গুণাগুণ, নান্দনিকতা ও কার্যকারিতা, পরিবেশেগত বৈশিষ্ট্য, চলমান ব্যয়, ব্যয় সাজুয্য, বিক্রয়োত্তর সেবা, কারিগরি সহায়তা, সরবরাহের তারিখ এবং সরবরাহকাল অথবা সরবরাহ সম্পন্নের সময়কাল ও অন্যান্য বিষয় (সংশ্লিষ্ট চুক্তি অনুযায়ী যা উপযুক্ত)-সহ পণ্যের গুণগতমান ও মূল্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যয় বিবেচনায় রেখে পণ্য বা সেবার জীবনচক্রে ব্যয়িত অর্থের সর্বোত্তম উপযোগিতা দান করে;

৫.৪ “সরকারি খাতের সংস্থাসমূহ (PSOs)” অর্থ সরকারি খাতের মালিকানাধীন এবং সরকার কর্তৃক পরিচালিত সংস্থাগুলো;

৫.৫ “সরকারি ক্রয় (PP)” অর্থ জাতীয় বাজেট থেকে ক্রয়কারী (PE)-এর অনুকূলে বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ দিয়ে ক্রয়কারী সংস্থা (PE) কর্তৃক ক্রয়;

৫.৬ “টেকসই পণ্যসমূহ (SPs)” অর্থ নির্বাচিত পণ্য ও উপকরণ, যা বিকল্প পণ্য ও উপকরণের তুলনায় মানব স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের উপর কম বিরুপ প্রভাব ফেলে; এই তুলনার মধ্যে কাঁচামাল অধিগ্রহণ, উৎপাদন, প্রস্তুতকরণ, মোড়কজাতকরণ, বিতরণ, পুনর্ব্যবহার বা নবায়ন, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ ক্রয়তব্য সকল দরপত্রকৃত পণ্যের জীবন-চক্র মূল্যায়ন অন্তর্ভূক্ত থাকবে;

৫.৭ “টেকসই সেবা (SS)” অর্থ এমন সেবা, যা প্রতিযোগী সেবাগুলোর তুলনায় মানব স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য অধিকতর উপকারী বা ন্যুনতম বিরুপ প্রভাব সম্পন্ন;

৫.৮ “টেকসই উন্নয়ন (SD)” অর্থ এমন এক ধরনের উন্নয়ন যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিজস্ব চাহিদা পূরণের সক্ষমতার সঙ্গে আপস না করে বর্তমানের চাহিদা পূরণ করে। টেকসই উন্নয়ন অর্জনের জন্য তিনটি মূল উপাদানের সমন্বয় করা অত্যন্ত জরুরি : অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ও পরিবেশগত সুরক্ষা, যেগুলো পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং ব্যক্তি ও সমাজের কল্যাণের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ;

৫.৯ অর্থের সর্বোত্তম উপযোগিতা (VfM)” অর্থ সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং সম্পদের প্রাপ্যতা বিবেচনায় রেখে ব্যবহারকারীর প্রয়োজনীয়তা পূরণকল্পে, সমগ্র জীবনচক্র ব্যয় এবং প্রয়োজনীয় গুণমানের বিন্যাসসাধন; VfM-এর নীতি গ্রাহকের প্রত্যাশা পূরণের উদ্দেশ্যে সমগ্র জীবনচক্র ব্যয় এবং গুণমান বা উদ্দেশ্য পূরণের সক্ষমতার সর্বোত্তম সময় নিশ্চিত করে। একটি টেকসই অবস্থা বা সনদপত্র অর্জনের জন্য একটি পণ্যের টেকসই গুণমান এবং এর টেকসই উৎপাদনের শর্তাদি পূরণ করতে হবে;

৫.১০ “সমগ্র জীবনচক্র ব্যয় (WLCC)” অর্থ একটি পণ্যের ক্রয় থেকে শুরু করে নিঃশেষ হওয়া পর্যন্ত (জীবনচক্র ব্যয়) উক্ত পণ্যের জন্য কত ব্যয় করতে হবে, তা প্রাক্কলন করার প্রক্রিয়া; এবং

৫.১১ “জীবনচক্র ব্যয় (LCC)” অর্থ সকল ব্যয় যা পণ্য বা সেবার মেয়াদকালে নির্বাহ করা হবে; প্রাথমিক ক্রয়মূল্যসহ সরবরাহ, স্থাপন (installation), বিমা ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত ব্যয়ও এর অন্তর্ভূক্ত হবে; এছাড়াও শক্তি, জ্বালানি ও পানির ব্যবহার, খুচরা যন্ত্রাংশ ও রক্ষণাবেক্ষণসহ পরিচালনা ব্যয় এবং মেয়াদকালীন খরচ যেমন- প্রত্যাহার বা নিষ্পত্তি বা অবশিষ্ট মূল্য, যা পণ্য বিক্রয়লব্ধ এবং নেতিবাচক পরোক্ষ প্রভাব হতে উদ্ভুত ব্যয় (cost of externalities), যেমন – গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ ইত্যাদিসহ বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্যান্য ব্যয়, যা পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাবের সম্পর্কযুক্ত, তা এর অন্তর্ভূক্ত হবে।

৬. ধারণা

৬.১. টেকসই ক্রয়কে এভাবে সংজ্ঞিত করা যায় যে, “এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান তার পণ্য, কার্য বা সেবা এবং উপযোগসমূহের (utilities) চাহিদা এমনভাবে পূরণ করে, যা শুধু এ প্রতিষ্ঠানের জন্যই নয় বরং সমাজ ও অর্থনীতির জন্যও সুবিধা সৃষ্টির ক্ষেত্রে সমগ্র জীবনের ভিত্তিতে অর্থের সর্বোত্তম উপযোগিতা (VfM) নিশ্চিত করে; পাশাপাশি পরিবেশের ক্ষতিও হ্রাস করে।” এই সংজ্ঞার্থটি টেকসই-সংক্রান্ত তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত; সেগুলো হলো : পরিবেশগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্তম্ভ।

৬.২ সরকারি ক্রয়কে টেকসই বলা হবে যখন এর প্রয়োজনীয়তা, বিনির্দেশ (specifications) ও নির্ণায়ক (determinant)-কে একীভূত করে যেগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং পরিবেশের সুরক্ষা, সামাজিক অগ্রগতির অনুকূল এবং সম্পদের সক্ষমতা সন্ধানের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমর্থন জোগায়, পণ্য ও সেবার মান উন্নত করে এবং শেষ পর্যন্ত ব্যয়কে সর্বোত্তমভাবে বিন্যস্ত করে।

৬.৩ উল্লিখিত তিনটি স্তম্ভ আন্তঃসম্পর্কযুক্ত; সেগুলো টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) এর উপাদানগুলোকে অনুসরণ করে এবং টেকসই ফলাফল তৈরিতে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত।

৭. টেকসই সরকারি ক্রয়ের মানদন্ডের আলোকে সরকারি ক্রয়চক্র

৭.১ প্রাক-ক্রয় (Pre-procurement)

৭.১.১ নিম্নোক্ত যে-কোনো একটি বিষয় মূল্যায়নের জন্য ক্রয়কারী (PE)-কে চাহিদা নিরুপণ, বাজার বিশ্লেষণ এবং বাজার সংযোগ স্থাপন করতে হবে:

  • পণ্য ক্রয়ের প্রয়োজনীয়তা অথবা সেই প্রয়োজনীয়তা অন্য কোনো উপায়ে পূরণের উপায়;
  • ক্রয় করা হবে এমন টেকসই পণ্যের প্রভাব যাচাই;
  • একই সেবা প্রাপ্তির সঙ্গে আপস না করে পণ্য বা সেবার পরিমাণ বা মাত্রা হ্রাস করার সম্ভাবনা;
  • তাদের চাহিদা পূরণের জন্য বিকল্প পণ্য বা সেবার প্রাপ্যতা;
  • ক্রয় করা হবে এমন পণ্য বা কার্যের জন্য সমগ্র জীবনচক্র যাচাইয়ের প্রযোজ্যতা;
  • টেকসই বিকল্পের প্রাপ্যতা।

৭.১.২ ক্রয়সংক্রান্ত দলিল যেমন – ক্রয়-পরিকল্পনা, দরপত্র দলিল ইত্যাদির বিকাশ, লেটিং এবং ব্যবস্থাপনা সরকারি শর্তের অধীনের আবশ্যক বাধ্যবাধকতাসমূহ পূরণকল্পে ত্রয়কারীর সামর্থকে সহায়তা প্রদান করবে এবং এই এসপিপি নীতি ও কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।

৭.২ ক্রয়-পদ্ধতি নির্ধারণ

৭.২.১ প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়া আবশ্যিকভাবে অনুসরণ করতে হবে।

৭.২.২ দরপত্র প্রক্রিয়ায় নারী উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান (WOEs)-সহ ক্ষুদ্র ও মাবারি প্রতিষ্ঠানের (SMEs) সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য যতটা সম্ভব নমনীয় ক্রয়-পদ্ধতি বিবেচনা করা যেতে পারে।

৭.২.৩ নারী উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান (WOEs)-সহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান (SMEs) সম্প্রসারিত করার উপায় যেমন – টেন্ডার ডকুমেন্টেশনের জটিলতা হ্রাস করা, চুক্তিগুলোকে ছোটো লটে বিভক্ত করা, একজন দরপত্রদাতাকে দেওয়া যেতে পারে এমন লটের সংখ্যা সীমিত করা, যাতে দরপত্র ও আগ্রহ ব্যক্তকরণপত্র (EoI) দাখিলের জন্য দীর্ঘ সময়ের অনুমতি দেওয়া যায় এবং উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন-সাপেক্ষে দরপত্র প্রদান করা যায়।

৭.৩ চুক্তির বিষয় ব্যাখ্যাকরণ

৭.৩.১ চুক্তির বিষয় ব্যাখ্যা করার জন্য অনুসৃত মানকে একটি ব্যাকস্টপ (Backstop) হিসাবে গণ্য করা এবং সংশ্লিষ্ট পণ্য ও সেবা ক্রয় করার সময় ন্যুনতম মান অবশ্যই বজায় রাখা উচিত।

৭.৩.২ এক্ষেত্রে চুক্তির বিষয়বস্তু টেকসই পণ্য ও সেবা ক্রয় করার বিষয়টি স্পষ্টভাবে নির্দেশ করবে।

৭.৪ দরপত্রদাতা নির্বাচন/বিযুক্তকরণ

৭.8.১ আদর্শ দরপত্র দলিল (STDs)-এ টেকসই সরবরাহকারী, সেবাদানকারী এবং ঠিকাদারদের নির্বাচন/বাতিলের নির্ণায়ক (যা সময়ের সঙ্গে নির্ধারণ করা যেতে পারে) অন্তর্ভূক্ত হবে।

৭.৫ কারিগরি বিনির্দেশ

৭.৫.১ একটি আদর্শ পণ্য প্রত্যয়ন পদ্ধতি (যেমন – BSTI, ISO ইত্যাদি) থাকবে যা টেকসই পণ্য এবং সেবা নির্ধারণে প্রত্যয়নের জন্য ব্যবহৃত হবে।

৭.৫.২ সকল ক্রয়কারী এবং সরবরাহকারীকে অবশ্যই ক্রয়-দলিলে উল্লিখিত বাধ্যতামূলক সরকারি মানদন্ড গুলো মেনে চলতে হবে।

৭.৫.৩ ক্রয়-দলিলে উল্লিখিত মানদন্ডগুলোকে অতিক্রম করে যায় এমন প্রস্তাব, যা সর্বোত্তম প্রস্তাব হিসাবে পরিগণিত, তা উপস্থাপনের জন্য সরবরাহকারীদের উৎসাহিত করতে হবে।

৭.৬ বিজয়ী দরদাতা নির্বাচনের মানদণ্ড

৭,৬.১ টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) বাস্তবায়নে দরপত্র মূল্যায়নে ক্রয়কারী টেকসই সরকারি ক্রয় (SPP) নীতি পর্যালোচনা ও অনুসরণ করবে।

৭.৬.২ যে দরপত্রগুলো ন্যুনতম সাধারণ মানদণ্ড আর্থিক মানদণ্ড এবং যোগ্যতা ও দক্ষতার মানদণ্ড পূরণ করেছে সেগুলিকে টেকসই সংক্রান্ত ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কাজের মানদন্ডের বিপরীতে যোগ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে নির্ধারিত সামাজিক মানদণ্ড অর্থনৈতিক মানদণ্ড এবং পরিবেশগত মানদন্ডের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা যেতে পারে।

৭.৬.৩ দরপত্র আহবানের ক্ষেত্রে রেটিং পদ্ধতিসহ ব্যবহৃত সকল টেকসই-বিষয়ক মানদন্ড সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।

৭.৭ চুক্তি ব্যবস্থাপনা

৭.৭.১ সকল চুক্তি সামাজিক ও পরিবেশগত আইনের সঙ্গে অবশ্যই বিদ্যমান প্রাসঙ্গিক সরকারি ক্রয় আইন প্রতিপালন যতদূর সম্ভব ক্রয়-দলিলে উল্লেখ করতে হবে।

৭.৭.২ সরবরাহকারী এবং সরবরাহকৃত পণ্যের নির্দিষ্টকৃত বৈশিষ্ট্যগুলো ও চুক্তির শর্তাবলি প্রতিপালন করা হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করার জন্য চুক্তি চলাকালীন কর্মকৃতি পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। টেকসই ফলাফলের জন্য আবশ্যিক শর্ত পূরণ করে কি না, তা যাচাই করার জন্য চুক্তির সমগ্র মেয়াদে পর্যালোচনা সভা এবং সরবরাহকারীর পর্যায়ক্রমিক নিরীক্ষা সম্পাদন করতে হবে।

৭.৭.৩ ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন যেমন – বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশ্যে ও স্বচ্ছভাবে টেকসই- বিষয়ক ফলাফল উপস্থাপন করতে হবে।

৮. পরিচালন

৮.১ টেকসই সরকারি ক্রয় ক্রয় বিষয়ক সময়াবদ্ধ কৌশলগত কার্যক্রম (পরিশিক্ট-২) অনুযায়ী এই নীতির কার্যকরী বাস্তবায়নের দায়িত্ব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ)-এর উপর ন্যস্ত থাকবে। অধিকন্তু প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সিপিটিইউ, আইএমইডি এই নীতির এক্তিয়ারের মধ্যে থাকা ব্যক্তিবর্গকে উল্লিখিত দায়িত্ব অর্পণ করতে পারে।

৮.২ টেকসই সরকারি ক্রয় নীতির বাস্তবায়ন এবং নির্দেশনার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের টেকসই সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটি (SPPSC) গঠন করা হবে। সিপিটিইউ, আইএমইডি নির্দিষ্ট কর্মপরিধি (ToR)-সহ SPPSC গঠন করবে (পরিশিষ্ট-৩)।

৮.৩ টেকসই ক্রয় লক্ষ্যমাত্রা পূরণকল্পে সিপিটিইউ, আইএমইডি প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা, স্পষ্টীকরণ প্রদান ও জারি করবে।

৮.৪ বাস্তবায়নের সহায়তা করার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো (PSO) সরবরাহকারীদের সঙ্গে কাজ করবে এবং টেকসই পণ্য ও সেবাগুলো নির্ধারণ করবে, যা মানব স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের উপর ন্যুনতম বিরুপ প্রভাব ফেলবে।

৮.৫ SPPSC বার্ষিকভাবে ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে টেকসই ক্রয়ের ভিত্তিতে একটি প্রতিষ্ঠানকে “শ্রেষ্ট” (champion) হিসাবে নির্বাচন করবে:

  • প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে টেকসই ক্রয় সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা;
  • প্রতিবেদন প্রস্তুত প্রক্রিয়া (Reporting) এবং কর্মক্ষমতা ট্র্যাকিং সিস্টেম এর বিকাশ সাধন করা;
  • সামগ্রিক টেকসই সরকারি ক্রয়নীতির অধীনে চুক্তির সংখ্যা এবং টেকসই সরকারি ক্রয়ে গুণগতমান বিবেচনা করে অধিকসংখ্যক চুক্তির সফল বাস্তবায়ন;
  • প্রস্তুতকারক ও সরবরাহকারী এবং পরামর্শদাতা ও ঠিকাদারদের জন্য “আচরণবিধি” (Code of conduct) তৈরি।

৮.৬ পরিবর্তিত প্রয়োজন, পরিস্থিতি ও অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে টেকসই সরকারি ক্রয় নীতিটি পর্যায়ক্রমিক বাস্তাবায়নের নিমিত্ত টেকসই সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটি কর্তৃক (SPP নীতি) প্রতি ছয় মাসে পর্যালোচনা করা হবে।

৮.৭ টেকসই সরকারি ক্রয় SPP প্রক্রিয়ার সমন্বয়, সক্ষমতা বিকাশ, আইনি কাঠামো সংশোধনে সিপিটিইউ, আইএমইডি নেতৃত্ব প্রদান করবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, আদর্শ দরপত্র দলিল প্রস্তুত করবে এবং দলিলগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠান (PSO)-এর প্রাপ্তিসাধ্য করবে।

৮.৮ পরিশিষ্ট-২-এ উল্লেখিত টেকসই সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত সময়াবদ্ধ কৌশলগত কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

৯. যোগাযোগ

এই নীতির উন্নয়নে কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শের জন্য অনুগ্রহ করে সিপিটিইউ, আইএমইডি (www.cptu.gov.bd বা www.imed.gov.bd)-তে যোগাযোগ করুন।

পরিশিষ্ট-১

পরীক্ষামূলক বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিকভাবে অনুসরণীয় এসপিপি পণ্য ও সেবার তালিকা

১. কাগজ ও কাগজজাত পণ্য;
২. অফিস সামগ্রী;
৩. কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম ও সামগ্রী;
৪. অফিস আসবাবপত্র বা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাঠের সরঞ্জাম;
৫. যানবাহন ও অন্যান্য পরিবহণ সরঞ্জাম;
৬. মুদ্রণ সামগ্রী

পরিশিষ্ট-২

টেকসই সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত সময়াবদ্ধ কৌশলগত কার্যক্রম

১. সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে টেকসই নীতি প্রবর্তন এবং এই টেকসই সরকারি ক্রয় নীতি ২০২৩ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকারি ক্রয়-কাঠামোর সঙ্গে ধীরে ধীরে একীভূত করা।

২. একটি বাধ্যতামূলক নির্দেশিকা জারির মাধ্যমে আদর্শ দরপত্র দলিলে ন্যুনতম টেকসই সরকারি ক্রয় নীতির বিধান অন্তর্ভূক্ত করা এবং ২০২৪ সালে এর পরীক্ষামূলক বাস্তবায়ন।

৩. আইনি পরিধিতে অন্তর্ভূক্তির জন্য ২০২৫ সালে টেকসই সরকারি ক্রয় নির্দেশিকা এবং আদর্শ দরপত্র দলিলের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ থেকে প্রাপ্ত শিখনের ওপর ভিত্তি করে প্রাসঙ্গিক টেকসই সরকারি ক্রয় বিধানগুলোকে অন্তর্ভূক্ত করে সরকারি ক্রয় আইন, ২০০৬ (পিপিএ ২০০৬) এবং সরকারি ক্রয় বিধি ২০০৮ (পিপিআর ২০০৮) সংশোধন করা।

৪. কমপক্ষে দুটি গুরুত্বপূর্ণ টেকসই-সংক্রান্ত মূল সূচকের নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে উপরিউক্ত কৌশলগত উদ্যোগের মূল্যায়ন: ক) সরকারি ক্রয়-প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের অংশীদারিত্ব; এবং খ) প্রাসঙ্গিক চুক্তিপত্র টেকসই সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত নির্ধারিত মানদন্ড ব্যবহার করে এমন সরকারি সংস্থার সংখ্যা।

৫. সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ২০২৬ সালের পরে এর প্রভাবসহ অগ্রগতি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সারাদেশে টেকসই সরকারি ক্রয় নীতি চালু করা।

পরিশিষ্ট-৩

টেকসই সরকারি ত্রয় সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটির কর্মপরিধি

১. টেকসই সরকারি ক্রয় নীতি, কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন।
২. সিপিটিইউ/আইএমইডি-কে নীতি নির্দেশাবলি প্রদান।
৩. টেকসই পণ্য, কার্য ও সেবা নির্বাচনের জন্য নির্দেশনা প্রদান।
৪. টেকসই সরকারি ক্রয়নীতি, ব্যবহৃত ক্রয়-দলিল এবং টেকসই উপাদান কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করার সময়ের ওপর ভিত্তি করে টেকসই-সংক্রান্ত উপাদান অনুমোদন।
৫. অংশীজনদের সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধন।
৬. অংশীজনদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তাদের টেকসই ক্রয় বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা।
৭. টেকসই পণ্য, কার্য ও সেবার জন্য বাজার সৃষ্টির নির্দেশনা প্রদান।

পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ (PPA-06) | Public Procurement Rules-06

সূচী পত্র

প্রথম অধ্যায়ঃ প্রাথমিক বিষয়াদি

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন

প্রথম অধ্যায়ঃ প্রাথমিক বিষয়াদি (ধারা ০১-০৪)

এখানে একটি ধারা নিয়ে আলোচনা করা হলো। তবে পাঠকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই “প্রকিউরমেন্টবিডি” তে উল্লেখিত আইনের ধারা বা বিধিমালার কোন বিষয় যাচাই ব্যতীত ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে। এখানে ব্যবহৃত যে কোন ধার বা বিধি শুধু মাত্র বিভিন্ন আলোচনা ও সংশ্লিষ্ট প্রেক্ষাপট বোধগম্য করার জন্য উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবিক প্রয়োজনে সিপিটিইউ এর ওয়েব-সাইটে সংযুক্ত আইন বা বিধিমালা থেকে তা ব্যবহার করতে হবে।

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন-

(১) এই আইন পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ নামে অভিহিত হইবে ৷

(২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে ইহা বলবৎ হইবে৷

২। সংজ্ঞা

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) “অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ” অর্থ আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ মোতাবেক পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের জন্য চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদন প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ;

(২) “আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ” অর্থ সরকারী ক্রয়কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ বা উহার অধীন প্রদত্ত আর্থিক ক্ষমতা পুনঃঅর্পণ আদেশ;

(৩) “আবেদনকারী” অর্থ ধারা ৩২(ক) এর অধীন সীমিত দরপত্র পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত হইবার জন্য, বা ষষ্ঠ অধ্যায়ের অংশ-২ এর অধীন প্রাক্‌-যোগ্যতা নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাক্‌-যোগ্যতা অর্জনের জন্য, বা ধারা ৫৪ এর অধীন আগ্রহ ব্যক্তকরণের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হইবার জন্য, আগ্রহী ব্যক্তি;

(৪) “উন্মুক্তকরণ (opening) কমিটি” অর্থ ধারা ৬ এর অধীন গঠিত দরপত্র উন্মুক্তকরণ বা প্রস্তাব উন্মুক্তকরণ কমিটি;

(৫) “কোটেশন” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত আর্থিক সীমা সাপেক্ষে, সহজলভ্য প্রমিত পণ্য, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের জন্য দরপত্রদাতাগণের নিকট হইতে লিখিতভাবে প্রাপ্ত মূল্য জ্ঞাপক প্রস্তাব;

(৬) “কার্য” অর্থ রেলপথ, রাস্তা, সড়ক, মহাড়ক বা কোন ভবন, অবকাঠামো বা কাঠামো বা স্থাপনা নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ, সাইট প্রস্তুতকরণ, অপসারণ, মেরামত, রক্ষাণাবেক্ষণ বা নবরূপদান সংক্রান্ত সকল কাজ, অথবা খননকার্য, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সংস্থাপন, ডেকোরেশনসহ যে কোন প্রকারের নির্মাণ কাজ এবং উহার সহিত সংশ্লিষ্ট ভৌত সেবা যদি উহার মূল্য কার্যের মূল্য অপেক্ষা অধিক না হয়;

(৭) “ক্রয়” অর্থ কোন চুক্তির অধীন পণ্য সংগ্রহ বা ভাড়া করা বা সংগ্রহ ও ভাড়ার মাধ্যমে পণ্য আহরণ এবং কার্য বা সেবা সম্পাদন;

(৮) “ক্রয়কারী (procuring entity)” অর্থ সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের জন্য প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতাসম্পন্ন কোন ক্রয়কারী;

(৯) “ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান (Head of the Procuring entity)” অর্থ কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব, সরকারী অধিদপ্তর বা পরিদপ্তরের প্রধান বা, ক্ষেত্রমত, বিভাগীয় কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার, জেলা জজ বা পদনাম নির্বিশেষে কোন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, স্বায়তত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা কর্পোরেশন অথবা কোম্পানী আইনের অধীন নিগমিত কোন সংস্থার প্রধান নির্বাহী;

(১০) “ঠিকাদার” অর্থ এই আইনের অধীন কোন কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে ক্রয়কারীর সহিত চুক্তি সম্পাদনকারী ব্যক্তি;

(১১) “দরপত্র” বা “প্রস্তাব” অর্থ দরপত্র দাখিলের আহবান বা, ক্ষেত্রমত, প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কোন দরপত্রদাতা বা কোন পরামর্শক কর্তৃক পণ্য, কার্য বা সেবা সরবরাহের জন্য ক্রয়কারীর নিকট দাখিলকৃত দরপত্র বা প্রস্তাব; এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোটেশনও দরপত্রের অন্তুর্ভূক্ত হইবে;

(১২) “দরপত্র দলিল” বা “প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিল” অর্থ দরপত্র বা প্রস্তাব প্রস্তুত করিবার ভিত্তি হিসাবে ক্রয়কারী কর্তৃক কোনো দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে সরবরাহকৃত দলিল;

(১৩) “দরপত্রদাতা” অর্থ দরপত্র দাখিলকারী ব্যক্তি;

(১৪) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত বা অনুরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক সরকারী গেজেটে বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্ধারিত;

(১৫) “নৈতিক বিধি” অর্থ ক্রয় কার্যের অংশগ্রহণের সময় কোন ব্যক্তি কর্তৃক অবশ্য পালনীয় কোন শর্ত বা বিধান;

(১৬) “পণ্য ” অর্থ কাঁচামাল, উৎপাদিত পণ্য দ্রব্য ও যন্ত্রপাতি এবং কঠিন, তরল বা বায়বীয় আকারে পণ্য দ্রব্য, বিদ্যুৎ, প্রস্তুতকৃত কম্পিউটার সফটওয়্যার (Off-the-shelf) ও অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তিজাত অথবা সমজাতীয় সফটওয়্যার এবং পণ্য সংশ্লিষ্ট সেবা, যদি উহার মূল্য পণ্যের মূল্য অপেক্ষা অধিক না হয়;

(১৭) “পরমার্শক” অর্থ বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা প্রদানের জন্য ক্রয়কারীর সহিত চুক্তিবদ্ধ ব্যক্তি;

(১৮) “পাবলিক প্রকিউরমেন্ট” অর্থে সরকারী তহবিল দ্বারা ক্রয়কে বুঝাইবে;

(১৯) “প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ” অর্থ, যথাক্রমে সংশ্লিষ্ট ক্রয়কারী, ক্রয়কারী কার্যালয়, প্রধান, মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব;

(২০) “প্রাক-যোগ্যতা” অর্থ দরপত্রে অংশগ্রহণের পূর্বশর্ত হিসাবে যোগ্যতা প্রদর্শনের জন্য আহবান জানাইবার প্রক্রিয়া;

(২১) “ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি” অর্থ পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবার মূল্য এবং, ক্ষেত্রমত, পরিমাণ বা অনুমিতি সম্পর্কিত শর্তাধীন কোন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের জন্য একা বা একাধিক ক্রয়কারীর সহিত এক বা একাধিক সরবরাহকারীর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সম্পাদিত চুক্তি;

(২২) “বিজ্ঞাপন” অর্থ ব্যাপক প্রচারের উদ্দেশ্যে সংবাদপত্র, ওয়েবসাইট বা অন্য কোন গণমাধ্যমে ধারা ৪০ এর অধীন প্রদত্ত বিজ্ঞাপন;

(২৩) “ব্যক্তি” অর্থ ক্রয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণে আগ্রহী ব্যক্তি, ব্যক্তিবর্গ, ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, কোম্পানী, সংঘ, সমবায় সমিতিকে বুঝাইবে;

(২৪) “বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত”অর্থ বুদ্ধিবৃত্তিক অথবা পেশাগত বিষয়ে চুক্তিতে বর্ণিত মতে পরামর্শক কর্তৃক পরামর্শ প্রদান, বা কোন কম্পিউটার সফটওয়্যার ও অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তিজাত অথবা সমজাতীয় সফটওয়্যার প্রস্তুতকরণ, বা ডিজাইন প্রণয়ন, বা কাজের তত্ত্বাবধান বা ব্যবহারিক জ্ঞান হস্তান্তর বিষয়ক সেবা, এবং সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্দিষ্টকৃত কোন বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা;

(২৫) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(২৬) “ভৌত সেবা” অর্থ

(ক) পণ্য সরবরাহ বা কার্য সম্পাদনের সহিত সম্পর্কিত সুযোগ-সবিধা প্রদানকারী উপকরণাদি বা কোন প্রতিষ্ঠানের ভবন ও সরঞ্জাম পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বা জরিপ বা অনুসন্ধানমূলক খননকার্য;

(খ) নিরাপত্তা সেবা, পরিবেশন সেবা, ভূতত্ত্ব বিষয়ক সেবা বা একক সেবাদানমূলক চুক্তির অধীনে তৃতীয় পক্ষ প্রদত্ত কোন সেবা; বা

(গ) প্রাক-জাহাজীকরণ পরিদর্শন [Pre-Shipment Inspection (PSI)] এজেন্ট নিয়োগ, ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়াডিং এজেন্ট নিয়োগ, পণ্য পরিবহন কাজ, ভাড়ায় যানবাহন সংগ্রহ, মালামাল পরিবহনের জন্য পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগ বা বীমা ঝুঁকি; বা

(ঘ) আউটসোর্সিং (out-sourcing) এর মাধ্যমে ক্রয়কারী কর্তৃক সেবা গ্রহণের লক্ষ্যে এই আইনের অধীন নির্দিষ্ট্কৃত কোন সেবা বা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্য সরকার গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্দিষ্টকৃত কোন সেবা;

ব্যাখ্যা: এই দফায় উল্লিখিত আউটসোর্সিং (out-sourcing) বলিতে এর মাধ্যমে সেবা গ্রহণের বিষয়টি সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশে ̈ সময়ে সময়ে জারীকৃত বিধিমালা বা নীতিমালা বা অনুরূপ কোন নির্দেশনাকে বুঝাইবে।;

(২৭) “মান” অর্থ পণ্য, কার্য বা সেবার গুণগত মান;

(২৮) ‘‘মূল্যায়ন কমিটি” অর্থ ধারা ৭ এর অধীন গঠিত দরপত্র বা প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি;

(২৯) “রেসপনসিভ” অর্থ দরপত্র দলিল বা প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিলে ঘোষিত ও নির্দিষ্টকৃত মূল্যায়ন নির্ণায়কের ভিত্তিতে বিবেচিতব্য;

(৩০) “রিভিউ প্যানেল” অর্থ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেল;

(৩১) “লিখিতভাবে’‘ অর্থ যথাযথভা স্বাক্ষরযুক্ত হাতে লিখিত বা যন্ত্র দ্বারা মুদ্রিত কোন যোগাযোগ এবং যথাযথভাবে প্রমাণীকৃত ফ্যাক্স বা ইলেকট্রনিক বার্তাও উহার অন্তর্ভূক্ত হইবে;

(৩২) “সরকারী ক্রয়” অর্থ এই আইনের অধীন সরকারী তহবিল ব্যবহারের মাধ্যমে কোন ক্রয়কারী কর্তৃক ক্রয়;

(৩৩) “সরকারি তহবিল ” অর্থ সরকারি বাজেট হইতে ক্রয়কারীর অনুকূলে বরাদ্দকৃত অর্থ, অথবা কোন উন্নয়ন সহযোগী বা বিদেশী রাষ্ট্র বা সংস্থা। কর্তৃক সরকারের মাধ্যমে ক্রয়কারীর অনুকূলে ন্যস্ত অনুদান ও ঋণ এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকারি, আধা-সরকারি বা কোন আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্কার তহবিল;

(৩৪) “সরবরাহকারী” অর্থ এই আইনের অধীন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা সরবরাহের উদ্দেশ্যে ক্রয়কারীর সহিত চুক্তি-সম্পাদনকারী ব্যক্তি;

(৩৫) “সংক্ষিপ্ত তালিকা” অর্থ ধারা ৫৪ এর অধীন আগ্রহ ব্যক্তকরণের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাপ্ত আবেদনপত্র মূল্যায়নের পর বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা প্রদানের প্রস্তাব দাখিলের আহবান জানাইবার জন্য যোগ্য বিবেচিত আবেদনকারীগণের তালিকা;

(৩৬) “সংশ্লিষ্ট সেবা” অর্থ পণ্য সরবারহ চুক্তির সহিত সম্পর্কিত সেবা;

(৩৭) “সেবা” অর্থ সংশ্লিষ্ট সেবা, ভৌত বা বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ৷

৩৷ প্রয়োগ ও প্রযোজ্যতা

(১) সমগ্র বাংলাদেশে এই আইনের প্রয়োগ হইবে ৷

(২) এই আইন নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্র প্রযোজ্য হইবে, যথাঃ-

(ক) কোন ক্রয়কারী কর্তৃক সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়;

(খ) সংশ্লিষ্ট আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন সরকারি, আধা-সরকারি বা কোন আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত সংবিধিবদ্ধ সংস্কার তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়;

(গ) কোন কোম্পানী, কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত, সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়;

(ঘ) কোন উন্নয়ন সহযোগী বা কোন বিদেশী রাষ্ট্র বা সংস্থার সহিত সরকারের সম্পাদিত কোন ঋণ, অনুদান বা অন্য কোন চুক্তির অধীন, কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ঃ

তবে শর্ত থাকে যে, সম্পাদিত কোন চুক্তির শর্তে ভিন্নতর কিছু থাকিলে উক্ত চুক্তির শর্ত প্রাধান্য পাইবে।

৪৷ আইনের প্রাধান্য –

অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের, বিধানাবলী কার্যকর হইবে ৷


২। সংজ্ঞা

প্রথম অধ্যায়ঃ প্রাথমিক বিষয়াদি (ধারা ০১-০৪)

এখানে একটি ধারা নিয়ে আলোচনা করা হলো। তবে পাঠকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই “প্রকিউরমেন্টবিডি” তে উল্লেখিত আইনের ধারা বা বিধিমালার কোন বিষয় যাচাই ব্যতীত ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে। এখানে ব্যবহৃত যে কোন ধার বা বিধি শুধু মাত্র বিভিন্ন আলোচনা ও সংশ্লিষ্ট প্রেক্ষাপট বোধগম্য করার জন্য উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবিক প্রয়োজনে সিপিটিইউ এর ওয়েব-সাইটে সংযুক্ত আইন বা বিধিমালা থেকে তা ব্যবহার করতে হবে।

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন-

(১) এই আইন পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ নামে অভিহিত হইবে ৷

(২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে ইহা বলবৎ হইবে৷

২। সংজ্ঞা

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) “অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ” অর্থ আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ মোতাবেক পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের জন্য চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদন প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ;

(২) “আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ” অর্থ সরকারী ক্রয়কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ বা উহার অধীন প্রদত্ত আর্থিক ক্ষমতা পুনঃঅর্পণ আদেশ;

(৩) “আবেদনকারী” অর্থ ধারা ৩২(ক) এর অধীন সীমিত দরপত্র পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত হইবার জন্য, বা ষষ্ঠ অধ্যায়ের অংশ-২ এর অধীন প্রাক্‌-যোগ্যতা নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাক্‌-যোগ্যতা অর্জনের জন্য, বা ধারা ৫৪ এর অধীন আগ্রহ ব্যক্তকরণের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হইবার জন্য, আগ্রহী ব্যক্তি;

(৪) “উন্মুক্তকরণ (opening) কমিটি” অর্থ ধারা ৬ এর অধীন গঠিত দরপত্র উন্মুক্তকরণ বা প্রস্তাব উন্মুক্তকরণ কমিটি;

(৫) “কোটেশন” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত আর্থিক সীমা সাপেক্ষে, সহজলভ্য প্রমিত পণ্য, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের জন্য দরপত্রদাতাগণের নিকট হইতে লিখিতভাবে প্রাপ্ত মূল্য জ্ঞাপক প্রস্তাব;

(৬) “কার্য” অর্থ রেলপথ, রাস্তা, সড়ক, মহাড়ক বা কোন ভবন, অবকাঠামো বা কাঠামো বা স্থাপনা নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ, সাইট প্রস্তুতকরণ, অপসারণ, মেরামত, রক্ষাণাবেক্ষণ বা নবরূপদান সংক্রান্ত সকল কাজ, অথবা খননকার্য, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সংস্থাপন, ডেকোরেশনসহ যে কোন প্রকারের নির্মাণ কাজ এবং উহার সহিত সংশ্লিষ্ট ভৌত সেবা যদি উহার মূল্য কার্যের মূল্য অপেক্ষা অধিক না হয়;

(৭) “ক্রয়” অর্থ কোন চুক্তির অধীন পণ্য সংগ্রহ বা ভাড়া করা বা সংগ্রহ ও ভাড়ার মাধ্যমে পণ্য আহরণ এবং কার্য বা সেবা সম্পাদন;

(৮) “ক্রয়কারী (procuring entity)” অর্থ সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের জন্য প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতাসম্পন্ন কোন ক্রয়কারী;

(৯) “ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান (Head of the Procuring entity)” অর্থ কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব, সরকারী অধিদপ্তর বা পরিদপ্তরের প্রধান বা, ক্ষেত্রমত, বিভাগীয় কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার, জেলা জজ বা পদনাম নির্বিশেষে কোন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, স্বায়তত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা কর্পোরেশন অথবা কোম্পানী আইনের অধীন নিগমিত কোন সংস্থার প্রধান নির্বাহী;

(১০) “ঠিকাদার” অর্থ এই আইনের অধীন কোন কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে ক্রয়কারীর সহিত চুক্তি সম্পাদনকারী ব্যক্তি;

(১১) “দরপত্র” বা “প্রস্তাব” অর্থ দরপত্র দাখিলের আহবান বা, ক্ষেত্রমত, প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কোন দরপত্রদাতা বা কোন পরামর্শক কর্তৃক পণ্য, কার্য বা সেবা সরবরাহের জন্য ক্রয়কারীর নিকট দাখিলকৃত দরপত্র বা প্রস্তাব; এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোটেশনও দরপত্রের অন্তুর্ভূক্ত হইবে;

(১২) “দরপত্র দলিল” বা “প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিল” অর্থ দরপত্র বা প্রস্তাব প্রস্তুত করিবার ভিত্তি হিসাবে ক্রয়কারী কর্তৃক কোনো দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে সরবরাহকৃত দলিল;

(১৩) “দরপত্রদাতা” অর্থ দরপত্র দাখিলকারী ব্যক্তি;

(১৪) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত বা অনুরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক সরকারী গেজেটে বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্ধারিত;

(১৫) “নৈতিক বিধি” অর্থ ক্রয় কার্যের অংশগ্রহণের সময় কোন ব্যক্তি কর্তৃক অবশ্য পালনীয় কোন শর্ত বা বিধান;

(১৬) “পণ্য ” অর্থ কাঁচামাল, উৎপাদিত পণ্য দ্রব্য ও যন্ত্রপাতি এবং কঠিন, তরল বা বায়বীয় আকারে পণ্য দ্রব্য, বিদ্যুৎ, প্রস্তুতকৃত কম্পিউটার সফটওয়্যার (Off-the-shelf) ও অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তিজাত অথবা সমজাতীয় সফটওয়্যার এবং পণ্য সংশ্লিষ্ট সেবা, যদি উহার মূল্য পণ্যের মূল্য অপেক্ষা অধিক না হয়;

(১৭) “পরমার্শক” অর্থ বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা প্রদানের জন্য ক্রয়কারীর সহিত চুক্তিবদ্ধ ব্যক্তি;

(১৮) “পাবলিক প্রকিউরমেন্ট” অর্থে সরকারী তহবিল দ্বারা ক্রয়কে বুঝাইবে;

(১৯) “প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ” অর্থ, যথাক্রমে সংশ্লিষ্ট ক্রয়কারী, ক্রয়কারী কার্যালয়, প্রধান, মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব;

(২০) “প্রাক-যোগ্যতা” অর্থ দরপত্রে অংশগ্রহণের পূর্বশর্ত হিসাবে যোগ্যতা প্রদর্শনের জন্য আহবান জানাইবার প্রক্রিয়া;

(২১) “ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি” অর্থ পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবার মূল্য এবং, ক্ষেত্রমত, পরিমাণ বা অনুমিতি সম্পর্কিত শর্তাধীন কোন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের জন্য একা বা একাধিক ক্রয়কারীর সহিত এক বা একাধিক সরবরাহকারীর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সম্পাদিত চুক্তি;

(২২) “বিজ্ঞাপন” অর্থ ব্যাপক প্রচারের উদ্দেশ্যে সংবাদপত্র, ওয়েবসাইট বা অন্য কোন গণমাধ্যমে ধারা ৪০ এর অধীন প্রদত্ত বিজ্ঞাপন;

(২৩) “ব্যক্তি” অর্থ ক্রয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণে আগ্রহী ব্যক্তি, ব্যক্তিবর্গ, ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, কোম্পানী, সংঘ, সমবায় সমিতিকে বুঝাইবে;

(২৪) “বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত”অর্থ বুদ্ধিবৃত্তিক অথবা পেশাগত বিষয়ে চুক্তিতে বর্ণিত মতে পরামর্শক কর্তৃক পরামর্শ প্রদান, বা কোন কম্পিউটার সফটওয়্যার ও অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তিজাত অথবা সমজাতীয় সফটওয়্যার প্রস্তুতকরণ, বা ডিজাইন প্রণয়ন, বা কাজের তত্ত্বাবধান বা ব্যবহারিক জ্ঞান হস্তান্তর বিষয়ক সেবা, এবং সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্দিষ্টকৃত কোন বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা;

(২৫) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(২৬) “ভৌত সেবা” অর্থ

(ক) পণ্য সরবরাহ বা কার্য সম্পাদনের সহিত সম্পর্কিত সুযোগ-সবিধা প্রদানকারী উপকরণাদি বা কোন প্রতিষ্ঠানের ভবন ও সরঞ্জাম পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বা জরিপ বা অনুসন্ধানমূলক খননকার্য;

(খ) নিরাপত্তা সেবা, পরিবেশন সেবা, ভূতত্ত্ব বিষয়ক সেবা বা একক সেবাদানমূলক চুক্তির অধীনে তৃতীয় পক্ষ প্রদত্ত কোন সেবা; বা

(গ) প্রাক-জাহাজীকরণ পরিদর্শন [Pre-Shipment Inspection (PSI)] এজেন্ট নিয়োগ, ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়াডিং এজেন্ট নিয়োগ, পণ্য পরিবহন কাজ, ভাড়ায় যানবাহন সংগ্রহ, মালামাল পরিবহনের জন্য পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগ বা বীমা ঝুঁকি; বা

(ঘ) আউটসোর্সিং (out-sourcing) এর মাধ্যমে ক্রয়কারী কর্তৃক সেবা গ্রহণের লক্ষ্যে এই আইনের অধীন নির্দিষ্ট্কৃত কোন সেবা বা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্য সরকার গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্দিষ্টকৃত কোন সেবা;

ব্যাখ্যা: এই দফায় উল্লিখিত আউটসোর্সিং (out-sourcing) বলিতে এর মাধ্যমে সেবা গ্রহণের বিষয়টি সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশে ̈ সময়ে সময়ে জারীকৃত বিধিমালা বা নীতিমালা বা অনুরূপ কোন নির্দেশনাকে বুঝাইবে।;

(২৭) “মান” অর্থ পণ্য, কার্য বা সেবার গুণগত মান;

(২৮) ‘‘মূল্যায়ন কমিটি” অর্থ ধারা ৭ এর অধীন গঠিত দরপত্র বা প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি;

(২৯) “রেসপনসিভ” অর্থ দরপত্র দলিল বা প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিলে ঘোষিত ও নির্দিষ্টকৃত মূল্যায়ন নির্ণায়কের ভিত্তিতে বিবেচিতব্য;

(৩০) “রিভিউ প্যানেল” অর্থ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেল;

(৩১) “লিখিতভাবে’‘ অর্থ যথাযথভা স্বাক্ষরযুক্ত হাতে লিখিত বা যন্ত্র দ্বারা মুদ্রিত কোন যোগাযোগ এবং যথাযথভাবে প্রমাণীকৃত ফ্যাক্স বা ইলেকট্রনিক বার্তাও উহার অন্তর্ভূক্ত হইবে;

(৩২) “সরকারী ক্রয়” অর্থ এই আইনের অধীন সরকারী তহবিল ব্যবহারের মাধ্যমে কোন ক্রয়কারী কর্তৃক ক্রয়;

(৩৩) “সরকারি তহবিল ” অর্থ সরকারি বাজেট হইতে ক্রয়কারীর অনুকূলে বরাদ্দকৃত অর্থ, অথবা কোন উন্নয়ন সহযোগী বা বিদেশী রাষ্ট্র বা সংস্থা। কর্তৃক সরকারের মাধ্যমে ক্রয়কারীর অনুকূলে ন্যস্ত অনুদান ও ঋণ এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকারি, আধা-সরকারি বা কোন আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্কার তহবিল;

(৩৪) “সরবরাহকারী” অর্থ এই আইনের অধীন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা সরবরাহের উদ্দেশ্যে ক্রয়কারীর সহিত চুক্তি-সম্পাদনকারী ব্যক্তি;

(৩৫) “সংক্ষিপ্ত তালিকা” অর্থ ধারা ৫৪ এর অধীন আগ্রহ ব্যক্তকরণের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাপ্ত আবেদনপত্র মূল্যায়নের পর বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা প্রদানের প্রস্তাব দাখিলের আহবান জানাইবার জন্য যোগ্য বিবেচিত আবেদনকারীগণের তালিকা;

(৩৬) “সংশ্লিষ্ট সেবা” অর্থ পণ্য সরবারহ চুক্তির সহিত সম্পর্কিত সেবা;

(৩৭) “সেবা” অর্থ সংশ্লিষ্ট সেবা, ভৌত বা বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ৷

৩৷ প্রয়োগ ও প্রযোজ্যতা

(১) সমগ্র বাংলাদেশে এই আইনের প্রয়োগ হইবে ৷

(২) এই আইন নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্র প্রযোজ্য হইবে, যথাঃ-

(ক) কোন ক্রয়কারী কর্তৃক সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়;

(খ) সংশ্লিষ্ট আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন সরকারি, আধা-সরকারি বা কোন আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত সংবিধিবদ্ধ সংস্কার তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়;

(গ) কোন কোম্পানী, কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত, সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়;

(ঘ) কোন উন্নয়ন সহযোগী বা কোন বিদেশী রাষ্ট্র বা সংস্থার সহিত সরকারের সম্পাদিত কোন ঋণ, অনুদান বা অন্য কোন চুক্তির অধীন, কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ঃ

তবে শর্ত থাকে যে, সম্পাদিত কোন চুক্তির শর্তে ভিন্নতর কিছু থাকিলে উক্ত চুক্তির শর্ত প্রাধান্য পাইবে।

৪৷ আইনের প্রাধান্য –

অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের, বিধানাবলী কার্যকর হইবে ৷


৩। প্রয়োগ ও প্রযোজ্যতা

প্রথম অধ্যায়ঃ প্রাথমিক বিষয়াদি (ধারা ০১-০৪)

এখানে একটি ধারা নিয়ে আলোচনা করা হলো। তবে পাঠকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই “প্রকিউরমেন্টবিডি” তে উল্লেখিত আইনের ধারা বা বিধিমালার কোন বিষয় যাচাই ব্যতীত ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে। এখানে ব্যবহৃত যে কোন ধার বা বিধি শুধু মাত্র বিভিন্ন আলোচনা ও সংশ্লিষ্ট প্রেক্ষাপট বোধগম্য করার জন্য উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবিক প্রয়োজনে সিপিটিইউ এর ওয়েব-সাইটে সংযুক্ত আইন বা বিধিমালা থেকে তা ব্যবহার করতে হবে।

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন-

(১) এই আইন পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ নামে অভিহিত হইবে ৷

(২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে ইহা বলবৎ হইবে৷

২। সংজ্ঞা

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) “অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ” অর্থ আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ মোতাবেক পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের জন্য চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদন প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ;

(২) “আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ” অর্থ সরকারী ক্রয়কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ বা উহার অধীন প্রদত্ত আর্থিক ক্ষমতা পুনঃঅর্পণ আদেশ;

(৩) “আবেদনকারী” অর্থ ধারা ৩২(ক) এর অধীন সীমিত দরপত্র পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত হইবার জন্য, বা ষষ্ঠ অধ্যায়ের অংশ-২ এর অধীন প্রাক্‌-যোগ্যতা নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাক্‌-যোগ্যতা অর্জনের জন্য, বা ধারা ৫৪ এর অধীন আগ্রহ ব্যক্তকরণের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হইবার জন্য, আগ্রহী ব্যক্তি;

(৪) “উন্মুক্তকরণ (opening) কমিটি” অর্থ ধারা ৬ এর অধীন গঠিত দরপত্র উন্মুক্তকরণ বা প্রস্তাব উন্মুক্তকরণ কমিটি;

(৫) “কোটেশন” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত আর্থিক সীমা সাপেক্ষে, সহজলভ্য প্রমিত পণ্য, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের জন্য দরপত্রদাতাগণের নিকট হইতে লিখিতভাবে প্রাপ্ত মূল্য জ্ঞাপক প্রস্তাব;

(৬) “কার্য” অর্থ রেলপথ, রাস্তা, সড়ক, মহাড়ক বা কোন ভবন, অবকাঠামো বা কাঠামো বা স্থাপনা নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ, সাইট প্রস্তুতকরণ, অপসারণ, মেরামত, রক্ষাণাবেক্ষণ বা নবরূপদান সংক্রান্ত সকল কাজ, অথবা খননকার্য, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সংস্থাপন, ডেকোরেশনসহ যে কোন প্রকারের নির্মাণ কাজ এবং উহার সহিত সংশ্লিষ্ট ভৌত সেবা যদি উহার মূল্য কার্যের মূল্য অপেক্ষা অধিক না হয়;

(৭) “ক্রয়” অর্থ কোন চুক্তির অধীন পণ্য সংগ্রহ বা ভাড়া করা বা সংগ্রহ ও ভাড়ার মাধ্যমে পণ্য আহরণ এবং কার্য বা সেবা সম্পাদন;

(৮) “ক্রয়কারী (procuring entity)” অর্থ সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের জন্য প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতাসম্পন্ন কোন ক্রয়কারী;

(৯) “ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান (Head of the Procuring entity)” অর্থ কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব, সরকারী অধিদপ্তর বা পরিদপ্তরের প্রধান বা, ক্ষেত্রমত, বিভাগীয় কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার, জেলা জজ বা পদনাম নির্বিশেষে কোন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, স্বায়তত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা কর্পোরেশন অথবা কোম্পানী আইনের অধীন নিগমিত কোন সংস্থার প্রধান নির্বাহী;

(১০) “ঠিকাদার” অর্থ এই আইনের অধীন কোন কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে ক্রয়কারীর সহিত চুক্তি সম্পাদনকারী ব্যক্তি;

(১১) “দরপত্র” বা “প্রস্তাব” অর্থ দরপত্র দাখিলের আহবান বা, ক্ষেত্রমত, প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কোন দরপত্রদাতা বা কোন পরামর্শক কর্তৃক পণ্য, কার্য বা সেবা সরবরাহের জন্য ক্রয়কারীর নিকট দাখিলকৃত দরপত্র বা প্রস্তাব; এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোটেশনও দরপত্রের অন্তুর্ভূক্ত হইবে;

(১২) “দরপত্র দলিল” বা “প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিল” অর্থ দরপত্র বা প্রস্তাব প্রস্তুত করিবার ভিত্তি হিসাবে ক্রয়কারী কর্তৃক কোনো দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে সরবরাহকৃত দলিল;

(১৩) “দরপত্রদাতা” অর্থ দরপত্র দাখিলকারী ব্যক্তি;

(১৪) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত বা অনুরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক সরকারী গেজেটে বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্ধারিত;

(১৫) “নৈতিক বিধি” অর্থ ক্রয় কার্যের অংশগ্রহণের সময় কোন ব্যক্তি কর্তৃক অবশ্য পালনীয় কোন শর্ত বা বিধান;

(১৬) “পণ্য ” অর্থ কাঁচামাল, উৎপাদিত পণ্য দ্রব্য ও যন্ত্রপাতি এবং কঠিন, তরল বা বায়বীয় আকারে পণ্য দ্রব্য, বিদ্যুৎ, প্রস্তুতকৃত কম্পিউটার সফটওয়্যার (Off-the-shelf) ও অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তিজাত অথবা সমজাতীয় সফটওয়্যার এবং পণ্য সংশ্লিষ্ট সেবা, যদি উহার মূল্য পণ্যের মূল্য অপেক্ষা অধিক না হয়;

(১৭) “পরমার্শক” অর্থ বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা প্রদানের জন্য ক্রয়কারীর সহিত চুক্তিবদ্ধ ব্যক্তি;

(১৮) “পাবলিক প্রকিউরমেন্ট” অর্থে সরকারী তহবিল দ্বারা ক্রয়কে বুঝাইবে;

(১৯) “প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ” অর্থ, যথাক্রমে সংশ্লিষ্ট ক্রয়কারী, ক্রয়কারী কার্যালয়, প্রধান, মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব;

(২০) “প্রাক-যোগ্যতা” অর্থ দরপত্রে অংশগ্রহণের পূর্বশর্ত হিসাবে যোগ্যতা প্রদর্শনের জন্য আহবান জানাইবার প্রক্রিয়া;

(২১) “ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি” অর্থ পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবার মূল্য এবং, ক্ষেত্রমত, পরিমাণ বা অনুমিতি সম্পর্কিত শর্তাধীন কোন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের জন্য একা বা একাধিক ক্রয়কারীর সহিত এক বা একাধিক সরবরাহকারীর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সম্পাদিত চুক্তি;

(২২) “বিজ্ঞাপন” অর্থ ব্যাপক প্রচারের উদ্দেশ্যে সংবাদপত্র, ওয়েবসাইট বা অন্য কোন গণমাধ্যমে ধারা ৪০ এর অধীন প্রদত্ত বিজ্ঞাপন;

(২৩) “ব্যক্তি” অর্থ ক্রয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণে আগ্রহী ব্যক্তি, ব্যক্তিবর্গ, ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, কোম্পানী, সংঘ, সমবায় সমিতিকে বুঝাইবে;

(২৪) “বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত”অর্থ বুদ্ধিবৃত্তিক অথবা পেশাগত বিষয়ে চুক্তিতে বর্ণিত মতে পরামর্শক কর্তৃক পরামর্শ প্রদান, বা কোন কম্পিউটার সফটওয়্যার ও অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তিজাত অথবা সমজাতীয় সফটওয়্যার প্রস্তুতকরণ, বা ডিজাইন প্রণয়ন, বা কাজের তত্ত্বাবধান বা ব্যবহারিক জ্ঞান হস্তান্তর বিষয়ক সেবা, এবং সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্দিষ্টকৃত কোন বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা;

(২৫) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(২৬) “ভৌত সেবা” অর্থ

(ক) পণ্য সরবরাহ বা কার্য সম্পাদনের সহিত সম্পর্কিত সুযোগ-সবিধা প্রদানকারী উপকরণাদি বা কোন প্রতিষ্ঠানের ভবন ও সরঞ্জাম পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বা জরিপ বা অনুসন্ধানমূলক খননকার্য;

(খ) নিরাপত্তা সেবা, পরিবেশন সেবা, ভূতত্ত্ব বিষয়ক সেবা বা একক সেবাদানমূলক চুক্তির অধীনে তৃতীয় পক্ষ প্রদত্ত কোন সেবা; বা

(গ) প্রাক-জাহাজীকরণ পরিদর্শন [Pre-Shipment Inspection (PSI)] এজেন্ট নিয়োগ, ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়াডিং এজেন্ট নিয়োগ, পণ্য পরিবহন কাজ, ভাড়ায় যানবাহন সংগ্রহ, মালামাল পরিবহনের জন্য পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগ বা বীমা ঝুঁকি; বা

(ঘ) আউটসোর্সিং (out-sourcing) এর মাধ্যমে ক্রয়কারী কর্তৃক সেবা গ্রহণের লক্ষ্যে এই আইনের অধীন নির্দিষ্ট্কৃত কোন সেবা বা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্য সরকার গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্দিষ্টকৃত কোন সেবা;

ব্যাখ্যা: এই দফায় উল্লিখিত আউটসোর্সিং (out-sourcing) বলিতে এর মাধ্যমে সেবা গ্রহণের বিষয়টি সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশে ̈ সময়ে সময়ে জারীকৃত বিধিমালা বা নীতিমালা বা অনুরূপ কোন নির্দেশনাকে বুঝাইবে।;

(২৭) “মান” অর্থ পণ্য, কার্য বা সেবার গুণগত মান;

(২৮) ‘‘মূল্যায়ন কমিটি” অর্থ ধারা ৭ এর অধীন গঠিত দরপত্র বা প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি;

(২৯) “রেসপনসিভ” অর্থ দরপত্র দলিল বা প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিলে ঘোষিত ও নির্দিষ্টকৃত মূল্যায়ন নির্ণায়কের ভিত্তিতে বিবেচিতব্য;

(৩০) “রিভিউ প্যানেল” অর্থ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেল;

(৩১) “লিখিতভাবে’‘ অর্থ যথাযথভা স্বাক্ষরযুক্ত হাতে লিখিত বা যন্ত্র দ্বারা মুদ্রিত কোন যোগাযোগ এবং যথাযথভাবে প্রমাণীকৃত ফ্যাক্স বা ইলেকট্রনিক বার্তাও উহার অন্তর্ভূক্ত হইবে;

(৩২) “সরকারী ক্রয়” অর্থ এই আইনের অধীন সরকারী তহবিল ব্যবহারের মাধ্যমে কোন ক্রয়কারী কর্তৃক ক্রয়;

(৩৩) “সরকারি তহবিল ” অর্থ সরকারি বাজেট হইতে ক্রয়কারীর অনুকূলে বরাদ্দকৃত অর্থ, অথবা কোন উন্নয়ন সহযোগী বা বিদেশী রাষ্ট্র বা সংস্থা। কর্তৃক সরকারের মাধ্যমে ক্রয়কারীর অনুকূলে ন্যস্ত অনুদান ও ঋণ এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকারি, আধা-সরকারি বা কোন আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্কার তহবিল;

(৩৪) “সরবরাহকারী” অর্থ এই আইনের অধীন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা সরবরাহের উদ্দেশ্যে ক্রয়কারীর সহিত চুক্তি-সম্পাদনকারী ব্যক্তি;

(৩৫) “সংক্ষিপ্ত তালিকা” অর্থ ধারা ৫৪ এর অধীন আগ্রহ ব্যক্তকরণের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাপ্ত আবেদনপত্র মূল্যায়নের পর বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা প্রদানের প্রস্তাব দাখিলের আহবান জানাইবার জন্য যোগ্য বিবেচিত আবেদনকারীগণের তালিকা;

(৩৬) “সংশ্লিষ্ট সেবা” অর্থ পণ্য সরবারহ চুক্তির সহিত সম্পর্কিত সেবা;

(৩৭) “সেবা” অর্থ সংশ্লিষ্ট সেবা, ভৌত বা বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ৷

৩৷ প্রয়োগ ও প্রযোজ্যতা

(১) সমগ্র বাংলাদেশে এই আইনের প্রয়োগ হইবে ৷

(২) এই আইন নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্র প্রযোজ্য হইবে, যথাঃ-

(ক) কোন ক্রয়কারী কর্তৃক সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়;

(খ) সংশ্লিষ্ট আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন সরকারি, আধা-সরকারি বা কোন আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত সংবিধিবদ্ধ সংস্কার তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়;

(গ) কোন কোম্পানী, কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত, সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়;

(ঘ) কোন উন্নয়ন সহযোগী বা কোন বিদেশী রাষ্ট্র বা সংস্থার সহিত সরকারের সম্পাদিত কোন ঋণ, অনুদান বা অন্য কোন চুক্তির অধীন, কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ঃ

তবে শর্ত থাকে যে, সম্পাদিত কোন চুক্তির শর্তে ভিন্নতর কিছু থাকিলে উক্ত চুক্তির শর্ত প্রাধান্য পাইবে।

৪৷ আইনের প্রাধান্য –

অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের, বিধানাবলী কার্যকর হইবে ৷


৪৷ আইনের প্রাধান্য

প্রথম অধ্যায়ঃ প্রাথমিক বিষয়াদি (ধারা ০১-০৪)

এখানে একটি ধারা নিয়ে আলোচনা করা হলো। তবে পাঠকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই “প্রকিউরমেন্টবিডি” তে উল্লেখিত আইনের ধারা বা বিধিমালার কোন বিষয় যাচাই ব্যতীত ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে। এখানে ব্যবহৃত যে কোন ধার বা বিধি শুধু মাত্র বিভিন্ন আলোচনা ও সংশ্লিষ্ট প্রেক্ষাপট বোধগম্য করার জন্য উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবিক প্রয়োজনে সিপিটিইউ এর ওয়েব-সাইটে সংযুক্ত আইন বা বিধিমালা থেকে তা ব্যবহার করতে হবে।

১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন-

(১) এই আইন পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ নামে অভিহিত হইবে ৷

(২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে ইহা বলবৎ হইবে৷

২। সংজ্ঞা

বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) “অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ” অর্থ আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ মোতাবেক পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের জন্য চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদন প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ;

(২) “আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ” অর্থ সরকারী ক্রয়কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ বা উহার অধীন প্রদত্ত আর্থিক ক্ষমতা পুনঃঅর্পণ আদেশ;

(৩) “আবেদনকারী” অর্থ ধারা ৩২(ক) এর অধীন সীমিত দরপত্র পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত হইবার জন্য, বা ষষ্ঠ অধ্যায়ের অংশ-২ এর অধীন প্রাক্‌-যোগ্যতা নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাক্‌-যোগ্যতা অর্জনের জন্য, বা ধারা ৫৪ এর অধীন আগ্রহ ব্যক্তকরণের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হইবার জন্য, আগ্রহী ব্যক্তি;

(৪) “উন্মুক্তকরণ (opening) কমিটি” অর্থ ধারা ৬ এর অধীন গঠিত দরপত্র উন্মুক্তকরণ বা প্রস্তাব উন্মুক্তকরণ কমিটি;

(৫) “কোটেশন” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত আর্থিক সীমা সাপেক্ষে, সহজলভ্য প্রমিত পণ্য, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের জন্য দরপত্রদাতাগণের নিকট হইতে লিখিতভাবে প্রাপ্ত মূল্য জ্ঞাপক প্রস্তাব;

(৬) “কার্য” অর্থ রেলপথ, রাস্তা, সড়ক, মহাড়ক বা কোন ভবন, অবকাঠামো বা কাঠামো বা স্থাপনা নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ, সাইট প্রস্তুতকরণ, অপসারণ, মেরামত, রক্ষাণাবেক্ষণ বা নবরূপদান সংক্রান্ত সকল কাজ, অথবা খননকার্য, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সংস্থাপন, ডেকোরেশনসহ যে কোন প্রকারের নির্মাণ কাজ এবং উহার সহিত সংশ্লিষ্ট ভৌত সেবা যদি উহার মূল্য কার্যের মূল্য অপেক্ষা অধিক না হয়;

(৭) “ক্রয়” অর্থ কোন চুক্তির অধীন পণ্য সংগ্রহ বা ভাড়া করা বা সংগ্রহ ও ভাড়ার মাধ্যমে পণ্য আহরণ এবং কার্য বা সেবা সম্পাদন;

(৮) “ক্রয়কারী (procuring entity)” অর্থ সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের জন্য প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতাসম্পন্ন কোন ক্রয়কারী;

(৯) “ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান (Head of the Procuring entity)” অর্থ কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব, সরকারী অধিদপ্তর বা পরিদপ্তরের প্রধান বা, ক্ষেত্রমত, বিভাগীয় কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার, জেলা জজ বা পদনাম নির্বিশেষে কোন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, স্বায়তত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা কর্পোরেশন অথবা কোম্পানী আইনের অধীন নিগমিত কোন সংস্থার প্রধান নির্বাহী;

(১০) “ঠিকাদার” অর্থ এই আইনের অধীন কোন কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে ক্রয়কারীর সহিত চুক্তি সম্পাদনকারী ব্যক্তি;

(১১) “দরপত্র” বা “প্রস্তাব” অর্থ দরপত্র দাখিলের আহবান বা, ক্ষেত্রমত, প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কোন দরপত্রদাতা বা কোন পরামর্শক কর্তৃক পণ্য, কার্য বা সেবা সরবরাহের জন্য ক্রয়কারীর নিকট দাখিলকৃত দরপত্র বা প্রস্তাব; এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোটেশনও দরপত্রের অন্তুর্ভূক্ত হইবে;

(১২) “দরপত্র দলিল” বা “প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিল” অর্থ দরপত্র বা প্রস্তাব প্রস্তুত করিবার ভিত্তি হিসাবে ক্রয়কারী কর্তৃক কোনো দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে সরবরাহকৃত দলিল;

(১৩) “দরপত্রদাতা” অর্থ দরপত্র দাখিলকারী ব্যক্তি;

(১৪) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত বা অনুরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক সরকারী গেজেটে বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্ধারিত;

(১৫) “নৈতিক বিধি” অর্থ ক্রয় কার্যের অংশগ্রহণের সময় কোন ব্যক্তি কর্তৃক অবশ্য পালনীয় কোন শর্ত বা বিধান;

(১৬) “পণ্য ” অর্থ কাঁচামাল, উৎপাদিত পণ্য দ্রব্য ও যন্ত্রপাতি এবং কঠিন, তরল বা বায়বীয় আকারে পণ্য দ্রব্য, বিদ্যুৎ, প্রস্তুতকৃত কম্পিউটার সফটওয়্যার (Off-the-shelf) ও অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তিজাত অথবা সমজাতীয় সফটওয়্যার এবং পণ্য সংশ্লিষ্ট সেবা, যদি উহার মূল্য পণ্যের মূল্য অপেক্ষা অধিক না হয়;

(১৭) “পরমার্শক” অর্থ বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা প্রদানের জন্য ক্রয়কারীর সহিত চুক্তিবদ্ধ ব্যক্তি;

(১৮) “পাবলিক প্রকিউরমেন্ট” অর্থে সরকারী তহবিল দ্বারা ক্রয়কে বুঝাইবে;

(১৯) “প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ” অর্থ, যথাক্রমে সংশ্লিষ্ট ক্রয়কারী, ক্রয়কারী কার্যালয়, প্রধান, মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব;

(২০) “প্রাক-যোগ্যতা” অর্থ দরপত্রে অংশগ্রহণের পূর্বশর্ত হিসাবে যোগ্যতা প্রদর্শনের জন্য আহবান জানাইবার প্রক্রিয়া;

(২১) “ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি” অর্থ পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবার মূল্য এবং, ক্ষেত্রমত, পরিমাণ বা অনুমিতি সম্পর্কিত শর্তাধীন কোন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের জন্য একা বা একাধিক ক্রয়কারীর সহিত এক বা একাধিক সরবরাহকারীর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সম্পাদিত চুক্তি;

(২২) “বিজ্ঞাপন” অর্থ ব্যাপক প্রচারের উদ্দেশ্যে সংবাদপত্র, ওয়েবসাইট বা অন্য কোন গণমাধ্যমে ধারা ৪০ এর অধীন প্রদত্ত বিজ্ঞাপন;

(২৩) “ব্যক্তি” অর্থ ক্রয় কর্মকান্ডে অংশগ্রহণে আগ্রহী ব্যক্তি, ব্যক্তিবর্গ, ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠান, অংশীদারী কারবার, কোম্পানী, সংঘ, সমবায় সমিতিকে বুঝাইবে;

(২৪) “বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত”অর্থ বুদ্ধিবৃত্তিক অথবা পেশাগত বিষয়ে চুক্তিতে বর্ণিত মতে পরামর্শক কর্তৃক পরামর্শ প্রদান, বা কোন কম্পিউটার সফটওয়্যার ও অন্যান্য তথ্য প্রযুক্তিজাত অথবা সমজাতীয় সফটওয়্যার প্রস্তুতকরণ, বা ডিজাইন প্রণয়ন, বা কাজের তত্ত্বাবধান বা ব্যবহারিক জ্ঞান হস্তান্তর বিষয়ক সেবা, এবং সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্দিষ্টকৃত কোন বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা;

(২৫) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;

(২৬) “ভৌত সেবা” অর্থ

(ক) পণ্য সরবরাহ বা কার্য সম্পাদনের সহিত সম্পর্কিত সুযোগ-সবিধা প্রদানকারী উপকরণাদি বা কোন প্রতিষ্ঠানের ভবন ও সরঞ্জাম পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বা জরিপ বা অনুসন্ধানমূলক খননকার্য;

(খ) নিরাপত্তা সেবা, পরিবেশন সেবা, ভূতত্ত্ব বিষয়ক সেবা বা একক সেবাদানমূলক চুক্তির অধীনে তৃতীয় পক্ষ প্রদত্ত কোন সেবা; বা

(গ) প্রাক-জাহাজীকরণ পরিদর্শন [Pre-Shipment Inspection (PSI)] এজেন্ট নিয়োগ, ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়াডিং এজেন্ট নিয়োগ, পণ্য পরিবহন কাজ, ভাড়ায় যানবাহন সংগ্রহ, মালামাল পরিবহনের জন্য পরিবহন ঠিকাদার নিয়োগ বা বীমা ঝুঁকি; বা

(ঘ) আউটসোর্সিং (out-sourcing) এর মাধ্যমে ক্রয়কারী কর্তৃক সেবা গ্রহণের লক্ষ্যে এই আইনের অধীন নির্দিষ্ট্কৃত কোন সেবা বা সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্য সরকার গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্দিষ্টকৃত কোন সেবা;

ব্যাখ্যা: এই দফায় উল্লিখিত আউটসোর্সিং (out-sourcing) বলিতে এর মাধ্যমে সেবা গ্রহণের বিষয়টি সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশে ̈ সময়ে সময়ে জারীকৃত বিধিমালা বা নীতিমালা বা অনুরূপ কোন নির্দেশনাকে বুঝাইবে।;

(২৭) “মান” অর্থ পণ্য, কার্য বা সেবার গুণগত মান;

(২৮) ‘‘মূল্যায়ন কমিটি” অর্থ ধারা ৭ এর অধীন গঠিত দরপত্র বা প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি;

(২৯) “রেসপনসিভ” অর্থ দরপত্র দলিল বা প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিলে ঘোষিত ও নির্দিষ্টকৃত মূল্যায়ন নির্ণায়কের ভিত্তিতে বিবেচিতব্য;

(৩০) “রিভিউ প্যানেল” অর্থ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেল;

(৩১) “লিখিতভাবে’‘ অর্থ যথাযথভা স্বাক্ষরযুক্ত হাতে লিখিত বা যন্ত্র দ্বারা মুদ্রিত কোন যোগাযোগ এবং যথাযথভাবে প্রমাণীকৃত ফ্যাক্স বা ইলেকট্রনিক বার্তাও উহার অন্তর্ভূক্ত হইবে;

(৩২) “সরকারী ক্রয়” অর্থ এই আইনের অধীন সরকারী তহবিল ব্যবহারের মাধ্যমে কোন ক্রয়কারী কর্তৃক ক্রয়;

(৩৩) “সরকারি তহবিল ” অর্থ সরকারি বাজেট হইতে ক্রয়কারীর অনুকূলে বরাদ্দকৃত অর্থ, অথবা কোন উন্নয়ন সহযোগী বা বিদেশী রাষ্ট্র বা সংস্থা। কর্তৃক সরকারের মাধ্যমে ক্রয়কারীর অনুকূলে ন্যস্ত অনুদান ও ঋণ এবং এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকারি, আধা-সরকারি বা কোন আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্কার তহবিল;

(৩৪) “সরবরাহকারী” অর্থ এই আইনের অধীন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা সরবরাহের উদ্দেশ্যে ক্রয়কারীর সহিত চুক্তি-সম্পাদনকারী ব্যক্তি;

(৩৫) “সংক্ষিপ্ত তালিকা” অর্থ ধারা ৫৪ এর অধীন আগ্রহ ব্যক্তকরণের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাপ্ত আবেদনপত্র মূল্যায়নের পর বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা প্রদানের প্রস্তাব দাখিলের আহবান জানাইবার জন্য যোগ্য বিবেচিত আবেদনকারীগণের তালিকা;

(৩৬) “সংশ্লিষ্ট সেবা” অর্থ পণ্য সরবারহ চুক্তির সহিত সম্পর্কিত সেবা;

(৩৭) “সেবা” অর্থ সংশ্লিষ্ট সেবা, ভৌত বা বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ৷

৩৷ প্রয়োগ ও প্রযোজ্যতা

(১) সমগ্র বাংলাদেশে এই আইনের প্রয়োগ হইবে ৷

(২) এই আইন নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্র প্রযোজ্য হইবে, যথাঃ-

(ক) কোন ক্রয়কারী কর্তৃক সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়;

(খ) সংশ্লিষ্ট আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন সরকারি, আধা-সরকারি বা কোন আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত সংবিধিবদ্ধ সংস্কার তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়;

(গ) কোন কোম্পানী, কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮নং আইন) এর অধীন নিবন্ধিত, সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়;

(ঘ) কোন উন্নয়ন সহযোগী বা কোন বিদেশী রাষ্ট্র বা সংস্থার সহিত সরকারের সম্পাদিত কোন ঋণ, অনুদান বা অন্য কোন চুক্তির অধীন, কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ঃ

তবে শর্ত থাকে যে, সম্পাদিত কোন চুক্তির শর্তে ভিন্নতর কিছু থাকিলে উক্ত চুক্তির শর্ত প্রাধান্য পাইবে।

৪৷ আইনের প্রাধান্য –

অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের, বিধানাবলী কার্যকর হইবে ৷

দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ দরপত্র বা প্রস্তাব প্রস্তুত, কমিটি, ইত্যাদি

৫৷ ক্রয় সংক্রান্ত দলিল প্রস্তুত, বিতরণ ও মূল্যায়ন

(১) প্রতিটি সরকারী ক্রয়ের ক্ষেত্রে, ক্রয়কারী এতদুদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় আবেদনপত্র, দরপত্র বা প্রস্তাব দলিল প্রস্তুত করিবে এবং সংশ্লিষ্ট আবেদনপত্র, দরপত্র বা প্রস্তাব দাখিলে ইচ্ছুক ব্যক্তিবর্গের নিকট উহা বিতরণের ব্যবস্থা করিবে৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন বিতরণকৃত দলিলের ভিত্তিতে কোন আবেদনপত্র, দরপত্র বা প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী বা দরপত্রদাতা বা পরামর্শক ক্রয়কারীর নিকট দাখিল করিবে৷

(৩) ক্রয়কারী এই আইনের অন্যান্য বিধান অনুসারে উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রাপ্ত আবেদন, দরপত্র বা প্রস্তাব মূল্যায়নের ব্যবস্থা করিবে৷

৬৷ উন্মুক্তকরণ (Opening) কমিটি

(১) ক্রয়কারী ধারা ৫(২) এর অধীন দাখিলকৃত দরপত্র বা প্রস্তাব বিবেচনার উদ্দেশ্যে, দরপত্র বা প্রস্তাব দাখিলের সময়সীমা অতিক্রান্তের পূর্বে মূল্যায়ন কমিটির একজন সদস্যসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যাক ব্যক্তি সমন্বয়ে একটি দরপত্র বা প্রস্তাব উন্মুক্তকরণ কমিটি গঠন করিবে৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত কোন উন্মুক্তকরণ কমিটি নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করিবে৷

৭৷ মূল্যায়ন কমিটি

(১) ক্রয়কারী দরপত্র বা প্রস্তাব দাখিলের জন্য নির্দিষ্টকৃত তারিখের পূর্বে ক্রয়কারীর নিজস্ব কার্যালয় এবং তাহার কার্যালয় বহির্ভূত কোন কর্মকর্তা সমন্বয়ে দরপত্র বা প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি গঠন করিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, কোন নির্দিষ্ট ক্রয়ের জন্য দরপত্র বা প্রস্তাবসমূহ একটির অধিক মূল্যায়ন কমিটি দ্বারা মূল্যায়ন করা যাইবে না৷

(২) মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সংখ্যা, উহার দায়িত্ব ও কার্যধারা বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷

(৩) মূল্যায়ন প্রতিবেদন স্বাক্ষর করিবার সময় মূল্যায়ন কমিটির প্রত্যেক সদস্য-

(ক) এককভাবে পক্ষপাতহীনতার ঘোষণা সম্বলিত একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর করিবে; এবং

(খ) যৌথভাবে এই মর্মে প্রত্যায়ন করিবে যে, এই আইন এবং তদধীন প্রণীত বিধি অনুসারে দরপত্র বা প্রস্তাব মূল্যায়ন করা হইয়াছে৷

(৪) মূল্যায়ন কমিটির কোন সদস্যের মূল্যায়ন কার্যধারা বা চুক্তি সম্পাদনের সুপারিশ সম্পর্কে ভিন্নরূপ কোন মন্তব্য থাকিলে উহা মূল্যায়ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করিতে হইবে এবং অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ উক্ত প্রতিবেদনে উল্লিখিত ভিন্নমত পোষণ করিবার কারণসমূহ পরীক্ষা করিয়া যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে৷

(৫) মূল্যায়ন কমিটি উহার সুপারিশসহ মূল্যায়ন প্রতিবেদন একটি খামে সীলগালা করিয়া সরাসরি অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করিবে৷

(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীন অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ যদি সরকারের মন্ত্রী বা সরকার কর্তৃক গঠিত সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি হয়, তাহা হইলে মূল্যায়ন প্রতিবেদন উক্ত মন্ত্রী বা কমিটির নিকট নির্ধারিত পদ্ধতিতে পেশ করিতে হইবে৷

৮৷ দরপত্র বা প্রস্তাব অনুমেদন, ইত্যাদি

আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশে বর্ণিত অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ দরপত্র বা প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ অনুমোদন বা কারণ ব্যাখ্যাপূর্বক বাতিল করিয়া পুনঃমূল্যায়ন বা পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের নির্দেশ দিতে পারিবে৷

তৃতীয় অধ্যায়ঃ ক্রয় সংক্রান্ত নীতিসমূহ

অংশ-১: সাধারণ নির্দেশনা

তৃতীয় অধ্যায়ঃ ক্রয় সংক্রান্ত নীতিসমূহ (ধারা ০৯-৩০)

এখানে কয়েকটি ধারা নিয়ে আলোচনা করা হলো। তবে পাঠকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই “প্রকিউরমেন্টবিডি” তে উল্লেখিত আইনের ধারা বা বিধিমালার কোন বিষয় যাচাই ব্যতীত ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে। এখানে ব্যবহৃত যে কোন ধার বা বিধি শুধু মাত্র বিভিন্ন আলোচনা ও সংশ্লিষ্ট প্রেক্ষাপট বোধগম্য করার জন্য উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবিক প্রয়োজনে সিপিটিইউ এর ওয়েব-সাইটে সংযুক্ত আইন বা বিধিমালা থেকে তা ব্যবহার করতে হবে।

অংশ-১: সাধারণ নির্দেশনা

৯৷ ক্রয় সংক্রান্ত আইন, ইত্যাদি সাধারণের প্রাপ্যতা

সরকার, এই আইন, তদধীনে প্রণীত বিধি, আদেশ, নির্দেশ, নীতিমালা ও সর্বসাধারণের প্রয়োজন হইতে পারে এইরূপ ক্রয় সংক্রান্ত কাগজপত্র বা দলিলপত্র যাহাতে সর্বসাধারণের সহজ প্রাপ্তিসাধ্য হয় উহা নিশ্চিত করিবে এবং উহাদের যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করিবে ৷

১০৷ যোগাযোগের ধরণ

(১) এই আইনের অধীন ক্রয় কার্যে ক্রয়কারী কর্তৃক বা ক্রয়কারীর সহিত যাবতীয় যোগাযোগ লিখিত হইতে হইবে ৷

(২) এই আইনের অধীন লিখিতভাবে বা ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে অথবা উভয় পদ্ধতিতে যোগাযোগ করা যাইবে ৷

১১৷ ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন, ইত্যাদি

(১) সরকারের উন্নয়ন বাজেটের অর্থ দ্বারা বাস্তবায়িতব্য কোন প্রকল্পের অধীন ক্রয়কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত উক্ত প্রকল্প দলিলে বিধৃত সার্বিক ক্রয় পরিকল্পনা ক্রয়কারী বৎসরভিত্তিক হালনাগাদ করিয়া বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে ৷

(২) সরকারের রাজস্ব বাজেটের অধীন কোন ক্রয়কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে, ক্রয়কারী একটি বাত্সরিক ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন প্রণীত প্রত্যেক বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা, ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে ৷

(৪) ক্রয়কারী এই ধারার অধীন প্রণীত ক্রয় পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য প্রচারের ব্যবস্থা করিবে এবং উক্তরূপ প্রচারের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত নির্দেশনা অনুসরণ করিবে ৷

(৫) ক্রয়কারী সাধারণভাবে কোন একক ক্রয় কাজকে একাধিক প্যাকেজে বিভক্ত করিতে পারিবে না, তবে ক্রয়কারী ক্রয়কার্য সম্পাদনের সুবিধার্থে একটি একক কাজ একাধিক প্যাকেজে এবং একটি প্যাকেজকে একাধিক লটে বিভক্ত করিতে পারিবে ৷

(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীন কোন একক কাজ একাধিক প্যাকেজে বিভক্ত করা হইলে, উক্ত প্যাকেজসমূহের মোট অর্থের পরিমাণ অনুমোদনের এখতিয়ার যে কর্তৃপক্ষের থাকিবে, উক্ত যে কোন প্যাকেজের চুক্তি সম্পাদনের জন্য সকল প্যাকেজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সেই কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন করিতে হইবে ৷

১২৷ ক্রয় সংক্রান্ত দলিল

(১) ক্রয়কারী ক্রয়কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে প্রাক-যোগ্যতা, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব আহবানের জন্য দলিল প্রস্তুত করিবার সময়, ক্রয়ের উদ্দেশ্যের আবশ্যকীয় উপাদানগুলো বিবেচনায় রাখিয়া, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, নির্দিষ্টকৃত আদর্শ দলিল ব্যবহার করিবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আদর্শ দলিল, উহাতে নির্দেশিত ক্ষেত্রে, প্রয়োজনীয় অভিযোজনপূর্বক ব্যবহার করিতে হইবে ৷

১৩৷ ক্রয়কার্যে প্রতিযোগিতা

(১) ক্রয়কারী নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠভাবে ক্রয় প্রক্রিয়া প্রতিযোগিতামূলক করিবার নিশ্চয়তা বিধানের উদ্দেশ্যে, আবেদনপত্র, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব প্রস্তুত করিবার জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সকল আবেদনকারী, দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে প্রদান করিবে ৷

(২) যোগ্যতা নির্ধারণ ও মূল্যায়নের নির্ণায়কসমূহ সংশ্লিষ্ট দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখপূর্বক আবেদনকারী, দরপত্রদাতা বা পরামর্শক কর্তৃক সংশ্লিষ্ট আহবানে যথাযথভাবে সাড়া দেওয়ার জন্য ক্রয় পদ্ধতির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ এইরূপ ন্যুনতম সময় প্রদান নিশ্চত করিতে হইবে ৷

১৪৷ দরপত্রের মেয়াদ নির্ধারণ, নিরাপত্তা জামানত প্রদান, ইত্যাদি

দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে-

(ক) দরপত্র বা প্রস্তাবের বৈধতার মেয়াদ এইরূপে নির্ধারণ করিতে হইবে, যেন দরপত্র বা প্রস্তাবের মূল্যায়ন ও উহার তুলনামূলক যাচাই এবং প্রয়োজনীয় সকল পর্যায়ের অনুমোদন গ্রহণের জন্য উহা পর্যাপ্ত হয়, এবং উক্ত মেয়াদের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের জন্য নোটিশ প্রদান করা সম্ভব হয়ঃ

(খ) পণ্য ও কার্য ক্রয়ে নির্দিষ্টকৃত দরপত্র জামানত এবং ক্রয়কার্য সম্পাদন জামানতের নির্দিষ্ট হার ও নির্ধারিত পদ্ধতি উল্লেখ থাকিবে ৷ তবে সীমিত দরপত্র পদ্ধতি এবং কোটেশন প্রদানের অনুরোধ জ্ঞাপন পদ্ধতির ক্ষেত্রে দরপত্রদাতার জন্য দরপত্র জামানত প্রদান বাধ্যতামূলক হইবে না;

(গ) পণ্য ও কার্য সংক্রান্ত চুক্তির জন্য, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, অনুমিত রক্ষণযোগ্য অর্থ কি পদ্ধতিতে কর্তন এবং পরবর্তী সময়ে পুনর্ভরণ করা হইবে উহা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিতে হইবে;

(ঘ) সেবা ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তির ক্ষেত্রে, কোন ব্যক্তিকে প্রস্তাব জামানত দাখিল করিতে হইবে না, তবে পরামর্শককে কি ধরনের ক্ষতিবহন প্রতিশ্রুতি বীমাপত্র অথবা ক্ষতিবহন প্রতিশ্রুতি এবং বীমাপত্র দাখিল করিতে হইবে উহা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিতে হইবে :

তবে শর্ত থাকে যে, পরামর্শকের সহিত চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কার্য সম্পাদন জামানত আরোপ করা যাইতে পারে।

১৫৷ বিনির্দেশ (specification) এবং কর্মপরিধি (terms of reference) প্রস্তুত

(১) ক্রয়কারী, দরপত্রদাতাগণের মধ্যে পক্ষপাতহীন ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যে, ক্রয়ের জন্য নির্দিষ্টকৃত পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা, অথবা কার্য ও ভৌত সেবার কারিগরী বিনির্দেশ ও বর্ণনা প্রস্তুত করিবার সময় উহার প্রত্যাশিত কার্যসম্পাদনের যোগ্যতার স্তর, বৈশিষ্ট এবং মান সম্পর্কে সঠিক ও পরিপূর্ণ বর্ণনা প্রদান করিবে এবং সেইমত পণ্য, কার্য, সেবা ক্রয় নিশ্চিত করিবে; তবে উহা যেন সীমাবদ্ধকর না হয় তাহার নিশ্চয়তা বিধান করিতে হইবে ৷

(২) ক্রয়কারী, পরামর্শকদের মধ্যে পক্ষপাতহীন ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যে, পরামর্শকদের কার্যপরিধি নির্ধারণের সময় পেশাগত ও বুদ্ধিবৃত্তিক সেবা ক্রয়ের সঠিক ও পূর্ণাংগ বর্ণনা প্রদান করিবে; তবে প্রতিযোগিতা সীমিত করিতে পারে এইরূপ কোন শর্ত আরোপ করা যাইবে না ৷

১৬৷ সামাজিক বিচার্য বিষয়

কোন ক্রয়কারী ক্রয় সংক্রান্ত দলিলে শ্রমিকদের মজুরীর মান ও তত্সশ্লিষ্ট সামাজিক সুযোগ-সুবিধা, পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং শিশু শ্রম নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত কোন বিধানের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ কোন শর্ত অন্তর্ভূক্ত করিতে পারিবে না ৷

১৭৷ দলিলপত্রাদি অনুবাদ ও প্রকাশনা ৷

সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত, কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন জারীকৃত বিধি, আদেশ, নির্দেশ বা ক্রয় সংক্রান্ত কোন দলিল বা উহার অনুবাদ প্রকাশ করিতে পারিবে না ৷

১৮৷ ক্রয় প্রক্রিয়ার গোপনীয়তা রক্ষা

(১) ক্রয়কারী, মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক কোন ব্যক্তির নিকট যাচিত স্পষ্টীকরণের ক্ষেত্র ব্যতীত, দরপত্র বা প্রস্তাব উন্মুক্ত বা খোলা হইতে চুক্তি সম্পাদন পর্যন্ত প্রক্রিয়ার গোপনীয়তা রক্ষা করিবে ৷

(২) কোন ব্যক্তি ক্রয় প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করিবার কোনরূপ চেষ্টা করিলে উক্ত ব্যক্তির প্রাক্‌-যোগ্যতা, দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল হইবে ৷

১৯৷ দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিলকরণ

(১) ক্রয়কারী, সংশ্লিষ্ট দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে উহা উল্লেখ থাকা সাপেক্ষে, চুক্তি সম্পাদন নোটিশ জারীর পূর্বে, যে কোন সময়, নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণক্রমে, সকল দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল করিতে পারিবে ৷

(১ক) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন সীমিত দরপত্র পদ্ধতির আওতায় অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলন (Official estimate) উল্লেখ করিতে হইবে । তবে কোন দরদাতা কর্তৃক দরপত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলনের ৫% (পাঁচ শতাংশ) এর অধিক কম বা অধিক বেশী দর উদ্ধৃত করা হইলে উক্ত দরপত্র বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।

(২) দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল পরবর্তী গৃহীতব্য ব্যবস্থা বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল করা হইলে কোন ব্যক্তির নিকট ক্রয়কারীর কোন দায় বর্তাইবে না ৷

২০৷ ক্রয় অনুমোদন প্রক্রিয়া ও চুক্তি সম্পাদন নোটিশ

ক্রয় অনুমোদন প্রক্রিয়া ও চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারীর ক্ষেত্রে ক্রয়কারী-

(ক) দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন উন্মুক্ত করিবার সময় হইতে চুক্তি সম্পাদন নোটিশ জারী পর্যন্ত নির্ধারিত প্রক্রিয়া ও সময়সীমা অনুসরণ করিবে;

(খ) দরপত্র বা প্রস্তাব বা কোটেশন অনুমোদনের উদ্দেশ্যে, সরকারের আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশে বর্ণিত নির্দেশনা অনুসরণ করিবে;

(গ) দরপত্র বা প্রস্তাবের বৈধতার মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে, কৃতকার্য দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে চুক্তি সম্পাদনে নোটিশ জারী করিবে ৷

২১৷ চুক্তি সম্পাদন নোটিশ প্রকাশ এবং অবহিতকরণ

(১) ক্রয়কারী নির্ধারিত ফরমে নোটিশ বোর্ডে অথবা উহার নিজস্ব ওয়েবসাইটে, যদি থাকে, চুক্তি সম্পাদন নোটিশ জারী করিবে এবং নির্ধারিত মূল্যসীমার উর্ধ্বের চুক্তির ক্ষেত্রে চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে প্রকাশের জন্য প্রেরণ করিবে ৷

(২) ক্রয় বিষয়ে কৃতকার্য দরপত্রদাতা বা পরামর্শকের সহিত চুক্তি স্বাক্ষরের পর, যে কোন দরপত্রদাতা বা পরামর্শকের স্বীয় দরপত্র বা প্রস্তাব সম্পর্কে ক্রয়কারীর নিকট হইতে জানিবার অধিকার থাকিবে এবং উক্তরূপে যদি কোন দরপত্রদাতা বা পরামর্শক তাহার দাখিলকৃত দরপত্র বা প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ার কারণ সম্পর্কে ক্রয়কারীর নিকট জানিতে চাহেন, তাহা হইলে ক্রয়কারী উক্ত দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে তাহার আপেক্ষিক অবস্থান এবং দরপত্র বা প্রস্তাবের ঘাটতিসমূহ অবহিত করিবে ৷

২২৷ চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা

ক্রয়কারী কার্যকরভাবে চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার জন্য, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত নির্দেশনাবলী অনুসরণ করিবে ৷

২৩৷ ক্রয় সংক্রান্ত রেকর্ড সংরক্ষণ

(১) ক্রয়কারী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ক্রয়কার্য সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ড যথাযথভাবে সংরক্ষণ করিবে ৷

২৪৷ ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ

(১) ক্রয়কারী প্রত্যেক অর্থ বত্সর সমাপ্তির নয় মাসের মধ্যে পূর্ববর্তী বত্সরে সম্পাদিত মোট ক্রয় কার্যের নমুনাভিত্তিক নিরপেক্ষ ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণের ব্যবস্থা করিবে ৷

(২) সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্তৃপক্ষ ক্রয়কারী কর্তৃক সম্পাদিত ক্রয়কার্যের ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ করিতে পারিবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন পুনরীক্ষণের ক্ষেত্রে দৈবচয়ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হইবে এবং উক্ত পদ্ধতির রূপরেখা বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

অংশ-২: ক্রয় প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহন

২৫৷ বৈষম্যহীনতা

সরকার ভিন্নরূপ কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করিলে, ক্রয়কারী কোন ব্যক্তিকে তাহার বর্ণ, জাতীয়তা বা জাতিগত, অথবা ক্রয় সংক্রান্ত দলিলে উল্লিখিত যোগ্যতা বা এই আইনের অধীন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থার সহিত সম্পর্কযুক্ত নহে এইরূপ কোন নির্ণায়কের ভিত্তিতে ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণে নিবৃত্ত করিবে না ৷

২৬৷ ব্যক্তির যোগ্যতা

(১) ক্রয়কারী ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণের জন্য তাহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ন্যুনতম যোগ্যতার নির্ণায়কসমূহ বা অন্যান্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কী কী যোগ্যতা অর্জন করিতে হইবে, উহা ক্রয় সংক্রান্ত দলিলে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সীমিত দরপত্র পদ্ধতির আওতায় অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ঠিকাদারের তালিকা সংরক্ষণ করিতে হইবে এবং ব্যক্তির যোগ্যতা নির্ধারণে অতীতে সম্পাদিত কার্যের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হইবে না।

আরো শর্ত থাকে যে, অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ঠিকাদার কর্তৃক অতীতে সম্পাদিত কার্যক্রয়ের অভিজ্ঞতাসহ অন্যান্য অভিজ্ঞতার আলোকে প্রণীত তালিকা সংরক্ষণ করিতে হইবে। তবে ক্রয়কারী আইনের ধারা ৩১ অনুযায়ী অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকা পর্যন্ত কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে উন্মুক্ত পদ্ধতিও ব্যবহার করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত নির্ণায়কসমূহ কোন ব্যক্তি কর্তৃক অতীতে সম্পাদিত ক্রয়কার্য, উত্পাদন ক্ষমতা এবং কোন নির্দিষ্ট ক্রয়কার্য সম্পাদনের জন্য আর্থিক সামর্থ্য সম্পর্কিত হইতে হইবে ৷

২৭৷ যৌথ উদ্যোগ

(১) কোন ব্যক্তি, স্বতন্ত্রভাবে বা দেশী বা বিদেশী অন্য কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের সহিত যৌথ উদ্যোগে, কোন আবেদনপত্র, আগ্রহ ব্যক্তকরণের আবেদনপত্র, প্রস্তাব বা দরপত্র দাখিল করিতে পারিবে ৷

(২) এই ধারার অধীন প্রাক্‌-যোগ্যতা, আগ্রহ ব্যক্তকরণ বা দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে যৌথ উদ্যোগে আবেদনপত্র, আগ্রহ ব্যক্তকরণের আবেদনপত্র, প্রস্তাব বা দরপত্র দাখিল করিতে হইবে মর্মে আবশ্যিক হিসাবে কোন শর্ত আরোপ করা যাইবে না ৷

(৩) ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রে, উক্ত ব্যক্তিবর্গ যৌথভাবে এবং পৃথক পৃথকভাবে ক্রয়কারীর নিকট দায়ী থাকিবে ৷

২৮৷ স্বার্থের সংঘাত

(১) কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এবং উহার সহিত অঙ্গীভূত কোন প্রতিষ্ঠান যদি কোন ক্রয়কারী কর্তৃক ইতঃপূর্বে নিয়োজিত হইয়া কোন প্রকল্প প্রণয়ন বা বাস্তবায়নে পেশাগত ও বুদ্ধিবৃত্তিক সেবা প্রদান করিয়া থাকে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উক্ত প্রকল্প হইতে সরাসরিভাবে উদ্ভূত বা ফলশ্রুতিতে আবশ্যক হয় এমন কোন পণ্য সরবরাহ, কার্য সম্পাদন বা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অযোগ্য হইবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি যদি ঠিকাদার হিসাবে টার্ন কী অথবা ডিজাইন ও নির্মাণ চুক্তি বাস্তবায়নের সহিত সম্পৃক্ত থাকে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না ৷

অংশ-৩: অভিযোগ ও আপীল

২৯৷ অভিযোগ করিবার অধিকার

(১) কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন ক্রয়কারীর উপর অর্পিত দায়িত্ব্‌ পালনে ব্যর্থতার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা তাহার ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, তিনি উক্ত ক্রয়কারীর বিরুদ্ধে ধারা ৩০ এ বর্ণিত কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবেন ৷

(২) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন অভিযোগ দায়ের করা যাইবে না যথাঃ-

(ক) পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয় পদ্ধতি নির্বাচন;

(খ) কোন আবেদনকারীর সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্তির আবেদন প্রত্যাখ্যান;

(গ) যে সকল ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হইয়াছে-

(অ) প্রাক্‌-যোগ্যতার আবেদন, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব বাতিল করিবার সিদ্ধান্ত; বা

(আ) সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি কর্তৃক অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে চুক্তি সম্পাদনের সিদ্ধান্ত ৷

৩০৷ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দায়ের, আপীল, ইত্যাদি

(১) ধারা ২৯ এর অধীন দায়েরতব্য প্রতিটি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ক্রয়কারীর প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের নিকট দায়ের করিতে হইবে এবং উক্তরূপে কোন অভিযোগ দায়ের হইলে, উক্ত কর্তৃপক্ষ উহা বিবেচনাক্রমে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিবে ৷

(২) কোন ব্যক্তি, যদি প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হন বা উক্ত কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করিতে ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সেই ক্ষেত্রে সরকার বা তত্কর্তৃক নির্ধারিত কোন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রিভিউ প্যানেলের নিকট আপীল করিতে পারিবেন ৷

(৩) ধারা ৩০ (২) এর অধীন সরকার, দায়েরকৃত কোন আপীল পর্যালোচনা ও সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য আইন, সংশ্লিষ্ট পণ্য বা কার্য বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ে কারিগরী জ্ঞানসম্পন্ন, ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এবং ক্রয় কার্যে সুবিদিত বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে এক বা একাধিক রিভিউ প্যানেল গঠন করিতে পারিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, প্রজাতন্ত্রের চাকুরীরত কোন সদস্য রিভিউ প্যানেলে অন্তর্ভূক্ত হইবে না৷

(৪) এই ধারার অধীন আপীল দায়ের ও নিষ্পত্তির বিষয়টি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে ৷

অংশ-২: ক্রয় প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহন

অংশ-১: সাধারণ নির্দেশনা

৯৷ ক্রয় সংক্রান্ত আইন, ইত্যাদি সাধারণের প্রাপ্যতা

সরকার, এই আইন, তদধীনে প্রণীত বিধি, আদেশ, নির্দেশ, নীতিমালা ও সর্বসাধারণের প্রয়োজন হইতে পারে এইরূপ ক্রয় সংক্রান্ত কাগজপত্র বা দলিলপত্র যাহাতে সর্বসাধারণের সহজ প্রাপ্তিসাধ্য হয় উহা নিশ্চিত করিবে এবং উহাদের যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করিবে ৷

১০৷ যোগাযোগের ধরণ

(১) এই আইনের অধীন ক্রয় কার্যে ক্রয়কারী কর্তৃক বা ক্রয়কারীর সহিত যাবতীয় যোগাযোগ লিখিত হইতে হইবে ৷

(২) এই আইনের অধীন লিখিতভাবে বা ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে অথবা উভয় পদ্ধতিতে যোগাযোগ করা যাইবে ৷

১১৷ ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন, ইত্যাদি

(১) সরকারের উন্নয়ন বাজেটের অর্থ দ্বারা বাস্তবায়িতব্য কোন প্রকল্পের অধীন ক্রয়কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত উক্ত প্রকল্প দলিলে বিধৃত সার্বিক ক্রয় পরিকল্পনা ক্রয়কারী বৎসরভিত্তিক হালনাগাদ করিয়া বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে ৷

(২) সরকারের রাজস্ব বাজেটের অধীন কোন ক্রয়কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে, ক্রয়কারী একটি বাত্সরিক ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন প্রণীত প্রত্যেক বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা, ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে ৷

(৪) ক্রয়কারী এই ধারার অধীন প্রণীত ক্রয় পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য প্রচারের ব্যবস্থা করিবে এবং উক্তরূপ প্রচারের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত নির্দেশনা অনুসরণ করিবে ৷

(৫) ক্রয়কারী সাধারণভাবে কোন একক ক্রয় কাজকে একাধিক প্যাকেজে বিভক্ত করিতে পারিবে না, তবে ক্রয়কারী ক্রয়কার্য সম্পাদনের সুবিধার্থে একটি একক কাজ একাধিক প্যাকেজে এবং একটি প্যাকেজকে একাধিক লটে বিভক্ত করিতে পারিবে ৷

(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীন কোন একক কাজ একাধিক প্যাকেজে বিভক্ত করা হইলে, উক্ত প্যাকেজসমূহের মোট অর্থের পরিমাণ অনুমোদনের এখতিয়ার যে কর্তৃপক্ষের থাকিবে, উক্ত যে কোন প্যাকেজের চুক্তি সম্পাদনের জন্য সকল প্যাকেজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সেই কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন করিতে হইবে ৷

১২৷ ক্রয় সংক্রান্ত দলিল

(১) ক্রয়কারী ক্রয়কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে প্রাক-যোগ্যতা, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব আহবানের জন্য দলিল প্রস্তুত করিবার সময়, ক্রয়ের উদ্দেশ্যের আবশ্যকীয় উপাদানগুলো বিবেচনায় রাখিয়া, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, নির্দিষ্টকৃত আদর্শ দলিল ব্যবহার করিবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আদর্শ দলিল, উহাতে নির্দেশিত ক্ষেত্রে, প্রয়োজনীয় অভিযোজনপূর্বক ব্যবহার করিতে হইবে ৷

১৩৷ ক্রয়কার্যে প্রতিযোগিতা

(১) ক্রয়কারী নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠভাবে ক্রয় প্রক্রিয়া প্রতিযোগিতামূলক করিবার নিশ্চয়তা বিধানের উদ্দেশ্যে, আবেদনপত্র, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব প্রস্তুত করিবার জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সকল আবেদনকারী, দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে প্রদান করিবে ৷

(২) যোগ্যতা নির্ধারণ ও মূল্যায়নের নির্ণায়কসমূহ সংশ্লিষ্ট দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখপূর্বক আবেদনকারী, দরপত্রদাতা বা পরামর্শক কর্তৃক সংশ্লিষ্ট আহবানে যথাযথভাবে সাড়া দেওয়ার জন্য ক্রয় পদ্ধতির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ এইরূপ ন্যুনতম সময় প্রদান নিশ্চত করিতে হইবে ৷

১৪৷ দরপত্রের মেয়াদ নির্ধারণ, নিরাপত্তা জামানত প্রদান, ইত্যাদি

দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে-

(ক) দরপত্র বা প্রস্তাবের বৈধতার মেয়াদ এইরূপে নির্ধারণ করিতে হইবে, যেন দরপত্র বা প্রস্তাবের মূল্যায়ন ও উহার তুলনামূলক যাচাই এবং প্রয়োজনীয় সকল পর্যায়ের অনুমোদন গ্রহণের জন্য উহা পর্যাপ্ত হয়, এবং উক্ত মেয়াদের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের জন্য নোটিশ প্রদান করা সম্ভব হয়ঃ

(খ) পণ্য ও কার্য ক্রয়ে নির্দিষ্টকৃত দরপত্র জামানত এবং ক্রয়কার্য সম্পাদন জামানতের নির্দিষ্ট হার ও নির্ধারিত পদ্ধতি উল্লেখ থাকিবে ৷ তবে সীমিত দরপত্র পদ্ধতি এবং কোটেশন প্রদানের অনুরোধ জ্ঞাপন পদ্ধতির ক্ষেত্রে দরপত্রদাতার জন্য দরপত্র জামানত প্রদান বাধ্যতামূলক হইবে না;

(গ) পণ্য ও কার্য সংক্রান্ত চুক্তির জন্য, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, অনুমিত রক্ষণযোগ্য অর্থ কি পদ্ধতিতে কর্তন এবং পরবর্তী সময়ে পুনর্ভরণ করা হইবে উহা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিতে হইবে;

(ঘ) সেবা ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তির ক্ষেত্রে, কোন ব্যক্তিকে প্রস্তাব জামানত দাখিল করিতে হইবে না, তবে পরামর্শককে কি ধরনের ক্ষতিবহন প্রতিশ্রুতি বীমাপত্র অথবা ক্ষতিবহন প্রতিশ্রুতি এবং বীমাপত্র দাখিল করিতে হইবে উহা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিতে হইবে :

তবে শর্ত থাকে যে, পরামর্শকের সহিত চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কার্য সম্পাদন জামানত আরোপ করা যাইতে পারে।

১৫৷ বিনির্দেশ (specification) এবং কর্মপরিধি (terms of reference) প্রস্তুত

(১) ক্রয়কারী, দরপত্রদাতাগণের মধ্যে পক্ষপাতহীন ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যে, ক্রয়ের জন্য নির্দিষ্টকৃত পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা, অথবা কার্য ও ভৌত সেবার কারিগরী বিনির্দেশ ও বর্ণনা প্রস্তুত করিবার সময় উহার প্রত্যাশিত কার্যসম্পাদনের যোগ্যতার স্তর, বৈশিষ্ট এবং মান সম্পর্কে সঠিক ও পরিপূর্ণ বর্ণনা প্রদান করিবে এবং সেইমত পণ্য, কার্য, সেবা ক্রয় নিশ্চিত করিবে; তবে উহা যেন সীমাবদ্ধকর না হয় তাহার নিশ্চয়তা বিধান করিতে হইবে ৷

(২) ক্রয়কারী, পরামর্শকদের মধ্যে পক্ষপাতহীন ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যে, পরামর্শকদের কার্যপরিধি নির্ধারণের সময় পেশাগত ও বুদ্ধিবৃত্তিক সেবা ক্রয়ের সঠিক ও পূর্ণাংগ বর্ণনা প্রদান করিবে; তবে প্রতিযোগিতা সীমিত করিতে পারে এইরূপ কোন শর্ত আরোপ করা যাইবে না ৷

১৬৷ সামাজিক বিচার্য বিষয়

কোন ক্রয়কারী ক্রয় সংক্রান্ত দলিলে শ্রমিকদের মজুরীর মান ও তত্সশ্লিষ্ট সামাজিক সুযোগ-সুবিধা, পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং শিশু শ্রম নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত কোন বিধানের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ কোন শর্ত অন্তর্ভূক্ত করিতে পারিবে না ৷

১৭৷ দলিলপত্রাদি অনুবাদ ও প্রকাশনা ৷

সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত, কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন জারীকৃত বিধি, আদেশ, নির্দেশ বা ক্রয় সংক্রান্ত কোন দলিল বা উহার অনুবাদ প্রকাশ করিতে পারিবে না ৷

১৮৷ ক্রয় প্রক্রিয়ার গোপনীয়তা রক্ষা

(১) ক্রয়কারী, মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক কোন ব্যক্তির নিকট যাচিত স্পষ্টীকরণের ক্ষেত্র ব্যতীত, দরপত্র বা প্রস্তাব উন্মুক্ত বা খোলা হইতে চুক্তি সম্পাদন পর্যন্ত প্রক্রিয়ার গোপনীয়তা রক্ষা করিবে ৷

(২) কোন ব্যক্তি ক্রয় প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করিবার কোনরূপ চেষ্টা করিলে উক্ত ব্যক্তির প্রাক্‌-যোগ্যতা, দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল হইবে ৷

১৯৷ দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিলকরণ

(১) ক্রয়কারী, সংশ্লিষ্ট দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে উহা উল্লেখ থাকা সাপেক্ষে, চুক্তি সম্পাদন নোটিশ জারীর পূর্বে, যে কোন সময়, নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণক্রমে, সকল দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল করিতে পারিবে ৷

(১ক) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন সীমিত দরপত্র পদ্ধতির আওতায় অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলন (Official estimate) উল্লেখ করিতে হইবে । তবে কোন দরদাতা কর্তৃক দরপত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলনের ৫% (পাঁচ শতাংশ) এর অধিক কম বা অধিক বেশী দর উদ্ধৃত করা হইলে উক্ত দরপত্র বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।

(২) দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল পরবর্তী গৃহীতব্য ব্যবস্থা বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল করা হইলে কোন ব্যক্তির নিকট ক্রয়কারীর কোন দায় বর্তাইবে না ৷

২০৷ ক্রয় অনুমোদন প্রক্রিয়া ও চুক্তি সম্পাদন নোটিশ

ক্রয় অনুমোদন প্রক্রিয়া ও চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারীর ক্ষেত্রে ক্রয়কারী-

(ক) দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন উন্মুক্ত করিবার সময় হইতে চুক্তি সম্পাদন নোটিশ জারী পর্যন্ত নির্ধারিত প্রক্রিয়া ও সময়সীমা অনুসরণ করিবে;

(খ) দরপত্র বা প্রস্তাব বা কোটেশন অনুমোদনের উদ্দেশ্যে, সরকারের আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশে বর্ণিত নির্দেশনা অনুসরণ করিবে;

(গ) দরপত্র বা প্রস্তাবের বৈধতার মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে, কৃতকার্য দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে চুক্তি সম্পাদনে নোটিশ জারী করিবে ৷

২১৷ চুক্তি সম্পাদন নোটিশ প্রকাশ এবং অবহিতকরণ

(১) ক্রয়কারী নির্ধারিত ফরমে নোটিশ বোর্ডে অথবা উহার নিজস্ব ওয়েবসাইটে, যদি থাকে, চুক্তি সম্পাদন নোটিশ জারী করিবে এবং নির্ধারিত মূল্যসীমার উর্ধ্বের চুক্তির ক্ষেত্রে চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে প্রকাশের জন্য প্রেরণ করিবে ৷

(২) ক্রয় বিষয়ে কৃতকার্য দরপত্রদাতা বা পরামর্শকের সহিত চুক্তি স্বাক্ষরের পর, যে কোন দরপত্রদাতা বা পরামর্শকের স্বীয় দরপত্র বা প্রস্তাব সম্পর্কে ক্রয়কারীর নিকট হইতে জানিবার অধিকার থাকিবে এবং উক্তরূপে যদি কোন দরপত্রদাতা বা পরামর্শক তাহার দাখিলকৃত দরপত্র বা প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ার কারণ সম্পর্কে ক্রয়কারীর নিকট জানিতে চাহেন, তাহা হইলে ক্রয়কারী উক্ত দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে তাহার আপেক্ষিক অবস্থান এবং দরপত্র বা প্রস্তাবের ঘাটতিসমূহ অবহিত করিবে ৷

২২৷ চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা

ক্রয়কারী কার্যকরভাবে চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার জন্য, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত নির্দেশনাবলী অনুসরণ করিবে ৷

২৩৷ ক্রয় সংক্রান্ত রেকর্ড সংরক্ষণ

(১) ক্রয়কারী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ক্রয়কার্য সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ড যথাযথভাবে সংরক্ষণ করিবে ৷

২৪৷ ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ

(১) ক্রয়কারী প্রত্যেক অর্থ বত্সর সমাপ্তির নয় মাসের মধ্যে পূর্ববর্তী বত্সরে সম্পাদিত মোট ক্রয় কার্যের নমুনাভিত্তিক নিরপেক্ষ ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণের ব্যবস্থা করিবে ৷

(২) সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্তৃপক্ষ ক্রয়কারী কর্তৃক সম্পাদিত ক্রয়কার্যের ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ করিতে পারিবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন পুনরীক্ষণের ক্ষেত্রে দৈবচয়ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হইবে এবং উক্ত পদ্ধতির রূপরেখা বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

অংশ-২: ক্রয় প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহন

২৫৷ বৈষম্যহীনতা

সরকার ভিন্নরূপ কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করিলে, ক্রয়কারী কোন ব্যক্তিকে তাহার বর্ণ, জাতীয়তা বা জাতিগত, অথবা ক্রয় সংক্রান্ত দলিলে উল্লিখিত যোগ্যতা বা এই আইনের অধীন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থার সহিত সম্পর্কযুক্ত নহে এইরূপ কোন নির্ণায়কের ভিত্তিতে ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণে নিবৃত্ত করিবে না ৷

২৬৷ ব্যক্তির যোগ্যতা

(১) ক্রয়কারী ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণের জন্য তাহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ন্যুনতম যোগ্যতার নির্ণায়কসমূহ বা অন্যান্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কী কী যোগ্যতা অর্জন করিতে হইবে, উহা ক্রয় সংক্রান্ত দলিলে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সীমিত দরপত্র পদ্ধতির আওতায় অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ঠিকাদারের তালিকা সংরক্ষণ করিতে হইবে এবং ব্যক্তির যোগ্যতা নির্ধারণে অতীতে সম্পাদিত কার্যের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হইবে না।

আরো শর্ত থাকে যে, অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ঠিকাদার কর্তৃক অতীতে সম্পাদিত কার্যক্রয়ের অভিজ্ঞতাসহ অন্যান্য অভিজ্ঞতার আলোকে প্রণীত তালিকা সংরক্ষণ করিতে হইবে। তবে ক্রয়কারী আইনের ধারা ৩১ অনুযায়ী অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকা পর্যন্ত কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে উন্মুক্ত পদ্ধতিও ব্যবহার করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত নির্ণায়কসমূহ কোন ব্যক্তি কর্তৃক অতীতে সম্পাদিত ক্রয়কার্য, উত্পাদন ক্ষমতা এবং কোন নির্দিষ্ট ক্রয়কার্য সম্পাদনের জন্য আর্থিক সামর্থ্য সম্পর্কিত হইতে হইবে ৷

২৭৷ যৌথ উদ্যোগ

(১) কোন ব্যক্তি, স্বতন্ত্রভাবে বা দেশী বা বিদেশী অন্য কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের সহিত যৌথ উদ্যোগে, কোন আবেদনপত্র, আগ্রহ ব্যক্তকরণের আবেদনপত্র, প্রস্তাব বা দরপত্র দাখিল করিতে পারিবে ৷

(২) এই ধারার অধীন প্রাক্‌-যোগ্যতা, আগ্রহ ব্যক্তকরণ বা দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে যৌথ উদ্যোগে আবেদনপত্র, আগ্রহ ব্যক্তকরণের আবেদনপত্র, প্রস্তাব বা দরপত্র দাখিল করিতে হইবে মর্মে আবশ্যিক হিসাবে কোন শর্ত আরোপ করা যাইবে না ৷

(৩) ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রে, উক্ত ব্যক্তিবর্গ যৌথভাবে এবং পৃথক পৃথকভাবে ক্রয়কারীর নিকট দায়ী থাকিবে ৷

২৮৷ স্বার্থের সংঘাত

(১) কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এবং উহার সহিত অঙ্গীভূত কোন প্রতিষ্ঠান যদি কোন ক্রয়কারী কর্তৃক ইতঃপূর্বে নিয়োজিত হইয়া কোন প্রকল্প প্রণয়ন বা বাস্তবায়নে পেশাগত ও বুদ্ধিবৃত্তিক সেবা প্রদান করিয়া থাকে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উক্ত প্রকল্প হইতে সরাসরিভাবে উদ্ভূত বা ফলশ্রুতিতে আবশ্যক হয় এমন কোন পণ্য সরবরাহ, কার্য সম্পাদন বা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অযোগ্য হইবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি যদি ঠিকাদার হিসাবে টার্ন কী অথবা ডিজাইন ও নির্মাণ চুক্তি বাস্তবায়নের সহিত সম্পৃক্ত থাকে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না ৷

অংশ-৩: অভিযোগ ও আপীল

২৯৷ অভিযোগ করিবার অধিকার

(১) কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন ক্রয়কারীর উপর অর্পিত দায়িত্ব্‌ পালনে ব্যর্থতার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা তাহার ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, তিনি উক্ত ক্রয়কারীর বিরুদ্ধে ধারা ৩০ এ বর্ণিত কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবেন ৷

(২) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন অভিযোগ দায়ের করা যাইবে না যথাঃ-

(ক) পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয় পদ্ধতি নির্বাচন;

(খ) কোন আবেদনকারীর সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্তির আবেদন প্রত্যাখ্যান;

(গ) যে সকল ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হইয়াছে-

(অ) প্রাক্‌-যোগ্যতার আবেদন, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব বাতিল করিবার সিদ্ধান্ত; বা

(আ) সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি কর্তৃক অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে চুক্তি সম্পাদনের সিদ্ধান্ত ৷

৩০৷ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দায়ের, আপীল, ইত্যাদি

(১) ধারা ২৯ এর অধীন দায়েরতব্য প্রতিটি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ক্রয়কারীর প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের নিকট দায়ের করিতে হইবে এবং উক্তরূপে কোন অভিযোগ দায়ের হইলে, উক্ত কর্তৃপক্ষ উহা বিবেচনাক্রমে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিবে ৷

(২) কোন ব্যক্তি, যদি প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হন বা উক্ত কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করিতে ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সেই ক্ষেত্রে সরকার বা তত্কর্তৃক নির্ধারিত কোন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রিভিউ প্যানেলের নিকট আপীল করিতে পারিবেন ৷

(৩) ধারা ৩০ (২) এর অধীন সরকার, দায়েরকৃত কোন আপীল পর্যালোচনা ও সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য আইন, সংশ্লিষ্ট পণ্য বা কার্য বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ে কারিগরী জ্ঞানসম্পন্ন, ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এবং ক্রয় কার্যে সুবিদিত বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে এক বা একাধিক রিভিউ প্যানেল গঠন করিতে পারিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, প্রজাতন্ত্রের চাকুরীরত কোন সদস্য রিভিউ প্যানেলে অন্তর্ভূক্ত হইবে না৷

(৪) এই ধারার অধীন আপীল দায়ের ও নিষ্পত্তির বিষয়টি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে ৷

অংশ-৩: অভিযোগ ও আপীল

অংশ-১: সাধারণ নির্দেশনা

৯৷ ক্রয় সংক্রান্ত আইন, ইত্যাদি সাধারণের প্রাপ্যতা

সরকার, এই আইন, তদধীনে প্রণীত বিধি, আদেশ, নির্দেশ, নীতিমালা ও সর্বসাধারণের প্রয়োজন হইতে পারে এইরূপ ক্রয় সংক্রান্ত কাগজপত্র বা দলিলপত্র যাহাতে সর্বসাধারণের সহজ প্রাপ্তিসাধ্য হয় উহা নিশ্চিত করিবে এবং উহাদের যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করিবে ৷

১০৷ যোগাযোগের ধরণ

(১) এই আইনের অধীন ক্রয় কার্যে ক্রয়কারী কর্তৃক বা ক্রয়কারীর সহিত যাবতীয় যোগাযোগ লিখিত হইতে হইবে ৷

(২) এই আইনের অধীন লিখিতভাবে বা ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে অথবা উভয় পদ্ধতিতে যোগাযোগ করা যাইবে ৷

১১৷ ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন, ইত্যাদি

(১) সরকারের উন্নয়ন বাজেটের অর্থ দ্বারা বাস্তবায়িতব্য কোন প্রকল্পের অধীন ক্রয়কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে, সরকার কর্তৃক অনুমোদিত উক্ত প্রকল্প দলিলে বিধৃত সার্বিক ক্রয় পরিকল্পনা ক্রয়কারী বৎসরভিত্তিক হালনাগাদ করিয়া বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে ৷

(২) সরকারের রাজস্ব বাজেটের অধীন কোন ক্রয়কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে, ক্রয়কারী একটি বাত্সরিক ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন প্রণীত প্রত্যেক বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা, ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে ৷

(৪) ক্রয়কারী এই ধারার অধীন প্রণীত ক্রয় পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য প্রচারের ব্যবস্থা করিবে এবং উক্তরূপ প্রচারের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত নির্দেশনা অনুসরণ করিবে ৷

(৫) ক্রয়কারী সাধারণভাবে কোন একক ক্রয় কাজকে একাধিক প্যাকেজে বিভক্ত করিতে পারিবে না, তবে ক্রয়কারী ক্রয়কার্য সম্পাদনের সুবিধার্থে একটি একক কাজ একাধিক প্যাকেজে এবং একটি প্যাকেজকে একাধিক লটে বিভক্ত করিতে পারিবে ৷

(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীন কোন একক কাজ একাধিক প্যাকেজে বিভক্ত করা হইলে, উক্ত প্যাকেজসমূহের মোট অর্থের পরিমাণ অনুমোদনের এখতিয়ার যে কর্তৃপক্ষের থাকিবে, উক্ত যে কোন প্যাকেজের চুক্তি সম্পাদনের জন্য সকল প্যাকেজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সেই কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন করিতে হইবে ৷

১২৷ ক্রয় সংক্রান্ত দলিল

(১) ক্রয়কারী ক্রয়কার্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে প্রাক-যোগ্যতা, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব আহবানের জন্য দলিল প্রস্তুত করিবার সময়, ক্রয়ের উদ্দেশ্যের আবশ্যকীয় উপাদানগুলো বিবেচনায় রাখিয়া, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, নির্দিষ্টকৃত আদর্শ দলিল ব্যবহার করিবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আদর্শ দলিল, উহাতে নির্দেশিত ক্ষেত্রে, প্রয়োজনীয় অভিযোজনপূর্বক ব্যবহার করিতে হইবে ৷

১৩৷ ক্রয়কার্যে প্রতিযোগিতা

(১) ক্রয়কারী নিরপেক্ষ ও বস্তুনিষ্ঠভাবে ক্রয় প্রক্রিয়া প্রতিযোগিতামূলক করিবার নিশ্চয়তা বিধানের উদ্দেশ্যে, আবেদনপত্র, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব প্রস্তুত করিবার জন্য প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সকল আবেদনকারী, দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে প্রদান করিবে ৷

(২) যোগ্যতা নির্ধারণ ও মূল্যায়নের নির্ণায়কসমূহ সংশ্লিষ্ট দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখপূর্বক আবেদনকারী, দরপত্রদাতা বা পরামর্শক কর্তৃক সংশ্লিষ্ট আহবানে যথাযথভাবে সাড়া দেওয়ার জন্য ক্রয় পদ্ধতির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ এইরূপ ন্যুনতম সময় প্রদান নিশ্চত করিতে হইবে ৷

১৪৷ দরপত্রের মেয়াদ নির্ধারণ, নিরাপত্তা জামানত প্রদান, ইত্যাদি

দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে-

(ক) দরপত্র বা প্রস্তাবের বৈধতার মেয়াদ এইরূপে নির্ধারণ করিতে হইবে, যেন দরপত্র বা প্রস্তাবের মূল্যায়ন ও উহার তুলনামূলক যাচাই এবং প্রয়োজনীয় সকল পর্যায়ের অনুমোদন গ্রহণের জন্য উহা পর্যাপ্ত হয়, এবং উক্ত মেয়াদের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের জন্য নোটিশ প্রদান করা সম্ভব হয়ঃ

(খ) পণ্য ও কার্য ক্রয়ে নির্দিষ্টকৃত দরপত্র জামানত এবং ক্রয়কার্য সম্পাদন জামানতের নির্দিষ্ট হার ও নির্ধারিত পদ্ধতি উল্লেখ থাকিবে ৷ তবে সীমিত দরপত্র পদ্ধতি এবং কোটেশন প্রদানের অনুরোধ জ্ঞাপন পদ্ধতির ক্ষেত্রে দরপত্রদাতার জন্য দরপত্র জামানত প্রদান বাধ্যতামূলক হইবে না;

(গ) পণ্য ও কার্য সংক্রান্ত চুক্তির জন্য, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, অনুমিত রক্ষণযোগ্য অর্থ কি পদ্ধতিতে কর্তন এবং পরবর্তী সময়ে পুনর্ভরণ করা হইবে উহা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিতে হইবে;

(ঘ) সেবা ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তির ক্ষেত্রে, কোন ব্যক্তিকে প্রস্তাব জামানত দাখিল করিতে হইবে না, তবে পরামর্শককে কি ধরনের ক্ষতিবহন প্রতিশ্রুতি বীমাপত্র অথবা ক্ষতিবহন প্রতিশ্রুতি এবং বীমাপত্র দাখিল করিতে হইবে উহা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিতে হইবে :

তবে শর্ত থাকে যে, পরামর্শকের সহিত চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কার্য সম্পাদন জামানত আরোপ করা যাইতে পারে।

১৫৷ বিনির্দেশ (specification) এবং কর্মপরিধি (terms of reference) প্রস্তুত

(১) ক্রয়কারী, দরপত্রদাতাগণের মধ্যে পক্ষপাতহীন ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যে, ক্রয়ের জন্য নির্দিষ্টকৃত পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা, অথবা কার্য ও ভৌত সেবার কারিগরী বিনির্দেশ ও বর্ণনা প্রস্তুত করিবার সময় উহার প্রত্যাশিত কার্যসম্পাদনের যোগ্যতার স্তর, বৈশিষ্ট এবং মান সম্পর্কে সঠিক ও পরিপূর্ণ বর্ণনা প্রদান করিবে এবং সেইমত পণ্য, কার্য, সেবা ক্রয় নিশ্চিত করিবে; তবে উহা যেন সীমাবদ্ধকর না হয় তাহার নিশ্চয়তা বিধান করিতে হইবে ৷

(২) ক্রয়কারী, পরামর্শকদের মধ্যে পক্ষপাতহীন ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যে, পরামর্শকদের কার্যপরিধি নির্ধারণের সময় পেশাগত ও বুদ্ধিবৃত্তিক সেবা ক্রয়ের সঠিক ও পূর্ণাংগ বর্ণনা প্রদান করিবে; তবে প্রতিযোগিতা সীমিত করিতে পারে এইরূপ কোন শর্ত আরোপ করা যাইবে না ৷

১৬৷ সামাজিক বিচার্য বিষয়

কোন ক্রয়কারী ক্রয় সংক্রান্ত দলিলে শ্রমিকদের মজুরীর মান ও তত্সশ্লিষ্ট সামাজিক সুযোগ-সুবিধা, পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং শিশু শ্রম নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত কোন বিধানের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ কোন শর্ত অন্তর্ভূক্ত করিতে পারিবে না ৷

১৭৷ দলিলপত্রাদি অনুবাদ ও প্রকাশনা ৷

সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত, কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন জারীকৃত বিধি, আদেশ, নির্দেশ বা ক্রয় সংক্রান্ত কোন দলিল বা উহার অনুবাদ প্রকাশ করিতে পারিবে না ৷

১৮৷ ক্রয় প্রক্রিয়ার গোপনীয়তা রক্ষা

(১) ক্রয়কারী, মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক কোন ব্যক্তির নিকট যাচিত স্পষ্টীকরণের ক্ষেত্র ব্যতীত, দরপত্র বা প্রস্তাব উন্মুক্ত বা খোলা হইতে চুক্তি সম্পাদন পর্যন্ত প্রক্রিয়ার গোপনীয়তা রক্ষা করিবে ৷

(২) কোন ব্যক্তি ক্রয় প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করিবার কোনরূপ চেষ্টা করিলে উক্ত ব্যক্তির প্রাক্‌-যোগ্যতা, দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল হইবে ৷

১৯৷ দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিলকরণ

(১) ক্রয়কারী, সংশ্লিষ্ট দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে উহা উল্লেখ থাকা সাপেক্ষে, চুক্তি সম্পাদন নোটিশ জারীর পূর্বে, যে কোন সময়, নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণক্রমে, সকল দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল করিতে পারিবে ৷

(১ক) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন সীমিত দরপত্র পদ্ধতির আওতায় অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলন (Official estimate) উল্লেখ করিতে হইবে । তবে কোন দরদাতা কর্তৃক দরপত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলনের ৫% (পাঁচ শতাংশ) এর অধিক কম বা অধিক বেশী দর উদ্ধৃত করা হইলে উক্ত দরপত্র বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।

(২) দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল পরবর্তী গৃহীতব্য ব্যবস্থা বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন বাতিল করা হইলে কোন ব্যক্তির নিকট ক্রয়কারীর কোন দায় বর্তাইবে না ৷

২০৷ ক্রয় অনুমোদন প্রক্রিয়া ও চুক্তি সম্পাদন নোটিশ

ক্রয় অনুমোদন প্রক্রিয়া ও চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ জারীর ক্ষেত্রে ক্রয়কারী-

(ক) দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন উন্মুক্ত করিবার সময় হইতে চুক্তি সম্পাদন নোটিশ জারী পর্যন্ত নির্ধারিত প্রক্রিয়া ও সময়সীমা অনুসরণ করিবে;

(খ) দরপত্র বা প্রস্তাব বা কোটেশন অনুমোদনের উদ্দেশ্যে, সরকারের আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশে বর্ণিত নির্দেশনা অনুসরণ করিবে;

(গ) দরপত্র বা প্রস্তাবের বৈধতার মেয়াদ উত্তীর্ণ হইবার পূর্বে, কৃতকার্য দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে চুক্তি সম্পাদনে নোটিশ জারী করিবে ৷

২১৷ চুক্তি সম্পাদন নোটিশ প্রকাশ এবং অবহিতকরণ

(১) ক্রয়কারী নির্ধারিত ফরমে নোটিশ বোর্ডে অথবা উহার নিজস্ব ওয়েবসাইটে, যদি থাকে, চুক্তি সম্পাদন নোটিশ জারী করিবে এবং নির্ধারিত মূল্যসীমার উর্ধ্বের চুক্তির ক্ষেত্রে চুক্তি সম্পাদনের নোটিশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে প্রকাশের জন্য প্রেরণ করিবে ৷

(২) ক্রয় বিষয়ে কৃতকার্য দরপত্রদাতা বা পরামর্শকের সহিত চুক্তি স্বাক্ষরের পর, যে কোন দরপত্রদাতা বা পরামর্শকের স্বীয় দরপত্র বা প্রস্তাব সম্পর্কে ক্রয়কারীর নিকট হইতে জানিবার অধিকার থাকিবে এবং উক্তরূপে যদি কোন দরপত্রদাতা বা পরামর্শক তাহার দাখিলকৃত দরপত্র বা প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ার কারণ সম্পর্কে ক্রয়কারীর নিকট জানিতে চাহেন, তাহা হইলে ক্রয়কারী উক্ত দরপত্রদাতা বা পরামর্শককে তাহার আপেক্ষিক অবস্থান এবং দরপত্র বা প্রস্তাবের ঘাটতিসমূহ অবহিত করিবে ৷

২২৷ চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা

ক্রয়কারী কার্যকরভাবে চুক্তি পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার জন্য, সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত নির্দেশনাবলী অনুসরণ করিবে ৷

২৩৷ ক্রয় সংক্রান্ত রেকর্ড সংরক্ষণ

(১) ক্রয়কারী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, ক্রয়কার্য সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ড যথাযথভাবে সংরক্ষণ করিবে ৷

২৪৷ ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ

(১) ক্রয়কারী প্রত্যেক অর্থ বত্সর সমাপ্তির নয় মাসের মধ্যে পূর্ববর্তী বত্সরে সম্পাদিত মোট ক্রয় কার্যের নমুনাভিত্তিক নিরপেক্ষ ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণের ব্যবস্থা করিবে ৷

(২) সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্তৃপক্ষ ক্রয়কারী কর্তৃক সম্পাদিত ক্রয়কার্যের ক্রয় প্রক্রিয়া-উত্তর পুনরীক্ষণ করিতে পারিবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন পুনরীক্ষণের ক্ষেত্রে দৈবচয়ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হইবে এবং উক্ত পদ্ধতির রূপরেখা বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

অংশ-২: ক্রয় প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহন

২৫৷ বৈষম্যহীনতা

সরকার ভিন্নরূপ কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করিলে, ক্রয়কারী কোন ব্যক্তিকে তাহার বর্ণ, জাতীয়তা বা জাতিগত, অথবা ক্রয় সংক্রান্ত দলিলে উল্লিখিত যোগ্যতা বা এই আইনের অধীন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থার সহিত সম্পর্কযুক্ত নহে এইরূপ কোন নির্ণায়কের ভিত্তিতে ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণে নিবৃত্ত করিবে না ৷

২৬৷ ব্যক্তির যোগ্যতা

(১) ক্রয়কারী ক্রয়কার্যে অংশগ্রহণের জন্য তাহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় ন্যুনতম যোগ্যতার নির্ণায়কসমূহ বা অন্যান্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কী কী যোগ্যতা অর্জন করিতে হইবে, উহা ক্রয় সংক্রান্ত দলিলে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সীমিত দরপত্র পদ্ধতির আওতায় অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ঠিকাদারের তালিকা সংরক্ষণ করিতে হইবে এবং ব্যক্তির যোগ্যতা নির্ধারণে অতীতে সম্পাদিত কার্যের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হইবে না।

আরো শর্ত থাকে যে, অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ঠিকাদার কর্তৃক অতীতে সম্পাদিত কার্যক্রয়ের অভিজ্ঞতাসহ অন্যান্য অভিজ্ঞতার আলোকে প্রণীত তালিকা সংরক্ষণ করিতে হইবে। তবে ক্রয়কারী আইনের ধারা ৩১ অনুযায়ী অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকা পর্যন্ত কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে উন্মুক্ত পদ্ধতিও ব্যবহার করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত নির্ণায়কসমূহ কোন ব্যক্তি কর্তৃক অতীতে সম্পাদিত ক্রয়কার্য, উত্পাদন ক্ষমতা এবং কোন নির্দিষ্ট ক্রয়কার্য সম্পাদনের জন্য আর্থিক সামর্থ্য সম্পর্কিত হইতে হইবে ৷

২৭৷ যৌথ উদ্যোগ

(১) কোন ব্যক্তি, স্বতন্ত্রভাবে বা দেশী বা বিদেশী অন্য কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের সহিত যৌথ উদ্যোগে, কোন আবেদনপত্র, আগ্রহ ব্যক্তকরণের আবেদনপত্র, প্রস্তাব বা দরপত্র দাখিল করিতে পারিবে ৷

(২) এই ধারার অধীন প্রাক্‌-যোগ্যতা, আগ্রহ ব্যক্তকরণ বা দরপত্র বা প্রস্তাব দলিলে যৌথ উদ্যোগে আবেদনপত্র, আগ্রহ ব্যক্তকরণের আবেদনপত্র, প্রস্তাব বা দরপত্র দাখিল করিতে হইবে মর্মে আবশ্যিক হিসাবে কোন শর্ত আরোপ করা যাইবে না ৷

(৩) ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রে, উক্ত ব্যক্তিবর্গ যৌথভাবে এবং পৃথক পৃথকভাবে ক্রয়কারীর নিকট দায়ী থাকিবে ৷

২৮৷ স্বার্থের সংঘাত

(১) কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এবং উহার সহিত অঙ্গীভূত কোন প্রতিষ্ঠান যদি কোন ক্রয়কারী কর্তৃক ইতঃপূর্বে নিয়োজিত হইয়া কোন প্রকল্প প্রণয়ন বা বাস্তবায়নে পেশাগত ও বুদ্ধিবৃত্তিক সেবা প্রদান করিয়া থাকে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উক্ত প্রকল্প হইতে সরাসরিভাবে উদ্ভূত বা ফলশ্রুতিতে আবশ্যক হয় এমন কোন পণ্য সরবরাহ, কার্য সম্পাদন বা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অযোগ্য হইবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি যদি ঠিকাদার হিসাবে টার্ন কী অথবা ডিজাইন ও নির্মাণ চুক্তি বাস্তবায়নের সহিত সম্পৃক্ত থাকে, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই ধারার বিধান প্রযোজ্য হইবে না ৷

অংশ-৩: অভিযোগ ও আপীল

২৯৷ অভিযোগ করিবার অধিকার

(১) কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন ক্রয়কারীর উপর অর্পিত দায়িত্ব্‌ পালনে ব্যর্থতার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা তাহার ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, তিনি উক্ত ক্রয়কারীর বিরুদ্ধে ধারা ৩০ এ বর্ণিত কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবেন ৷

(২) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন অভিযোগ দায়ের করা যাইবে না যথাঃ-

(ক) পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয় পদ্ধতি নির্বাচন;

(খ) কোন আবেদনকারীর সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্তির আবেদন প্রত্যাখ্যান;

(গ) যে সকল ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হইয়াছে-

(অ) প্রাক্‌-যোগ্যতার আবেদন, দরপত্র, কোটেশন বা প্রস্তাব বাতিল করিবার সিদ্ধান্ত; বা

(আ) সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি কর্তৃক অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে চুক্তি সম্পাদনের সিদ্ধান্ত ৷

৩০৷ প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দায়ের, আপীল, ইত্যাদি

(১) ধারা ২৯ এর অধীন দায়েরতব্য প্রতিটি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ক্রয়কারীর প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের নিকট দায়ের করিতে হইবে এবং উক্তরূপে কোন অভিযোগ দায়ের হইলে, উক্ত কর্তৃপক্ষ উহা বিবেচনাক্রমে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিবে ৷

(২) কোন ব্যক্তি, যদি প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হন বা উক্ত কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করিতে ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সেই ক্ষেত্রে সরকার বা তত্কর্তৃক নির্ধারিত কোন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রিভিউ প্যানেলের নিকট আপীল করিতে পারিবেন ৷

(৩) ধারা ৩০ (২) এর অধীন সরকার, দায়েরকৃত কোন আপীল পর্যালোচনা ও সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য আইন, সংশ্লিষ্ট পণ্য বা কার্য বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ে কারিগরী জ্ঞানসম্পন্ন, ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এবং ক্রয় কার্যে সুবিদিত বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে এক বা একাধিক রিভিউ প্যানেল গঠন করিতে পারিবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, প্রজাতন্ত্রের চাকুরীরত কোন সদস্য রিভিউ প্যানেলে অন্তর্ভূক্ত হইবে না৷

(৪) এই ধারার অধীন আপীল দায়ের ও নিষ্পত্তির বিষয়টি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে ৷

চতুর্থ অধ্যায়ঃ পণ্য, কার্য, ইত্যাদির ক্রয় পদ্ধতি এবং উহার প্রয়োগ

অংশ-১: আভ্যন্তরীণ ক্রয়

চতুর্থ অধ্যায়ঃ পণ্য, কার্য, ইত্যাদির ক্রয় পদ্ধতি এবং উহার প্রয়োগ (ধারা ৩১-৩৬)

৩১৷ পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির প্রয়োগ

(১) ক্রয়কারী পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে অগ্রে বিবেচ্য হিসাবে নিম্নবর্ণিত শর্ত পরিপালনপূর্বক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করিবে, যথাঃ-

(ক) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রাক্‌-যোগ্যতা নির্ধারণ;
(খ) দরপত্রদাতাগণকে বৈষম্যহীন ও সম-শর্তাধীনে প্রতিযোগিতার সুযোগ প্রদান;
(গ) ধারা ৪০ এ বর্ণিত বিধান অনুসরণে বিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান;
(ঘ) দরপত্র দাখিলের জন্য এবং পণ্য সরবরাহ, কার্য সম্পাদনের জন্য নির্ধারিত ন্যুনতম সময় প্রদান;
(ঙ) সর্বনিম্ন মূল্যায়িত রেসপনসিভ দরপত্রদাতার সহিত চুক্তি সম্পাদন ৷

(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত পদ্ধতির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

(৩) উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির অধীন অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন দরপত্রদাতা কতৃক দরপত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় (Official cost estimate) ১০% (শতকরা দশ ভাগ) এর অধিক কম বা অধিক বেশি দর উদ্ধৃত করা হইলে উক্ত দরপত্র বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত দরপত্র মূল্য সমতার ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন ও কৃতকার্য দরদাতা নির্বাচন করিতে হইবে, কিন্তু লটারির মাধ্যমে কৃতকার্য দরদাতা নির্বাচন করা যাইবে না।

৩২৷ পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ে অন্যান্য ক্রয় পদ্ধতির প্রয়োগ

(১) ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে ধারা ৩১ এ উল্লিখিত পদ্ধতি ব্যতীত অন্য কোন পদ্ধতিতে পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে, কারিগরী অথবা অর্থনৈতিক কারণ যুক্তিযুক্ত বিবেচিত হইলে ক্রয়কারী নিম্নবর্ণিত যে কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করিতে পারিবে, যথাঃ-

(ক) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে সীমিত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(অ) বিশেষায়িত প্রকৃতির পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা, যাহা কেবল সীমিত সংখ্যাক সরবরাহকারী বা ঠিকাদারগণের নিকট হইতে লভ্য হয়;

(আ) খুচরা যন্ত্রাংশের মজুদ এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় হ্রাস করিবার উদ্দেশ্যে, কোন ব্রান্ডের নির্দিষ্ট মান প্রমিতকরণ সংক্রান্ত সরকারী নীতি থাকিলে;

(ই) অধিক সংখ্যাক দরপত্র গ্রহণ ও মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ও ব্যয় চুক্তি মূল্যের তুলনায় অসমঞ্জস হয়ঃ

তবে শর্ত থাকে যে, দফা (অ) এবং (আ) এর ক্ষেত্রে কোন মূল্যসীমা প্রযোজ্য হইবে না এবং সকল সরবরাহকারী বা ঠিকাদারদেরকে দরপত্র দাখিলের জন্য আহ্বান জানাইতে হইবে এবং দফা (ই) এর ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত সরবরাহকারী বা ঠিকাদারদের মাধ্যমে নির্ধারিত মূল্যসীমা সাপেক্ষে প্রযোজ্য হইবে;

(খ) সম্ভাব্য প্রতিযোগিতা এড়াইবার জন্য বা দরপত্রদাতাদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করিতে পারে এমন কোন পন্থা অবলম্বন না করিয়া নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(অ) কারিগরী কারণে পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য ও ভৌত সেবা সরবরাহের জন্য কেবল একজন দরপত্রদাতা থাকিলে;

(আ) দারিদ্র্য নিরসনের উদ্দেশ্যমাত্রিক প্রকল্প দলিলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সহিত সরাসরি চুক্তি সম্পাদনের ব্যবস্থা থাকিলে;

(ই) নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে, মূল সরবরাহকারী কর্তৃক পণ্যের অতিরিক্ত সরবরাহ, মূল ঠিকাদার কর্তৃক অতিরিক্ত কার্যসম্পাদন বা মূল সরবরাহকারী বা ঠিকাদারের মাধ্যমে বর্ধিত সেবা ক্রয় করা হইলে;

(ঈ) ব্যতিক্রমী সুবিধাজনক শর্তে পণ্য ক্রয়, যদি উক্ত পণ্য সাম্প্রতিক অব্যবহৃত এবং উত্পাদনকারীর গ্যারান্টিযুক্ত হয়, অথবা, বাজার শর্তে পচনশীল পণ্যের ক্রয়, বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ক্রয় করা হইলে;

(উ) সরকার ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করিলে, বিশে’ষ ক্ষেত্রে সরকারী মালিকানাধীন কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কারখানা হইতে সরকারের নিজস্ব অর্থে পণ্য ক্রয় করা হইলে;

(ঊ) নির্ধারিত অর্থের মধ্যে অতি জরুরী বা প্রয়োজনীয় পণ্য, কার্য, সেবা ইত্যাদি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৷

(গ) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে দুই পর্যায়বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যদি-

(অ) বৃহদায়তন ও জটিল প্রকল্পের ক্ষেত্রে, ক্রয় প্রক্রিয়ার প্রারম্ভে ক্রয়কারী কর্তৃক ক্রয়ের জন্য নির্দিষ্ট বস্তুর পূর্ণাংগ কারিগরী বিনির্দেশ প্রস্তুত করা সম্ভব না হয়; বা

(আ) দ্রুত বিকাশশীল কোন শিল্পে বিকল্প কারিগরী সমাধান লভ্য হয়;

(গগ) দফা (গ) এ উল্লেখিত দুই পর্যায়বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রযোজ্য না হইলে এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে;

(ঘ) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে কোটেশন প্রদানের অনুরোধ জ্ঞাপন পদ্ধতি, নির্ধারিত মূল্যসীমা সাপেক্ষে, প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(অ) বাজারে নিয়মিত বিদ্যমান এইরূপ প্রমিত মানের স্বল্প মূল্যের সহজলভ্য পণ্য বা ভৌত সেবা ক্রয়; বা

(আ) জন-উপযোগমূলক সরকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ওয়ার্কশপে রক্ষণাবেক্ষণ বা জরুরী মেরামত কাজের জন্য জরুরী ভিত্তিতে আবশ্যক পণ্যদ্রব্য ক্রয়; বা

(ই) সরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রক্রিয়াজাতকরণ ও উত্পাদন কারখানার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য ক্রয় ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন পদ্ধতিতে ক্রয় করা হইলে সেই পদ্ধতি ব্যবহারের কারণসমূহ ক্রয়কারী যথাযথভাবে নথিতে লিপিবদ্ধক্রমে সংরক্ষণ করিবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত পদ্ধতিসমূহের রূপরেখা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

অংশ-২: আন্তর্জাতিক ক্রয়

৩৩৷ পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে উন্মুক্ত পদ্ধতির প্রয়োগ

পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ে যেইক্ষেত্রে ক্রয়কারী কর্তৃক দেশের অভ্যন্তরে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহবানের মাধ্যমে উহা ক্রয় করা সম্ভবপর নয় এবং বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ ব্যতিরেকে আন্তর্জাতিক কার্যকর প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় মর্মে ক্রয়কারীর নিকট যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতীয়মান হয়, সেইক্ষেত্রে ক্রয়কারী এই আইনের তৃতীয় ও ষষ্ঠ অধ্যায়ের বিধান অনুসারে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, দরপত্রদাতাদের প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণের পর এবং নিম্নবর্ণিত শর্ত পরিপালন করিয়া আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করিবে, যথাঃ-

(ক) দরপত্র আহবানের বিজ্ঞপ্তি ইংরেজী ভাষায় প্রকাশ এবং এই আইনের ধারা ৪০ এর বিধানানুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রদান;

(খ) দরপত্র দলিলসমূহ ইংরেজী ভাষায় প্রণয়ন;

(গ) ক্রয়কারী দরপত্র দলিল প্রণয়নকালে নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করিবে, যথাঃ-

(অ) দরপত্র দাখিলের জন্য নির্ধারিত ন্যুনতম সময় প্রদান;

(আ) জাতীয় চাহিদার সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, আন্তর্জাতিক মান বা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বহুল ব্যবহৃত মানদন্ডের ভিত্তিতে কারিগরী বিনির্দেশ নির্ধারণ;

(ই) দরপত্রদাতাদেরকে দরপত্র জামানত ও কার্য-সম্পাদন জামানত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বহুল ব্যবহৃত মুদ্রায় বা মুদ্রাসমূহে উদ্ধৃত করিবার অনুমতি প্রদান;

(ঈ) স্থানীয় যোগান সংশ্লিষ্ট ব্যয় দরপত্রে টাকায় উদ্ধৃত করিবার জন্য দরপত্রদাতাকে নির্দেশ প্রদান;

(উ) চুক্তিপত্রে উল্লিখিত মুদ্রা বা মুদ্রাসমূহে চুক্তিমূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা;

(ঊ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যবহৃত শর্তাবলীর অনুরূপ চুক্তির সাধারণ ও বিশেষ শর্তাবলী নির্ধারণ;

(ঋ) দরপত্র দলিলে, পণ্যদ্রব্যের ক্ষেত্রে গন্তব্যস্থলে সরবরাহের জন্য উদ্ধৃত মূল্যের, শুল্ক ও কর বাদে, এবং কার্যের ক্ষেত্রে কাজের মূল্যের, শুল্ক ও করসহ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত হারে বাধ্যতামূলকভাবে দেশীয় অগ্রাধিকার প্রদানের ব্যবস্থা গহণ :

তবে শর্ত থাকে যে, দেশীয় অগ্রাধিকার প্রদানে শিথিলতার জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করিতে হইবে।

(ঋঋ) দফা (ঋ) অনুসারে অগ্রাধিকার প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য–

(অ) সংশিস্নষ্ট পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে দরপত্রকে; এবং

(আ) কার্যের ক্ষেত্রে দরপত্র দাতাকে নির্ধারিত শর্ত পূরণ;

(এ) যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় অংশীদারিত্ব উত্সাহিত করা, কিন্তু উহা বাধ্যতামূলক শর্ত হিসাবে আরোপ না করা;

(ঐ) বৃহত্ বা জটিল কাজ সরবরাহ ও সংস্থাপনের চুক্তির ক্ষেত্রে বিরোধ নিষ্পত্তির বিকল্প পদ্ধতিসমূহ প্রয়োগঃ

তবে শর্ত থাকে যে, বিরোধ চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দরপত্র দলিলে বর্ণিত আন্তর্জাতিক সালিস-নিষ্পত্তি পদ্ধতি প্রযোজ্য হইবে ৷

৩৪৷ পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে  দুই পর্যায়, কোটেশন ও অন্যান্য পদ্ধতির প্রয়োগ

(১) পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত অবস্থার উদ্ভব হইলে দুই পর্যায়বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) ধারা ৩২(গ) এর বিধান অনুসারে যে সকল কারণে উক্ত পদ্ধতি প্রয়োগযোগ্য;

(খ) দেশের অভ্যন্তরে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহবানের মাধ্যমে উহা ক্রয় করা সম্ভব নয় বলিয়া ক্রয়কারীর নিকট যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতীয়মান হইলে;

(গ) বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ ব্যতিরেকে আন্তর্জাতিক কার্যকর প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় মর্মে ক্রয়কারীর নিকট যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতীয়মান হইলে ৷

(১ক) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত দুই পর্যায়বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগযোগ্য না হইলে এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে।

(২) কোন একটি বিশেষ সময়ের চাহিদা ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিবেচনায় আন্তর্জাতিক বাজার হইতে বিভাজ্য পণ্যসামগ্রী অধিক পরিমাণে ক্রয় করা আবশ্যক হইলে, নিম্নরূপ প্রক্রিয়া অনুসরণ করিয়া কোটেশন পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে উহা ক্রয় করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) অনুকূল বাজারের সুযোগ গ্রহণের লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী সংগৃহীতব্য মোট পণ্যের পরিমাণ প্রয়োজনের নিরিখে যুক্তিসংগতভাবে কয়েকটি প্যাকেজে বিভক্ত করিয়া একাধিক চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে উহা ক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা;

(খ) ক্রয়কারী কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়ের জন্য যোগ্য দরপত্রদাতাগণের তালিকা প্রণয়ন করিয়া চাহিদার নিরিখে নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাহাদেরকে, কোন একটি বিশেষ সময়ে বা পণ্য জাহাজীকরণের পূর্বে, বিদ্যমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সহিত সংগতি রাখিয়া সংশ্লিষ্ট পণ্যের দর উদ্ধৃত করিবার জন্য আহ্বান করা;

(গ) দরপত্রদাতাগণকে পণ্য হ্যান্ডলিং ব্যয় বা পরিবহণ ব্যয় এবং ক্রয়কারী কর্তৃক নির্ধারিত অন্যান্য শর্তসাপেক্ষে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হইতে আহবান করা;

(ঘ) দরপত্র দাখিলের জন্য এবং উহার বৈধতার মেয়াদের ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত সময়সীমা নির্ধারণপূর্বক কোটেশন আহবান করা ৷

(৩) উপ-ধারা (১), (১ক) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ক্রয়কারী বিদেশী সরকার বা সংস্থা কর্তৃক প্রদেয় কোন ঋণ, ক্রেডিট বা অনুদানের মাধ্যমে অর্থায়িত পণ্যসামগ্রীর ক্ষেত্রে পণ্য হ্যান্ডলিং ব্যয় বা পরিবহণ ব্যয়ের জন্য দরপত্র দাখিল এবং উহার বৈধতার মেয়াদের ক্ষেত্রে, সংক্ষিপ্ত সময়সীমা নির্ধারণপূর্বক দরদাতাগণকে দরপত্রে অংশগ্রহণের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হইতে আহবান জানাইতে পারিবে ৷

(৪) বিশেষায়িত প্রকৃতির পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা, যাহা কেবল সীমিত সংখ্যক সরবরাহকারী বা ঠিকাদারগণের নিকট হতে লভ্য হইলে আন্তর্জাতিক সীমিত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে ৷

(৫) কারিগরী কারণে পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য ও ভৌত সেবা সরবরাহের জন্য কেবল একজন দরপত্রদাতা থাকিলে বা নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে, মূল সরবরাহকারী কর্তৃক পণ্যের অতিরিক্ত সরবরাহ মূল ঠিকাদার কর্তৃক অতিরিক্ত কার্যসম্পাদন বা মূল সরবরাহকারী বা ঠিকাদারের মাধ্যমে বর্ধিত সেবা ক্রয় করিবার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে ৷

(৬) উপ-ধারা (১), (১ক), (২), (৪) এবং (৫) এ উল্লিখিত পদ্ধতির রূপরেখা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

অংশ-৩: ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি, ইত্যাদি

৩৫৷ দূতাবাস এবং বিশেষ ক্ষেত্রে জাতীয় পতাকাবাহী বাহনের জন্য ক্রয়

(১) বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস, হাইকমিশন, বা মিশনসমূহ প্রমিতমানের স্বল্পমূল্যের সহজলভ্য পণ্য এবং অপ্রত্যাশিত জরুরী ভৌত সেবা নির্ধারিত মূল্যসীমা সাপেক্ষে, ধারা ৩২ (ঘ) এ উল্লিখিত কোটেশন প্রদানের অনুরোধ জ্ঞাপন পদ্ধতি প্রয়োগ করিয়া ক্রয় করিতে পারিবে ৷

(২) বাংলাদেশের সীমানার বাহিরে অবস্থানকালীন কোন জাতীয় পতাকাবাহী বাহন জ্বালানী বা খুচরা যন্ত্রাংশ বা জরুরী মেরামতের প্রয়োজনে অগ্রিম পরিকল্পনা করা সম্ভব না হইলে বা জরুরী ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বাহনটি পুনঃব্যবহার উপযোগী করা আবশ্যক হইলে, জ্বালানী বা খুচরা যন্ত্রাংশ সংগ্রহ বা কোন জরুরী মেরামত কাজের জন্য ধারা ৩২(খ) তে উল্লিখিত সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি ব্যবহার করিয়া ক্রয় করা যাইবে ৷

৩৬৷ ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি

(১) ক্রয়কারীর যদি নির্দিষ্ট সময় অন্তর যথেষ্ট পরিমাণে আবশ্যক সচরাচর ব্যবহৃত সামগ্রী ক্রয়ের প্রয়োজন হয় অথবা আবর্তক কোন ভৌত সেবা ক্রয়ের প্রয়োজন হয়, তাহা হইলে ক্রয়কারী এক বা একাধিক সরবরাহকারী বা দরপত্রদাতাগণের সহিত কোন উন্মুক্ত বা সীমিত দরপত্র পদ্ধতির মধ্যে যে কোন একটি পদ্ধতি প্রয়োগ করিয়া ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে ৷

(২) কোন ক্রয়কারী, অন্য কোন ক্রয়কারী কর্তৃক ইতোমধ্যে সম্পাদিত ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির আওতায় একই ধরণের পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের প্রয়োজন হইলে, উক্ত সম্পাদিত চুক্তির আওতায় উক্ত ক্রয় সম্পাদন করিতে পারিবে ৷

(৩) ক্রয়কারী ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির আওতায় কোন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত নির্দেশাবলী ও আদর্শ দলিল, প্রয়োজনীয় অভিযোজনপূর্বক, ব্যবহার করিবে ৷

অংশ-২: আন্তর্জাতিক ক্রয়

চতুর্থ অধ্যায়ঃ পণ্য, কার্য, ইত্যাদির ক্রয় পদ্ধতি এবং উহার প্রয়োগ (ধারা ৩১-৩৬)

৩১৷ পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির প্রয়োগ

(১) ক্রয়কারী পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে অগ্রে বিবেচ্য হিসাবে নিম্নবর্ণিত শর্ত পরিপালনপূর্বক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করিবে, যথাঃ-

(ক) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রাক্‌-যোগ্যতা নির্ধারণ;
(খ) দরপত্রদাতাগণকে বৈষম্যহীন ও সম-শর্তাধীনে প্রতিযোগিতার সুযোগ প্রদান;
(গ) ধারা ৪০ এ বর্ণিত বিধান অনুসরণে বিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান;
(ঘ) দরপত্র দাখিলের জন্য এবং পণ্য সরবরাহ, কার্য সম্পাদনের জন্য নির্ধারিত ন্যুনতম সময় প্রদান;
(ঙ) সর্বনিম্ন মূল্যায়িত রেসপনসিভ দরপত্রদাতার সহিত চুক্তি সম্পাদন ৷

(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত পদ্ধতির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

(৩) উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির অধীন অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন দরপত্রদাতা কতৃক দরপত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় (Official cost estimate) ১০% (শতকরা দশ ভাগ) এর অধিক কম বা অধিক বেশি দর উদ্ধৃত করা হইলে উক্ত দরপত্র বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত দরপত্র মূল্য সমতার ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন ও কৃতকার্য দরদাতা নির্বাচন করিতে হইবে, কিন্তু লটারির মাধ্যমে কৃতকার্য দরদাতা নির্বাচন করা যাইবে না।

৩২৷ পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ে অন্যান্য ক্রয় পদ্ধতির প্রয়োগ

(১) ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে ধারা ৩১ এ উল্লিখিত পদ্ধতি ব্যতীত অন্য কোন পদ্ধতিতে পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে, কারিগরী অথবা অর্থনৈতিক কারণ যুক্তিযুক্ত বিবেচিত হইলে ক্রয়কারী নিম্নবর্ণিত যে কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করিতে পারিবে, যথাঃ-

(ক) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে সীমিত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(অ) বিশেষায়িত প্রকৃতির পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা, যাহা কেবল সীমিত সংখ্যাক সরবরাহকারী বা ঠিকাদারগণের নিকট হইতে লভ্য হয়;

(আ) খুচরা যন্ত্রাংশের মজুদ এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় হ্রাস করিবার উদ্দেশ্যে, কোন ব্রান্ডের নির্দিষ্ট মান প্রমিতকরণ সংক্রান্ত সরকারী নীতি থাকিলে;

(ই) অধিক সংখ্যাক দরপত্র গ্রহণ ও মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ও ব্যয় চুক্তি মূল্যের তুলনায় অসমঞ্জস হয়ঃ

তবে শর্ত থাকে যে, দফা (অ) এবং (আ) এর ক্ষেত্রে কোন মূল্যসীমা প্রযোজ্য হইবে না এবং সকল সরবরাহকারী বা ঠিকাদারদেরকে দরপত্র দাখিলের জন্য আহ্বান জানাইতে হইবে এবং দফা (ই) এর ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত সরবরাহকারী বা ঠিকাদারদের মাধ্যমে নির্ধারিত মূল্যসীমা সাপেক্ষে প্রযোজ্য হইবে;

(খ) সম্ভাব্য প্রতিযোগিতা এড়াইবার জন্য বা দরপত্রদাতাদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করিতে পারে এমন কোন পন্থা অবলম্বন না করিয়া নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(অ) কারিগরী কারণে পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য ও ভৌত সেবা সরবরাহের জন্য কেবল একজন দরপত্রদাতা থাকিলে;

(আ) দারিদ্র্য নিরসনের উদ্দেশ্যমাত্রিক প্রকল্প দলিলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সহিত সরাসরি চুক্তি সম্পাদনের ব্যবস্থা থাকিলে;

(ই) নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে, মূল সরবরাহকারী কর্তৃক পণ্যের অতিরিক্ত সরবরাহ, মূল ঠিকাদার কর্তৃক অতিরিক্ত কার্যসম্পাদন বা মূল সরবরাহকারী বা ঠিকাদারের মাধ্যমে বর্ধিত সেবা ক্রয় করা হইলে;

(ঈ) ব্যতিক্রমী সুবিধাজনক শর্তে পণ্য ক্রয়, যদি উক্ত পণ্য সাম্প্রতিক অব্যবহৃত এবং উত্পাদনকারীর গ্যারান্টিযুক্ত হয়, অথবা, বাজার শর্তে পচনশীল পণ্যের ক্রয়, বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ক্রয় করা হইলে;

(উ) সরকার ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করিলে, বিশে’ষ ক্ষেত্রে সরকারী মালিকানাধীন কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কারখানা হইতে সরকারের নিজস্ব অর্থে পণ্য ক্রয় করা হইলে;

(ঊ) নির্ধারিত অর্থের মধ্যে অতি জরুরী বা প্রয়োজনীয় পণ্য, কার্য, সেবা ইত্যাদি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৷

(গ) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে দুই পর্যায়বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যদি-

(অ) বৃহদায়তন ও জটিল প্রকল্পের ক্ষেত্রে, ক্রয় প্রক্রিয়ার প্রারম্ভে ক্রয়কারী কর্তৃক ক্রয়ের জন্য নির্দিষ্ট বস্তুর পূর্ণাংগ কারিগরী বিনির্দেশ প্রস্তুত করা সম্ভব না হয়; বা

(আ) দ্রুত বিকাশশীল কোন শিল্পে বিকল্প কারিগরী সমাধান লভ্য হয়;

(গগ) দফা (গ) এ উল্লেখিত দুই পর্যায়বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রযোজ্য না হইলে এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে;

(ঘ) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে কোটেশন প্রদানের অনুরোধ জ্ঞাপন পদ্ধতি, নির্ধারিত মূল্যসীমা সাপেক্ষে, প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(অ) বাজারে নিয়মিত বিদ্যমান এইরূপ প্রমিত মানের স্বল্প মূল্যের সহজলভ্য পণ্য বা ভৌত সেবা ক্রয়; বা

(আ) জন-উপযোগমূলক সরকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ওয়ার্কশপে রক্ষণাবেক্ষণ বা জরুরী মেরামত কাজের জন্য জরুরী ভিত্তিতে আবশ্যক পণ্যদ্রব্য ক্রয়; বা

(ই) সরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রক্রিয়াজাতকরণ ও উত্পাদন কারখানার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য ক্রয় ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন পদ্ধতিতে ক্রয় করা হইলে সেই পদ্ধতি ব্যবহারের কারণসমূহ ক্রয়কারী যথাযথভাবে নথিতে লিপিবদ্ধক্রমে সংরক্ষণ করিবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত পদ্ধতিসমূহের রূপরেখা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

অংশ-২: আন্তর্জাতিক ক্রয়

৩৩৷ পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে উন্মুক্ত পদ্ধতির প্রয়োগ

পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ে যেইক্ষেত্রে ক্রয়কারী কর্তৃক দেশের অভ্যন্তরে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহবানের মাধ্যমে উহা ক্রয় করা সম্ভবপর নয় এবং বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ ব্যতিরেকে আন্তর্জাতিক কার্যকর প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় মর্মে ক্রয়কারীর নিকট যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতীয়মান হয়, সেইক্ষেত্রে ক্রয়কারী এই আইনের তৃতীয় ও ষষ্ঠ অধ্যায়ের বিধান অনুসারে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, দরপত্রদাতাদের প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণের পর এবং নিম্নবর্ণিত শর্ত পরিপালন করিয়া আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করিবে, যথাঃ-

(ক) দরপত্র আহবানের বিজ্ঞপ্তি ইংরেজী ভাষায় প্রকাশ এবং এই আইনের ধারা ৪০ এর বিধানানুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রদান;

(খ) দরপত্র দলিলসমূহ ইংরেজী ভাষায় প্রণয়ন;

(গ) ক্রয়কারী দরপত্র দলিল প্রণয়নকালে নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করিবে, যথাঃ-

(অ) দরপত্র দাখিলের জন্য নির্ধারিত ন্যুনতম সময় প্রদান;

(আ) জাতীয় চাহিদার সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, আন্তর্জাতিক মান বা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বহুল ব্যবহৃত মানদন্ডের ভিত্তিতে কারিগরী বিনির্দেশ নির্ধারণ;

(ই) দরপত্রদাতাদেরকে দরপত্র জামানত ও কার্য-সম্পাদন জামানত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বহুল ব্যবহৃত মুদ্রায় বা মুদ্রাসমূহে উদ্ধৃত করিবার অনুমতি প্রদান;

(ঈ) স্থানীয় যোগান সংশ্লিষ্ট ব্যয় দরপত্রে টাকায় উদ্ধৃত করিবার জন্য দরপত্রদাতাকে নির্দেশ প্রদান;

(উ) চুক্তিপত্রে উল্লিখিত মুদ্রা বা মুদ্রাসমূহে চুক্তিমূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা;

(ঊ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যবহৃত শর্তাবলীর অনুরূপ চুক্তির সাধারণ ও বিশেষ শর্তাবলী নির্ধারণ;

(ঋ) দরপত্র দলিলে, পণ্যদ্রব্যের ক্ষেত্রে গন্তব্যস্থলে সরবরাহের জন্য উদ্ধৃত মূল্যের, শুল্ক ও কর বাদে, এবং কার্যের ক্ষেত্রে কাজের মূল্যের, শুল্ক ও করসহ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত হারে বাধ্যতামূলকভাবে দেশীয় অগ্রাধিকার প্রদানের ব্যবস্থা গহণ :

তবে শর্ত থাকে যে, দেশীয় অগ্রাধিকার প্রদানে শিথিলতার জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করিতে হইবে।

(ঋঋ) দফা (ঋ) অনুসারে অগ্রাধিকার প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য–

(অ) সংশিস্নষ্ট পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে দরপত্রকে; এবং

(আ) কার্যের ক্ষেত্রে দরপত্র দাতাকে নির্ধারিত শর্ত পূরণ;

(এ) যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় অংশীদারিত্ব উত্সাহিত করা, কিন্তু উহা বাধ্যতামূলক শর্ত হিসাবে আরোপ না করা;

(ঐ) বৃহত্ বা জটিল কাজ সরবরাহ ও সংস্থাপনের চুক্তির ক্ষেত্রে বিরোধ নিষ্পত্তির বিকল্প পদ্ধতিসমূহ প্রয়োগঃ

তবে শর্ত থাকে যে, বিরোধ চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দরপত্র দলিলে বর্ণিত আন্তর্জাতিক সালিস-নিষ্পত্তি পদ্ধতি প্রযোজ্য হইবে ৷

৩৪৷ পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে  দুই পর্যায়, কোটেশন ও অন্যান্য পদ্ধতির প্রয়োগ

(১) পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত অবস্থার উদ্ভব হইলে দুই পর্যায়বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) ধারা ৩২(গ) এর বিধান অনুসারে যে সকল কারণে উক্ত পদ্ধতি প্রয়োগযোগ্য;

(খ) দেশের অভ্যন্তরে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহবানের মাধ্যমে উহা ক্রয় করা সম্ভব নয় বলিয়া ক্রয়কারীর নিকট যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতীয়মান হইলে;

(গ) বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ ব্যতিরেকে আন্তর্জাতিক কার্যকর প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় মর্মে ক্রয়কারীর নিকট যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতীয়মান হইলে ৷

(১ক) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত দুই পর্যায়বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগযোগ্য না হইলে এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে।

(২) কোন একটি বিশেষ সময়ের চাহিদা ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিবেচনায় আন্তর্জাতিক বাজার হইতে বিভাজ্য পণ্যসামগ্রী অধিক পরিমাণে ক্রয় করা আবশ্যক হইলে, নিম্নরূপ প্রক্রিয়া অনুসরণ করিয়া কোটেশন পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে উহা ক্রয় করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) অনুকূল বাজারের সুযোগ গ্রহণের লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী সংগৃহীতব্য মোট পণ্যের পরিমাণ প্রয়োজনের নিরিখে যুক্তিসংগতভাবে কয়েকটি প্যাকেজে বিভক্ত করিয়া একাধিক চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে উহা ক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা;

(খ) ক্রয়কারী কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়ের জন্য যোগ্য দরপত্রদাতাগণের তালিকা প্রণয়ন করিয়া চাহিদার নিরিখে নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাহাদেরকে, কোন একটি বিশেষ সময়ে বা পণ্য জাহাজীকরণের পূর্বে, বিদ্যমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সহিত সংগতি রাখিয়া সংশ্লিষ্ট পণ্যের দর উদ্ধৃত করিবার জন্য আহ্বান করা;

(গ) দরপত্রদাতাগণকে পণ্য হ্যান্ডলিং ব্যয় বা পরিবহণ ব্যয় এবং ক্রয়কারী কর্তৃক নির্ধারিত অন্যান্য শর্তসাপেক্ষে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হইতে আহবান করা;

(ঘ) দরপত্র দাখিলের জন্য এবং উহার বৈধতার মেয়াদের ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত সময়সীমা নির্ধারণপূর্বক কোটেশন আহবান করা ৷

(৩) উপ-ধারা (১), (১ক) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ক্রয়কারী বিদেশী সরকার বা সংস্থা কর্তৃক প্রদেয় কোন ঋণ, ক্রেডিট বা অনুদানের মাধ্যমে অর্থায়িত পণ্যসামগ্রীর ক্ষেত্রে পণ্য হ্যান্ডলিং ব্যয় বা পরিবহণ ব্যয়ের জন্য দরপত্র দাখিল এবং উহার বৈধতার মেয়াদের ক্ষেত্রে, সংক্ষিপ্ত সময়সীমা নির্ধারণপূর্বক দরদাতাগণকে দরপত্রে অংশগ্রহণের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হইতে আহবান জানাইতে পারিবে ৷

(৪) বিশেষায়িত প্রকৃতির পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা, যাহা কেবল সীমিত সংখ্যক সরবরাহকারী বা ঠিকাদারগণের নিকট হতে লভ্য হইলে আন্তর্জাতিক সীমিত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে ৷

(৫) কারিগরী কারণে পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য ও ভৌত সেবা সরবরাহের জন্য কেবল একজন দরপত্রদাতা থাকিলে বা নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে, মূল সরবরাহকারী কর্তৃক পণ্যের অতিরিক্ত সরবরাহ মূল ঠিকাদার কর্তৃক অতিরিক্ত কার্যসম্পাদন বা মূল সরবরাহকারী বা ঠিকাদারের মাধ্যমে বর্ধিত সেবা ক্রয় করিবার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে ৷

(৬) উপ-ধারা (১), (১ক), (২), (৪) এবং (৫) এ উল্লিখিত পদ্ধতির রূপরেখা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

অংশ-৩: ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি, ইত্যাদি

৩৫৷ দূতাবাস এবং বিশেষ ক্ষেত্রে জাতীয় পতাকাবাহী বাহনের জন্য ক্রয়

(১) বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস, হাইকমিশন, বা মিশনসমূহ প্রমিতমানের স্বল্পমূল্যের সহজলভ্য পণ্য এবং অপ্রত্যাশিত জরুরী ভৌত সেবা নির্ধারিত মূল্যসীমা সাপেক্ষে, ধারা ৩২ (ঘ) এ উল্লিখিত কোটেশন প্রদানের অনুরোধ জ্ঞাপন পদ্ধতি প্রয়োগ করিয়া ক্রয় করিতে পারিবে ৷

(২) বাংলাদেশের সীমানার বাহিরে অবস্থানকালীন কোন জাতীয় পতাকাবাহী বাহন জ্বালানী বা খুচরা যন্ত্রাংশ বা জরুরী মেরামতের প্রয়োজনে অগ্রিম পরিকল্পনা করা সম্ভব না হইলে বা জরুরী ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বাহনটি পুনঃব্যবহার উপযোগী করা আবশ্যক হইলে, জ্বালানী বা খুচরা যন্ত্রাংশ সংগ্রহ বা কোন জরুরী মেরামত কাজের জন্য ধারা ৩২(খ) তে উল্লিখিত সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি ব্যবহার করিয়া ক্রয় করা যাইবে ৷

৩৬৷ ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি

(১) ক্রয়কারীর যদি নির্দিষ্ট সময় অন্তর যথেষ্ট পরিমাণে আবশ্যক সচরাচর ব্যবহৃত সামগ্রী ক্রয়ের প্রয়োজন হয় অথবা আবর্তক কোন ভৌত সেবা ক্রয়ের প্রয়োজন হয়, তাহা হইলে ক্রয়কারী এক বা একাধিক সরবরাহকারী বা দরপত্রদাতাগণের সহিত কোন উন্মুক্ত বা সীমিত দরপত্র পদ্ধতির মধ্যে যে কোন একটি পদ্ধতি প্রয়োগ করিয়া ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে ৷

(২) কোন ক্রয়কারী, অন্য কোন ক্রয়কারী কর্তৃক ইতোমধ্যে সম্পাদিত ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির আওতায় একই ধরণের পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের প্রয়োজন হইলে, উক্ত সম্পাদিত চুক্তির আওতায় উক্ত ক্রয় সম্পাদন করিতে পারিবে ৷

(৩) ক্রয়কারী ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির আওতায় কোন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত নির্দেশাবলী ও আদর্শ দলিল, প্রয়োজনীয় অভিযোজনপূর্বক, ব্যবহার করিবে ৷

অংশ-৩: ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি, ইত্যাদি

চতুর্থ অধ্যায়ঃ পণ্য, কার্য, ইত্যাদির ক্রয় পদ্ধতি এবং উহার প্রয়োগ (ধারা ৩১-৩৬)

৩১৷ পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির প্রয়োগ

(১) ক্রয়কারী পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে অগ্রে বিবেচ্য হিসাবে নিম্নবর্ণিত শর্ত পরিপালনপূর্বক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করিবে, যথাঃ-

(ক) প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, প্রাক্‌-যোগ্যতা নির্ধারণ;
(খ) দরপত্রদাতাগণকে বৈষম্যহীন ও সম-শর্তাধীনে প্রতিযোগিতার সুযোগ প্রদান;
(গ) ধারা ৪০ এ বর্ণিত বিধান অনুসরণে বিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান;
(ঘ) দরপত্র দাখিলের জন্য এবং পণ্য সরবরাহ, কার্য সম্পাদনের জন্য নির্ধারিত ন্যুনতম সময় প্রদান;
(ঙ) সর্বনিম্ন মূল্যায়িত রেসপনসিভ দরপত্রদাতার সহিত চুক্তি সম্পাদন ৷

(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত পদ্ধতির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

(৩) উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির অধীন অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন দরপত্রদাতা কতৃক দরপত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় (Official cost estimate) ১০% (শতকরা দশ ভাগ) এর অধিক কম বা অধিক বেশি দর উদ্ধৃত করা হইলে উক্ত দরপত্র বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে।

(৪) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত দরপত্র মূল্য সমতার ক্ষেত্রে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন ও কৃতকার্য দরদাতা নির্বাচন করিতে হইবে, কিন্তু লটারির মাধ্যমে কৃতকার্য দরদাতা নির্বাচন করা যাইবে না।

৩২৷ পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ে অন্যান্য ক্রয় পদ্ধতির প্রয়োগ

(১) ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে ধারা ৩১ এ উল্লিখিত পদ্ধতি ব্যতীত অন্য কোন পদ্ধতিতে পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে, কারিগরী অথবা অর্থনৈতিক কারণ যুক্তিযুক্ত বিবেচিত হইলে ক্রয়কারী নিম্নবর্ণিত যে কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করিতে পারিবে, যথাঃ-

(ক) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে সীমিত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(অ) বিশেষায়িত প্রকৃতির পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা, যাহা কেবল সীমিত সংখ্যাক সরবরাহকারী বা ঠিকাদারগণের নিকট হইতে লভ্য হয়;

(আ) খুচরা যন্ত্রাংশের মজুদ এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় হ্রাস করিবার উদ্দেশ্যে, কোন ব্রান্ডের নির্দিষ্ট মান প্রমিতকরণ সংক্রান্ত সরকারী নীতি থাকিলে;

(ই) অধিক সংখ্যাক দরপত্র গ্রহণ ও মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ও ব্যয় চুক্তি মূল্যের তুলনায় অসমঞ্জস হয়ঃ

তবে শর্ত থাকে যে, দফা (অ) এবং (আ) এর ক্ষেত্রে কোন মূল্যসীমা প্রযোজ্য হইবে না এবং সকল সরবরাহকারী বা ঠিকাদারদেরকে দরপত্র দাখিলের জন্য আহ্বান জানাইতে হইবে এবং দফা (ই) এর ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত সরবরাহকারী বা ঠিকাদারদের মাধ্যমে নির্ধারিত মূল্যসীমা সাপেক্ষে প্রযোজ্য হইবে;

(খ) সম্ভাব্য প্রতিযোগিতা এড়াইবার জন্য বা দরপত্রদাতাদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করিতে পারে এমন কোন পন্থা অবলম্বন না করিয়া নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(অ) কারিগরী কারণে পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য ও ভৌত সেবা সরবরাহের জন্য কেবল একজন দরপত্রদাতা থাকিলে;

(আ) দারিদ্র্য নিরসনের উদ্দেশ্যমাত্রিক প্রকল্প দলিলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সহিত সরাসরি চুক্তি সম্পাদনের ব্যবস্থা থাকিলে;

(ই) নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে, মূল সরবরাহকারী কর্তৃক পণ্যের অতিরিক্ত সরবরাহ, মূল ঠিকাদার কর্তৃক অতিরিক্ত কার্যসম্পাদন বা মূল সরবরাহকারী বা ঠিকাদারের মাধ্যমে বর্ধিত সেবা ক্রয় করা হইলে;

(ঈ) ব্যতিক্রমী সুবিধাজনক শর্তে পণ্য ক্রয়, যদি উক্ত পণ্য সাম্প্রতিক অব্যবহৃত এবং উত্পাদনকারীর গ্যারান্টিযুক্ত হয়, অথবা, বাজার শর্তে পচনশীল পণ্যের ক্রয়, বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ক্রয় করা হইলে;

(উ) সরকার ভিন্নরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করিলে, বিশে’ষ ক্ষেত্রে সরকারী মালিকানাধীন কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কারখানা হইতে সরকারের নিজস্ব অর্থে পণ্য ক্রয় করা হইলে;

(ঊ) নির্ধারিত অর্থের মধ্যে অতি জরুরী বা প্রয়োজনীয় পণ্য, কার্য, সেবা ইত্যাদি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৷

(গ) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে দুই পর্যায়বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যদি-

(অ) বৃহদায়তন ও জটিল প্রকল্পের ক্ষেত্রে, ক্রয় প্রক্রিয়ার প্রারম্ভে ক্রয়কারী কর্তৃক ক্রয়ের জন্য নির্দিষ্ট বস্তুর পূর্ণাংগ কারিগরী বিনির্দেশ প্রস্তুত করা সম্ভব না হয়; বা

(আ) দ্রুত বিকাশশীল কোন শিল্পে বিকল্প কারিগরী সমাধান লভ্য হয়;

(গগ) দফা (গ) এ উল্লেখিত দুই পর্যায়বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রযোজ্য না হইলে এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে;

(ঘ) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে কোটেশন প্রদানের অনুরোধ জ্ঞাপন পদ্ধতি, নির্ধারিত মূল্যসীমা সাপেক্ষে, প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(অ) বাজারে নিয়মিত বিদ্যমান এইরূপ প্রমিত মানের স্বল্প মূল্যের সহজলভ্য পণ্য বা ভৌত সেবা ক্রয়; বা

(আ) জন-উপযোগমূলক সরকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ওয়ার্কশপে রক্ষণাবেক্ষণ বা জরুরী মেরামত কাজের জন্য জরুরী ভিত্তিতে আবশ্যক পণ্যদ্রব্য ক্রয়; বা

(ই) সরকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রক্রিয়াজাতকরণ ও উত্পাদন কারখানার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য ক্রয় ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন পদ্ধতিতে ক্রয় করা হইলে সেই পদ্ধতি ব্যবহারের কারণসমূহ ক্রয়কারী যথাযথভাবে নথিতে লিপিবদ্ধক্রমে সংরক্ষণ করিবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত পদ্ধতিসমূহের রূপরেখা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

অংশ-২: আন্তর্জাতিক ক্রয়

৩৩৷ পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে উন্মুক্ত পদ্ধতির প্রয়োগ

পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ে যেইক্ষেত্রে ক্রয়কারী কর্তৃক দেশের অভ্যন্তরে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহবানের মাধ্যমে উহা ক্রয় করা সম্ভবপর নয় এবং বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ ব্যতিরেকে আন্তর্জাতিক কার্যকর প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় মর্মে ক্রয়কারীর নিকট যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতীয়মান হয়, সেইক্ষেত্রে ক্রয়কারী এই আইনের তৃতীয় ও ষষ্ঠ অধ্যায়ের বিধান অনুসারে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, দরপত্রদাতাদের প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণের পর এবং নিম্নবর্ণিত শর্ত পরিপালন করিয়া আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করিবে, যথাঃ-

(ক) দরপত্র আহবানের বিজ্ঞপ্তি ইংরেজী ভাষায় প্রকাশ এবং এই আইনের ধারা ৪০ এর বিধানানুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রদান;

(খ) দরপত্র দলিলসমূহ ইংরেজী ভাষায় প্রণয়ন;

(গ) ক্রয়কারী দরপত্র দলিল প্রণয়নকালে নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করিবে, যথাঃ-

(অ) দরপত্র দাখিলের জন্য নির্ধারিত ন্যুনতম সময় প্রদান;

(আ) জাতীয় চাহিদার সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, আন্তর্জাতিক মান বা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বহুল ব্যবহৃত মানদন্ডের ভিত্তিতে কারিগরী বিনির্দেশ নির্ধারণ;

(ই) দরপত্রদাতাদেরকে দরপত্র জামানত ও কার্য-সম্পাদন জামানত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বহুল ব্যবহৃত মুদ্রায় বা মুদ্রাসমূহে উদ্ধৃত করিবার অনুমতি প্রদান;

(ঈ) স্থানীয় যোগান সংশ্লিষ্ট ব্যয় দরপত্রে টাকায় উদ্ধৃত করিবার জন্য দরপত্রদাতাকে নির্দেশ প্রদান;

(উ) চুক্তিপত্রে উল্লিখিত মুদ্রা বা মুদ্রাসমূহে চুক্তিমূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা;

(ঊ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ব্যবহৃত শর্তাবলীর অনুরূপ চুক্তির সাধারণ ও বিশেষ শর্তাবলী নির্ধারণ;

(ঋ) দরপত্র দলিলে, পণ্যদ্রব্যের ক্ষেত্রে গন্তব্যস্থলে সরবরাহের জন্য উদ্ধৃত মূল্যের, শুল্ক ও কর বাদে, এবং কার্যের ক্ষেত্রে কাজের মূল্যের, শুল্ক ও করসহ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত হারে বাধ্যতামূলকভাবে দেশীয় অগ্রাধিকার প্রদানের ব্যবস্থা গহণ :

তবে শর্ত থাকে যে, দেশীয় অগ্রাধিকার প্রদানে শিথিলতার জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করিতে হইবে।

(ঋঋ) দফা (ঋ) অনুসারে অগ্রাধিকার প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য–

(অ) সংশিস্নষ্ট পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে দরপত্রকে; এবং

(আ) কার্যের ক্ষেত্রে দরপত্র দাতাকে নির্ধারিত শর্ত পূরণ;

(এ) যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় অংশীদারিত্ব উত্সাহিত করা, কিন্তু উহা বাধ্যতামূলক শর্ত হিসাবে আরোপ না করা;

(ঐ) বৃহত্ বা জটিল কাজ সরবরাহ ও সংস্থাপনের চুক্তির ক্ষেত্রে বিরোধ নিষ্পত্তির বিকল্প পদ্ধতিসমূহ প্রয়োগঃ

তবে শর্ত থাকে যে, বিরোধ চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দরপত্র দলিলে বর্ণিত আন্তর্জাতিক সালিস-নিষ্পত্তি পদ্ধতি প্রযোজ্য হইবে ৷

৩৪৷ পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে  দুই পর্যায়, কোটেশন ও অন্যান্য পদ্ধতির প্রয়োগ

(১) পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত অবস্থার উদ্ভব হইলে দুই পর্যায়বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) ধারা ৩২(গ) এর বিধান অনুসারে যে সকল কারণে উক্ত পদ্ধতি প্রয়োগযোগ্য;

(খ) দেশের অভ্যন্তরে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহবানের মাধ্যমে উহা ক্রয় করা সম্ভব নয় বলিয়া ক্রয়কারীর নিকট যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতীয়মান হইলে;

(গ) বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ ব্যতিরেকে আন্তর্জাতিক কার্যকর প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় মর্মে ক্রয়কারীর নিকট যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতীয়মান হইলে ৷

(১ক) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত দুই পর্যায়বিশিষ্ট দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগযোগ্য না হইলে এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে।

(২) কোন একটি বিশেষ সময়ের চাহিদা ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিবেচনায় আন্তর্জাতিক বাজার হইতে বিভাজ্য পণ্যসামগ্রী অধিক পরিমাণে ক্রয় করা আবশ্যক হইলে, নিম্নরূপ প্রক্রিয়া অনুসরণ করিয়া কোটেশন পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে উহা ক্রয় করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) অনুকূল বাজারের সুযোগ গ্রহণের লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী সংগৃহীতব্য মোট পণ্যের পরিমাণ প্রয়োজনের নিরিখে যুক্তিসংগতভাবে কয়েকটি প্যাকেজে বিভক্ত করিয়া একাধিক চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে উহা ক্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা;

(খ) ক্রয়কারী কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়ের জন্য যোগ্য দরপত্রদাতাগণের তালিকা প্রণয়ন করিয়া চাহিদার নিরিখে নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাহাদেরকে, কোন একটি বিশেষ সময়ে বা পণ্য জাহাজীকরণের পূর্বে, বিদ্যমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সহিত সংগতি রাখিয়া সংশ্লিষ্ট পণ্যের দর উদ্ধৃত করিবার জন্য আহ্বান করা;

(গ) দরপত্রদাতাগণকে পণ্য হ্যান্ডলিং ব্যয় বা পরিবহণ ব্যয় এবং ক্রয়কারী কর্তৃক নির্ধারিত অন্যান্য শর্তসাপেক্ষে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হইতে আহবান করা;

(ঘ) দরপত্র দাখিলের জন্য এবং উহার বৈধতার মেয়াদের ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত সময়সীমা নির্ধারণপূর্বক কোটেশন আহবান করা ৷

(৩) উপ-ধারা (১), (১ক) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ক্রয়কারী বিদেশী সরকার বা সংস্থা কর্তৃক প্রদেয় কোন ঋণ, ক্রেডিট বা অনুদানের মাধ্যমে অর্থায়িত পণ্যসামগ্রীর ক্ষেত্রে পণ্য হ্যান্ডলিং ব্যয় বা পরিবহণ ব্যয়ের জন্য দরপত্র দাখিল এবং উহার বৈধতার মেয়াদের ক্ষেত্রে, সংক্ষিপ্ত সময়সীমা নির্ধারণপূর্বক দরদাতাগণকে দরপত্রে অংশগ্রহণের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হইতে আহবান জানাইতে পারিবে ৷

(৪) বিশেষায়িত প্রকৃতির পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা, যাহা কেবল সীমিত সংখ্যক সরবরাহকারী বা ঠিকাদারগণের নিকট হতে লভ্য হইলে আন্তর্জাতিক সীমিত দরপত্র পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে ৷

(৫) কারিগরী কারণে পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য ও ভৌত সেবা সরবরাহের জন্য কেবল একজন দরপত্রদাতা থাকিলে বা নির্ধারিত শর্তসাপেক্ষে, মূল সরবরাহকারী কর্তৃক পণ্যের অতিরিক্ত সরবরাহ মূল ঠিকাদার কর্তৃক অতিরিক্ত কার্যসম্পাদন বা মূল সরবরাহকারী বা ঠিকাদারের মাধ্যমে বর্ধিত সেবা ক্রয় করিবার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে ৷

(৬) উপ-ধারা (১), (১ক), (২), (৪) এবং (৫) এ উল্লিখিত পদ্ধতির রূপরেখা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

অংশ-৩: ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি, ইত্যাদি

৩৫৷ দূতাবাস এবং বিশেষ ক্ষেত্রে জাতীয় পতাকাবাহী বাহনের জন্য ক্রয়

(১) বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস, হাইকমিশন, বা মিশনসমূহ প্রমিতমানের স্বল্পমূল্যের সহজলভ্য পণ্য এবং অপ্রত্যাশিত জরুরী ভৌত সেবা নির্ধারিত মূল্যসীমা সাপেক্ষে, ধারা ৩২ (ঘ) এ উল্লিখিত কোটেশন প্রদানের অনুরোধ জ্ঞাপন পদ্ধতি প্রয়োগ করিয়া ক্রয় করিতে পারিবে ৷

(২) বাংলাদেশের সীমানার বাহিরে অবস্থানকালীন কোন জাতীয় পতাকাবাহী বাহন জ্বালানী বা খুচরা যন্ত্রাংশ বা জরুরী মেরামতের প্রয়োজনে অগ্রিম পরিকল্পনা করা সম্ভব না হইলে বা জরুরী ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বাহনটি পুনঃব্যবহার উপযোগী করা আবশ্যক হইলে, জ্বালানী বা খুচরা যন্ত্রাংশ সংগ্রহ বা কোন জরুরী মেরামত কাজের জন্য ধারা ৩২(খ) তে উল্লিখিত সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি ব্যবহার করিয়া ক্রয় করা যাইবে ৷

৩৬৷ ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি

(১) ক্রয়কারীর যদি নির্দিষ্ট সময় অন্তর যথেষ্ট পরিমাণে আবশ্যক সচরাচর ব্যবহৃত সামগ্রী ক্রয়ের প্রয়োজন হয় অথবা আবর্তক কোন ভৌত সেবা ক্রয়ের প্রয়োজন হয়, তাহা হইলে ক্রয়কারী এক বা একাধিক সরবরাহকারী বা দরপত্রদাতাগণের সহিত কোন উন্মুক্ত বা সীমিত দরপত্র পদ্ধতির মধ্যে যে কোন একটি পদ্ধতি প্রয়োগ করিয়া ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি সম্পাদন করিতে পারিবে ৷

(২) কোন ক্রয়কারী, অন্য কোন ক্রয়কারী কর্তৃক ইতোমধ্যে সম্পাদিত ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির আওতায় একই ধরণের পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের প্রয়োজন হইলে, উক্ত সম্পাদিত চুক্তির আওতায় উক্ত ক্রয় সম্পাদন করিতে পারিবে ৷

(৩) ক্রয়কারী ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির আওতায় কোন পণ্য ও সংশ্লিষ্ট সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক, সময় সময়, জারীকৃত নির্দেশাবলী ও আদর্শ দলিল, প্রয়োজনীয় অভিযোজনপূর্বক, ব্যবহার করিবে ৷

পঞ্চম অধ্যায়ঃ বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয় পদ্ধতি ও উহার প্রয়োগ

অংশ-১: আভ্যন্তরীণ ক্রয়

পঞ্চম অধ্যায়: বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয় পদ্ধতি ও উহার প্রয়োগ (ধারা ৩৭-৩৯)

অংশ-১: আভ্যন্তরীণ ক্রয়

৩৭৷ বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ে অনুসরণীয় পদ্ধতি

ক্রয়কারী, বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ের জন্য বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা প্রদানে আগ্রহী আবেদনকারীগণের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রণয়নপূর্বক নিম্নবর্ণিত পদ্ধতির যে কোন একটি পদ্ধতি অগ্রে বিবেচ্য হিসাবে অনুসরণ করিবে, যথাঃ-

(ক) গুণগত মান ও ব্যয়ভিত্তিক নির্বাচনের ক্ষেত্রে, সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত পরামর্শকদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেবার গুণগত মান ও উক্ত সেবার জন্য সম্ভাব্য ব্যয়ের বিষয়টি বিচক্ষণতার সহিত বিবেচনা করিয়া পরামর্শক নির্বাচন; বা
(খ) নির্দিষ্ট বাজেটের অধীন নির্বাচনের ক্ষেত্রে, সাধারণ ও সুনির্দিষ্ট প্রকৃতির সেবার জন্য প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিলে উল্লিখিত বাজেট বরাদ্দের বিষয় বিবেচনা করিয়া পরামর্শক নির্বাচন ৷

৩৮৷ বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ে অন্যান্য পদ্ধতির প্রয়োগ

(১) ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে ধারা ৩৭ এ উল্লিখিত পদ্ধতি ব্যতীত বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত যে কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) নির্ধারিত মূল্যসীমার মধ্যে সম্পাদনীয় প্রমিতমানের বা রুটিন প্রকৃতির সেবার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ব্যয়ভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি;
(খ) যেইক্ষেত্রে সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও পরিচালনায় সমাজের চাহিদা, স্থানীয় বিষয়াদি ও সামাজিক অংশগ্রহণ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান মুখ্য বিবেচ্য সেইক্ষেত্রে সমাজসেবামূলক সংগঠন নির্বাচন পদ্ধতি;
(গ) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে একক উত্সভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি-

(ক) চলমান বা সদ্যসমাপ্ত কাজের ধারাবাহিকতায় আবশ্যক হইলে;
(খ) স্বল্প ব্যয়ের ক্ষুদ্র কাজ হইলে;
(গ) জরুরী অবস্থায় দ্রুত নির্বাচন আবশ্যক হইলে;
(ঘ) ক্ষেত্রবিশেষে সংশ্লিষ্ট কার্যসম্পাদনের জন্য মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অথবা বিরল অভিজ্ঞতা থাকিলে;
(ঙ) কোন বিপর্যয়কর ঘটনাজনিত কারণে সেবার জরুরী প্রয়োজন হইলে;
(ঘ) যেইক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাই মুখ্য এবং দলগত এবং বাহিরের অন্য কোন পেশাগত সহায়তা আবশ্যক নহে, সেইক্ষেত্রে ব্যক্তিভিত্তিক পরামর্শক নির্বাচন পদ্ধতি;
(ঙ) নির্ধারিত মূল্যসীমার মধ্যে স্বল্পব্যয় সাপেক্ষে কাজ, যাহার জন্য প্রতিযোগিতামূলক প্রস্তাব প্রণয়ন ও মূল্যায়ন নহে, এর ক্ষেত্রে পরামর্শকের যোগ্যতাভিত্তিক পদ্ধতি;
(চ) যেইক্ষেত্রে সফল আবেদনকারী নির্বাচনের জন্য শুধু কারিগরী উত্কর্ষ এবং সৃজনশীলতা মুখ্য বিবেচ্য, সেইক্ষেত্রে ডিজাইন প্রতিযোগিতাভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন পদ্ধতিতে ক্রয় করা হইলে সেই পদ্ধতি ব্যবহারের কারণসমূহ ক্রয়কারী যথাযথভাবে নথিতে লিপিবদ্ধক্রমে সংরক্ষণ করিবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত পদ্ধতির রূপরেখা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

অংশ-২: আন্তর্জাতিক ক্রয়

৩৯৷ বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ে আন্তর্জাতিক পরামর্শক নির্বাচন

(১) স্থানীয় কোন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা ও কুশলতা নাই বলিয়া কোন ক্রয়কারীর নিকট যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতীয়মান হইলে, তিনি এই আইনের তৃতীয় ও ষষ্ঠ অধ্যায় অনুসারে এবং ধারা ৩৭ এবং ৩৮ এ উল্লিখিত পদ্ধতির যে কোন একটি পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক, এবং নিম্নবর্ণিত শর্তাদি পূরণক্রমে আন্তর্জাতিক পরামর্শক নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন, যথাঃ-

(ক) আগ্রহব্যক্তকরণের অনুরোধসম্বলিত বিজ্ঞপ্তি ইংরেজী ভাষায় প্রণীত হইতে হইবে এবং এই আইনের ধারা ৪০ এর বিধান অনুসারে উহা প্রচারের ব্যবস্থা করিতে হইবে;
(খ) প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধসম্বলিত দলিল ইংরেজী ভাষায় প্রণীত হইতে হইবে; এবং
(গ) নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ বিবেচনাক্রমে প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধসম্বলিত দলিল প্রস্তুত করিতে হইবে-

(অ) প্রস্তাব দাখিলের জন্য নির্ধারিত ন্যুনতম সময় প্রদান করিতে হইবে;
(আ) জাতীয় প্রয়োজনের সহিত সামঞ্জস্য রক্ষা করিয়া আন্তর্জাতিক মান অথবা আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত মানদন্ডের ভিত্তিতে পরামর্শকের কার্যপরিধি নির্ধারণ করিতে হইবে;
(ই) পরামর্শকগণকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত মুদ্রায় বা মুদ্রাসমূহে প্রস্তাব দাখিলের সুযোগ প্রদান করিতে হইবে;
(ঈ) স্থানীয় যোগান সংশ্লিষ্ট ব্যয় টাকায় উদ্ধৃত করিবার জন্য পরামর্শকগণকে নির্দেশ প্রদান করিতে হইবে;
(এ) প্রস্তাবে বর্ণিত মুদ্রায় বা মুদ্রাসমূহে প্রাপ্য অর্থ পরিশোধ করিতে হইবে;
(ঐ) চুক্তির সাধারণ এবং বিশেষ শর্তাবলী হইবে আন্তর্জাতিক বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবার ক্ষেত্রে প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধসম্বলিত দলিলে সাধারণ-ভাবে ব্যবহৃত শর্তাবলীর অনুরূপ;
(ও) বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিকল্প ব্যবস্থার বিধান থাকিবে ৷ এই ক্ষেত্রে প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধসম্বলিত দলিলে বর্ণিত আন্তর্জাতিক সালিস নিষ্পত্তির বিধান থাকিবে ৷

(২) এই ধারার অধীন সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় অংশীদারিত্ব উৎসাহিত করা যাইবে, কিন্তু উহা বাধ্যতামূলক শর্ত হিসাবে আরোপ করা যাইবে না ৷

অংশ-২: আন্তর্জাতিক ক্রয়

পঞ্চম অধ্যায়: বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয় পদ্ধতি ও উহার প্রয়োগ (ধারা ৩৭-৩৯)

অংশ-১: আভ্যন্তরীণ ক্রয়

৩৭৷ বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ে অনুসরণীয় পদ্ধতি

ক্রয়কারী, বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ের জন্য বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা প্রদানে আগ্রহী আবেদনকারীগণের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রণয়নপূর্বক নিম্নবর্ণিত পদ্ধতির যে কোন একটি পদ্ধতি অগ্রে বিবেচ্য হিসাবে অনুসরণ করিবে, যথাঃ-

(ক) গুণগত মান ও ব্যয়ভিত্তিক নির্বাচনের ক্ষেত্রে, সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত পরামর্শকদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেবার গুণগত মান ও উক্ত সেবার জন্য সম্ভাব্য ব্যয়ের বিষয়টি বিচক্ষণতার সহিত বিবেচনা করিয়া পরামর্শক নির্বাচন; বা
(খ) নির্দিষ্ট বাজেটের অধীন নির্বাচনের ক্ষেত্রে, সাধারণ ও সুনির্দিষ্ট প্রকৃতির সেবার জন্য প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিলে উল্লিখিত বাজেট বরাদ্দের বিষয় বিবেচনা করিয়া পরামর্শক নির্বাচন ৷

৩৮৷ বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ে অন্যান্য পদ্ধতির প্রয়োগ

(১) ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে ধারা ৩৭ এ উল্লিখিত পদ্ধতি ব্যতীত বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত যে কোন পদ্ধতি প্রয়োগ করা যাইবে, যথাঃ-

(ক) নির্ধারিত মূল্যসীমার মধ্যে সম্পাদনীয় প্রমিতমানের বা রুটিন প্রকৃতির সেবার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ব্যয়ভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি;
(খ) যেইক্ষেত্রে সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও পরিচালনায় সমাজের চাহিদা, স্থানীয় বিষয়াদি ও সামাজিক অংশগ্রহণ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান মুখ্য বিবেচ্য সেইক্ষেত্রে সমাজসেবামূলক সংগঠন নির্বাচন পদ্ধতি;
(গ) নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রে একক উত্সভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি-

(ক) চলমান বা সদ্যসমাপ্ত কাজের ধারাবাহিকতায় আবশ্যক হইলে;
(খ) স্বল্প ব্যয়ের ক্ষুদ্র কাজ হইলে;
(গ) জরুরী অবস্থায় দ্রুত নির্বাচন আবশ্যক হইলে;
(ঘ) ক্ষেত্রবিশেষে সংশ্লিষ্ট কার্যসম্পাদনের জন্য মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অথবা বিরল অভিজ্ঞতা থাকিলে;
(ঙ) কোন বিপর্যয়কর ঘটনাজনিত কারণে সেবার জরুরী প্রয়োজন হইলে;
(ঘ) যেইক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাই মুখ্য এবং দলগত এবং বাহিরের অন্য কোন পেশাগত সহায়তা আবশ্যক নহে, সেইক্ষেত্রে ব্যক্তিভিত্তিক পরামর্শক নির্বাচন পদ্ধতি;
(ঙ) নির্ধারিত মূল্যসীমার মধ্যে স্বল্পব্যয় সাপেক্ষে কাজ, যাহার জন্য প্রতিযোগিতামূলক প্রস্তাব প্রণয়ন ও মূল্যায়ন নহে, এর ক্ষেত্রে পরামর্শকের যোগ্যতাভিত্তিক পদ্ধতি;
(চ) যেইক্ষেত্রে সফল আবেদনকারী নির্বাচনের জন্য শুধু কারিগরী উত্কর্ষ এবং সৃজনশীলতা মুখ্য বিবেচ্য, সেইক্ষেত্রে ডিজাইন প্রতিযোগিতাভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন পদ্ধতিতে ক্রয় করা হইলে সেই পদ্ধতি ব্যবহারের কারণসমূহ ক্রয়কারী যথাযথভাবে নথিতে লিপিবদ্ধক্রমে সংরক্ষণ করিবে ৷

(৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত পদ্ধতির রূপরেখা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া বিধি দ্বারা নির্ধারণ করা যাইবে ৷

অংশ-২: আন্তর্জাতিক ক্রয়

৩৯৷ বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ে আন্তর্জাতিক পরামর্শক নির্বাচন

(১) স্থানীয় কোন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা ও কুশলতা নাই বলিয়া কোন ক্রয়কারীর নিকট যুক্তিসঙ্গতভাবে প্রতীয়মান হইলে, তিনি এই আইনের তৃতীয় ও ষষ্ঠ অধ্যায় অনুসারে এবং ধারা ৩৭ এবং ৩৮ এ উল্লিখিত পদ্ধতির যে কোন একটি পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক, এবং নিম্নবর্ণিত শর্তাদি পূরণক্রমে আন্তর্জাতিক পরামর্শক নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন, যথাঃ-

(ক) আগ্রহব্যক্তকরণের অনুরোধসম্বলিত বিজ্ঞপ্তি ইংরেজী ভাষায় প্রণীত হইতে হইবে এবং এই আইনের ধারা ৪০ এর বিধান অনুসারে উহা প্রচারের ব্যবস্থা করিতে হইবে;
(খ) প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধসম্বলিত দলিল ইংরেজী ভাষায় প্রণীত হইতে হইবে; এবং
(গ) নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ বিবেচনাক্রমে প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধসম্বলিত দলিল প্রস্তুত করিতে হইবে-

(অ) প্রস্তাব দাখিলের জন্য নির্ধারিত ন্যুনতম সময় প্রদান করিতে হইবে;
(আ) জাতীয় প্রয়োজনের সহিত সামঞ্জস্য রক্ষা করিয়া আন্তর্জাতিক মান অথবা আন্তর্জাতিক পরামর্শক নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত মানদন্ডের ভিত্তিতে পরামর্শকের কার্যপরিধি নির্ধারণ করিতে হইবে;
(ই) পরামর্শকগণকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত মুদ্রায় বা মুদ্রাসমূহে প্রস্তাব দাখিলের সুযোগ প্রদান করিতে হইবে;
(ঈ) স্থানীয় যোগান সংশ্লিষ্ট ব্যয় টাকায় উদ্ধৃত করিবার জন্য পরামর্শকগণকে নির্দেশ প্রদান করিতে হইবে;
(এ) প্রস্তাবে বর্ণিত মুদ্রায় বা মুদ্রাসমূহে প্রাপ্য অর্থ পরিশোধ করিতে হইবে;
(ঐ) চুক্তির সাধারণ এবং বিশেষ শর্তাবলী হইবে আন্তর্জাতিক বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবার ক্ষেত্রে প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধসম্বলিত দলিলে সাধারণ-ভাবে ব্যবহৃত শর্তাবলীর অনুরূপ;
(ও) বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিকল্প ব্যবস্থার বিধান থাকিবে ৷ এই ক্ষেত্রে প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধসম্বলিত দলিলে বর্ণিত আন্তর্জাতিক সালিস নিষ্পত্তির বিধান থাকিবে ৷

(২) এই ধারার অধীন সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় অংশীদারিত্ব উৎসাহিত করা যাইবে, কিন্তু উহা বাধ্যতামূলক শর্ত হিসাবে আরোপ করা যাইবে না ৷

ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ ক্রয় প্রক্রিয়াকরণ

অংশ-১: বিজ্ঞাপন

ষষ্ঠ অধ্যায়: ক্রয় প্রক্রিয়াকরণ (ধারা ৪০-৬৩)

অংশ-১: বিজ্ঞাপন

৪০৷ বিজ্ঞাপন

(১) ক্রয়কারী প্রাক্‌-যোগ্যতা, দরপত্র এবং আগ্রহ ব্যক্তকরণের অনুরোধসম্বলিত বিজ্ঞাপন নির্ধারিত নমুনা ছকে প্রস্তুত করিবে ৷

(২) ক্রয়কারী, উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত বিজ্ঞাপন দেশে বহুল প্রচারিত কমপক্ষে একটি বাংলা এবং একটি ইংরেজী দৈনিক সংবাদপত্রে সরাসরি প্রকাশের ব্যবস্থা করিবে ৷

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখে যদি প্রকাশিত সংবাদপত্রের একাধিক সংস্করণ প্রকাশিত হয়, তাহা হইলে এইরূপ প্রত্যেক সংস্করণের প্রতিটি কপিতেই উক্ত বিজ্ঞাপন প্রকাশের ব্যবস্থা করিতে হইবে ৷

(৪) উপ-ধারা (২) এর বিধানের অতিরিক্ত ব্যবস্থা হিসাবে-

(ক) উক্তরূপ বিজ্ঞাপন ক্রয়কারীকে নিজস্ব ওয়েবসাইটে, যদি থাকে, প্রকাশ করিতে হইবে;
(খ) নির্ধারিত মূল্যসীমার ঊর্ধ্বের বিজ্ঞাপন সরকার কর্তৃক, সময় সময়, নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে প্রকাশের ব্যবস্থা করিতে হইবে ৷

(৫) যে ক্ষেত্রে কোন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের বিষয় আন্তর্জাতিক আবেদনকারী, দরপত্রদাতা বা পরামর্শকদের জন্য অবহিত করা হয়, সেইক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞাপন আন্তর্জাতিকভাবে বহুল প্রচারিত একটি ইংরেজী সংবাদপত্রে বা প্রকাশনায়, অথবা, ক্ষেত্রমত, জাতিসংঘের কোন প্রকাশনায় অথবা দেশে বা বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য মিশনসমূহে প্রকাশের ব্যবস্থা করিতে হইবে ৷

অংশ-২: পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ের জন্য প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণ

৪১৷ প্রাক-যোগ্যতা দলিল বিতরণ ও দাখিল

পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের জন্য সরবরাহকারী বা ঠিকাদার নির্বাচনের উদ্দেশ্যে ক্রয়কারী কর্তৃক প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে, ধারা ৪০ এর অধীন বিজ্ঞাপন জারীর পর কোন ব্যক্তি আবেদন করিতে আগ্রহী হইলে প্রাক-যোগ্যতা দলিলাদি ক্রয়কারীর নিকট হইতে তত্কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে সংগ্রহপূর্বক উহা যথাযথভাবে পূরণ করিয়া উক্ত দলিলে নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে দাখিল করিবে ৷

৪২৷ প্রাক-যোগ্যতার আবেদনপত্র উন্মুক্তকরণ

(১) ধারা ৪১ এর অধীন প্রাক-যোগ্যতার জন্য আবেদনপত্র দাখিলের সর্বশেষ সময় উত্তীর্ণের অব্যবহিত পর আবেদনপত্র উন্মুক্তকরণ ও উহাতে প্রদত্ত বিশদ তথ্য রেকর্ড করিবার উদ্দেশ্যে ক্রয়কারী দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটির সভা আহ্বান করিবে ৷

(২) দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি দরপত্র উন্মুক্তকরণের কাজ করিবার পর উহার রেকর্ড এবং দাখিলকৃত প্রাক-যোগ্যতার আবেদনপত্র মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির নিকট প্রেরণ করিবে ৷

৪৩৷ প্রাক-যোগ্যতার আবেদনত্র মূল্যায়ন ও তৎসম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ

(১) দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি, প্রাক্‌-যোগ্যতা দলিলে উল্লিখিত যোগ্যতার নির্ণায়কসমূহ প্রয়োগ করিয়া, প্রাপ্ত আবেদনপত্রসমূহ কৃতকার্য বা অকৃতকার্য ভিত্তিতে মূল্যায়ন করিবে এবং কোন্‌ কোন্‌ আবেদনকারীকে প্রাক-যোগ্য হিসাবে নির্বাচন করা যাইতে পারে উহা উল্লেখপূর্বক ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধানের নিকট প্রাক-যোগ্যতা মূল্যায়ন প্রতিবেদন দাখিল করিবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন মূল্যায়ন প্রতিবেদন দাখিলের পর ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান, আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ অনুযায়ী অন্য কোন কর্মকর্তাকে ক্ষমতা পুনরায় অর্পণ না করা সাপেক্ষে, উক্ত মূল্যায়ন প্রতিবেদন বিবেচনাক্রমে কোন আবেদনকারীর প্রাক-যোগ্যতার আবেদনপত্র গ্রহণ করা বা না করা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন এবং উক্ত সিদ্ধান্ত আবেদনকারীসহ সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিকে অবগত করিবেন ৷

অংশ-৩: পণ্য, কার্য, ইত্যাদি ক্রয়ের জন্য দরপত্র প্রক্রিয়াকরণ

৪৪৷ দরপত্র দলিল বিক্রয় এবং প্রাক-দরপত্র সভা, ইত্যাদি

(১) পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য বা ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে, ধারা ৪০ এর অধীন বিজ্ঞাপন প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ক্রয়কারী তত্কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে আগ্রহী সকল দরপত্রদাতার নিকট দরপত্র দলিল বিক্রয়ের ব্যবস্থা করিবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দরপত্র দলিলের মূল্য এমনভাবে নির্ধারণ করিতে হইবে, যেন উক্ত মূল্য দরপত্র মুদ্রণ ও উহার সরবরাহ ব্যয়ের অধিক না হয় ৷

(৩) ধারা ৪১, ৪২ ও ৪৩ এ বিধৃত বিধান অনুসরণক্রমে প্রাক-যোগ্য সকল ব্যক্তিকে দরপত্র দলিল ক্রয়ের জন্য আহবান জানাইতে হইবে ৷

(৪) ক্রয়কারী, সংশ্লিষ্ট ক্রয়ের উদ্দেশ্য ও অন্যান্য শর্তের ব্যাখ্যা প্রদান এবং দরপত্রদাতাগণের নিকট হইতে তথ্য সংগ্রহকল্পে, দরপত্র দলিলে উল্লিখিত তারিখ, সময় ও স্থানে প্রাক-দরপত্র সভা অনুষ্ঠান করিতে পারিবে ৷

(৫) যে সকল দরপত্রদাতা দরপত্র দলিল ক্রয় করিয়াছেন বা যাহারা উহা ক্রয় করিতে আগ্রহী, তাহারা সকলেই প্রাক-দরপত্র সভায় যোগদান করিতে পারিবেন, তবে যে সকল দরপত্রদাতা দরপত্র দলিল ক্রয় করিয়াছেন শুধু তাহাদেরকেই সভার কার্যবিবরণী প্রদান করিতে হইবে ৷

৪৫৷ দরপত্র দলিলের সংশোধন

(১) ক্রয়কারী, উহার স্বীয় বিবেচনায় বা দরপত্র ক্রয় করিয়াছেন এমন কোন দরপত্রদাতার অনুসন্ধান বা প্রাক-দরপত্র সভায় আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে, দরপত্র দাখিলের জন্য ক্রয়কারী কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়সীমার পূর্বে যে কোন সময় দরপত্র দলিল পরিবর্তন বা সংশোধন করিতে পারিবে এবং উক্তরূপে কোন পরিবর্তন বা সংশোধন করা হইলে উহা দরপত্র দলিলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হইবে ৷

(২) দরপত্র প্রস্তুতের জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের কম সময় অবশিষ্ট থাকাবস্থায় উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন দরপত্র দলিল সংশোধন বা পরিবর্তন করা হইলে, দরপত্র দাখিলের সময়সীমা এমনভাবে বৃদ্ধি করিতে হইবে যেন দরপত্রদাতাগণ উক্ত সংশোধন বা পরিবর্তন বিবেচনা করিয়া দেখার জন্য পর্যাপ্ত সময় পায় ৷

৪৬৷ দরপত্র প্রস্তুত ও দাখিল

(১) দরপত্রদাতা দরপত্র প্রস্তুত করিবার সময় নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহের নিশ্চয়তা বিধান করিবে, যথাঃ-

(ক) ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি কর্তৃক উহা যথাযথভাবে স্বাক্ষরিত হইয়াছে কি না;
(খ) সীলগালা করা খামে দাখিল করা হইয়াছে কি না;
(গ) দরপত্র দলিলে নির্দেশিত মতে যথাযথভাবে চিহ্নিত করা হইয়াছে কিনা; এবং
(ঘ) নির্ধারিত সময়ের পূর্বে যথাস্থানে দাখিল করা হইয়াছে কি না ৷

(২) দরপত্রদাতা স্বয়ং দরপত্র প্রস্তুত ও দাখিল করিবার ব্যয় ও ঝুঁকি বহন করিবে ৷

(৩) দরপত্র দাখিলের জন্য ক্রয়কারী কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়সীমার পরে প্রাপ্ত দরপত্র না খুলিয়া দরপত্রদাতাকে ফেরত প্রদান করিতে হইবে ৷

(৪) দরপত্রদাতা, দরপত্র দাখিল করিবার পর এবং দাখিলের জন্য ক্রয়কারী কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে, যে কোন সময়, উক্ত দরপত্র দলিলে বিধৃত প্রক্রিয়া অনুসারে দরপত্র সংশোধন, প্রতিস্থাপন বা প্রত্যাহার করিতে পারিবে ৷

(৫) নির্ধারিত মূল্যসীমার উর্ধ্বের দরপত্র আহ্বানের ক্ষেত্রে, প্রয়োজনে, একাধিক স্থানে দরপত্র দাখিলের ব্যবস্থা রাখা যাইবে ৷

৪৭৷ দরপত্র উন্মুক্তকরণ

(১) দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি, দরপত্র দাখিলের জন্য ক্রয়কারী কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সময়সীমা অতিক্রান্তের অব্যবহিত পর দরপত্র দলিলে উল্লিখিত স্থানে আগ্রহী দরপত্রদাতা বা তাহাদের ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধদের উপস্থিতিতে দরপত্র এবং দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় উন্মুক্ত করিবে :

তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ৩২ এর উপধারা (১) এর ধফা (গগ) এবং ধারা ৩৪ এর উপ-ধারা (১ক) এর অধীন এক ধাপ দুই খাপ দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র দাখিলের পর উন্মুক্তকরণ কমিটি কারিগরি প্রস্তাবসমূহ উন্মুক্ত করিবে এবং কারিগরি প্রস্তাবসমূহের মূল্যায়ন সমাপ্ত এবং উক্ত মূল্যায়ন প্রতিবেদন ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তৎকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি কর্তৃক অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত আর্থিক প্রস্তবাসমূহ একটি নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত বিধান অনুসরণক্রমে উন্মুক্ত হয় নাই কোন দরপত্র বিবেচনা করা হইবে না এবং উহা উন্মুক্ত না করিয়া দরপত্রদাতাকে ফেরত প্রদান করিতে হইবে ৷

৪৮৷ দরপত্র মূল্যায়ন, ইত্যাদি

(১) দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি দরপত্র দলিলে পূর্বঘোষিত মূল্যায়নের নির্ণায়কসমূহ কঠোরভাবে অনুসরণ করিয়া দরপত্রসমূহ পরীক্ষা ও মূল্যায়নপূর্বক দরপত্র মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রস্তুত করিবে ৷

(২) সর্বনিম্ন মূল্যায়িত ব্যয় নির্ণয়ের জন্য-

(ক) জাতীয় পর্যায়ে পণ্য, সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য ও ভৌত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে, প্রযোজ্য কর এবং মূল্য সংযোজন কর অন্তর্ভূক্ত করিতে হইবে; এবং
(খ) আন্তর্জাতিক ক্রয়ের অধীন আমদানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে, প্রযোজ্য শুল্ক, কর এবং মূল্য সংযোজন কর বাদ দিতে হইবে, তবে স্থানীয় উত্পাদিত পণ্যের ক্ষেত্রে শুধু মূল্য সংযোজন করা বাদ দিতে হইবে; এবং
(গ) আন্তর্জাতিক ক্রয়ের অধীনে কার্যসম্পাদনের ক্ষেত্রে, প্রযোজ্য শুল্ক, কর এবং মূল্য সংযোজন কর অন্তর্ভূক্ত করিতে হইবে ৷

(৩) দরপত্র মূল্যায়নের নিমিত্তে নির্ণায়ক হিসাবে সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ ছাড়াও অন্য কোন নির্ণায়ক দরপত্র দলিলে উল্লেখ থাকিলে, ঐ নির্ণায়কসমূহ যথাসম্ভব আর্থিক মানদন্ডে পরিমাপ করিয়া মূল্যায়ন কার্যসম্পাদন করিতে হইবে ৷

৪৯৷ পূর্বশর্ত হিসাবে কোন নিগোসিয়েশন বা দরপত্র সংশোধন না করা

(১) ধারা ৪৮ এর অধীন দরপত্র মূল্যায়নের সময় দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি এই মর্মে নিশ্চয়তা বিধান করিবে যেন-

(ক) লটারীর মাধ্যমে কোন দরপত্রদাতা নির্বাচিত না হন :

তবে শর্ত থাকে যে, সীমিত দরপত্র পদ্ধতির মাধ্যমে অনধিক ৩ (তিন) কোটি টাকার অভ্যন্তরীণ কার্যক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন মূল্যায়িত দরের সমতা হইলে সর্বনিম্ন মূল্যায়িত দরদাতা নির্ণয়ের জন্য বিশেষ ক্ষেত্র হিসেবে লটারীর প্রয়োগ বিবেচনা করা যাইবে; এবং

(খ) সর্বনিম্ন মূল্যায়িত দরপত্রদাতা বা অন্য কোন দরপত্রদাতার সহিত কোন নিগোসিয়েশন করা না হয়ঃ

তবে শর্ত থাকে যে, যদি অধিক পরিমাণে কোন বিভাজ্য (divisible) পণ্য (Commodities) ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন রেসপন্সিভ দরপত্রদাতা, দরপত্র আহ্বানের সময় আংশিক পণ্য সরবরাহ করিবার শর্ত থাকিলে, দরপত্র দলিলে উল্লিখিত সমুদয় পণ্য সরবরাহের জন্য দরপত্র দাখিল না করে, তাহা হইলে প্রথমে উক্ত সর্বনিম্ন দরপত্রদাতাকে তত্কর্তৃক প্রদত্ত দরে দরপত্র দলিলে উল্লিখিত সমুদয় পণ্য সরবরাহের প্রস্তাব (offer) দেওয়া যাইবে এবং উক্ত প্রস্তাবের ভিত্তিতে উক্ত দরপত্রদাতা সম্পূর্ণ পণ্য সরবরাহ করিতে অপারগতা প্রকাশ করিলে উক্ত দরপত্র দলিল অনুযায়ী অবশিষ্ট পরিমাণ পণ্য সংগ্রহের জন্য পর্যায়ক্রমে রেসপন্সিভ দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং ক্ষেত্রমত, পরবর্তী রেসপন্সিভ দরপত্রদাতাগণকে সর্বনিম্ন দরপত্রদাতার উদ্ধৃত দরে উহা সরবরাহের জন্য প্রস্তাব দেওয়া যাইবে ৷

(২) উপ-ধারা (১)(খ) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, রেসপন্সিভ সর্বনিম্ন দর পরিবর্তনের বিষয়ে কোন নিগোসিয়েশন করা যাইবে না এবং যে পরিমাণ পণ্য সরবরাহের জন্য দরপত্র আহবান করা হইয়াছে, উক্ত উপ-ধারার শর্তাংশে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণক্রমে উহার অধিক পরিমাণ পণ্য সরবরাহ লওয়া যাইবে না ৷

(৩) দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি, চুক্তি সম্পাদনের শর্ত হিসাবে, কোন দরপত্রদাতাকে দরপত্র দলিলে অন্তর্ভূক্ত হয় নাই এমন কোন দায়িত্ব পালন এবং দরপত্রে উল্লিখিত মূল্য পরিবর্তন বা দরপত্রের অন্য কোন শর্ত সংশোধনের জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে না ৷

৫০৷ দরপত্র দাখিল-উত্তর যোগ্যতা যাচাই

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ধারা ৪৮ এর অধীন দরপত্র মূল্যায়ন প্রতিবেদন চূড়ান্ত করিবার পূর্বে দরপত্র দলিলে উল্লিখিত দরপত্র দাখিল-উত্তর যাচাই নির্ণায়ক অনুসারে রেসপন্সিভ দরপত্রদাতার কার্যকরভাবে চুক্তি পালনের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও আর্থিক সামর্থ্য আছে কি না তাহা যাচাই করিয়া দেখিবে ৷

৫১৷ অনুমোদন প্রক্রিয়া

(১) দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি দরপত্র মূল্যায়ন বিষয়ে উহার সুপারিশসহ মূল্যায়ন প্রতিবেদন ধারা ৭(৫) এর বিধান অনুসারে অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করিবে ৷

(২) অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন বিবেচনাক্রমে দরপত্র সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে এবং অবিলম্বে উক্ত সিদ্ধান্তের বিষয়টি ক্রয়কারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করিবে ৷

৫২৷ চুক্তি সম্পাদন নোটিশ জারী এবং চুক্তি স্বাক্ষর

(১) ক্রয়কারী দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ পূর্তির পূর্বে এবং এই আইনের ধারা ২৯ এবং ৩০ এর অধীন কোন অভিযোগ বিবেচনাধীন না থাকিলে, কৃতকার্য দরপত্রদাতাকে চুক্তি সম্পাদনের জন্য নোটিশ প্রদান করিবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর নোটিশপ্রাপ্ত হইয়া দরপত্রদাতা নোটিশে বর্ণিত সময়ের মধ্যে ক্রয়কারীর অনুকূলে কার্যসম্পাদন জামানত প্রদানপূর্বক দরপত্র দলিলে নির্দিষ্টকৃত চুক্তিপত্রের ছকে স্বাক্ষর করিবে ৷

৫৩৷ দরপত্র প্রক্রিয়ার পরিসমাপ্তি

ক্রয়কারী কৃতকার্য দরপত্রদাতার সহিত চুক্তি স্বাক্ষরের পর, অন্যান্য দরপত্রদাতাদের তাহাদের অকৃতকার্য হওয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে অবহিত করিবে এবং তাহাদের দরপত্র জামানত ফেরত দিবে ৷

অংশ-৪: বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ের জন্য আগ্রহ ব্যক্তকরণের আবেদনপত্র ও প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ

৫৪৷ আগ্রহব্যক্তকরণের আবেদনপত্র দাখিল

(১) বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে ধারা ৪০ এর অধীন আগ্রহ ব্যক্তকরণের অনুরোধসম্বলিত বিজ্ঞাপন জারীর পর আগ্রহী আবেদনকারী উক্ত বিজ্ঞাপনে নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে আবেদনপত্র দাখিল করিবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আবেদনপত্র নিম্নবর্ণিত বিবরণাদী অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে, যথাঃ-

(ক) পেশাদার জনবল সংক্রান্ত তথ্যাদি;
(খ) সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানের আর্থিক ও কারিগরী সামর্থ্য; এবং
(গ) সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর অতীত অভিজ্ঞতার বিবরণী ৷

৫৫৷ আবেদনপত্র উন্মুক্তকরণ

(১) ধারা ৫৪ এর অধীন আগ্রহ ব্যক্তকরণ সংক্রান্ত আবেদনপত্র দাখিলের জন্য ক্রয়কারী কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত সর্বশেষ সময় উত্তীর্ণের অব্যবহিত পর, আবেদনপত্র উন্মুক্তকরণ ও তত্সংক্রান্ত তথ্য রেকর্ড করিবার জন্য ক্রয়কারী প্রস্তাব উন্মুক্তকরণ কমিটির সভা আহবান করিবে ৷

(২) প্রস্তাব উন্মুক্তকরণ কমিটি, আবেদনপত্র খোলার রেকর্ড সম্পূর্ণ করিবার পর, প্রাপ্ত আবেদনপত্র ও তত্সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির নিকট প্রেরণ করিবে ৷

৫৬৷ আবেদনপত্র মূল্যায়ন এবং সংক্ষিপ্ত তালিকা অনুমোদন, ইত্যাদি

(১) প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি, আগ্রহ ব্যক্তকরণের অনুরোধ বর্ণিত নির্ণায়কের ভিত্তিতে প্রাপ্ত আবেদনপত্র মূল্যায়ন করিবে এবং কোন্‌ কোন্‌ আবেদনকারী সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য বিবেচনাযোগ্য সেইমর্মে সুপারিশসহ একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধানের নিকট পেশ করিবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য ন্যুনতম ৪ (চার) ও সর্বোচ্চ ৭ (সাত) জন আবেদনকারীকে সুপারিশ করিতে হইবে ৷

(৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত প্রতিবেদন বিবেচনাক্রমে ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সংক্ষিপ্ত তালিকা অনুমোদন করিবে ৷

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন অনুমোদন প্রাপ্তির পর, ক্রয়কারী আগ্রহ ব্যক্ত করিয়াছে এইরূপ সকল ব্যক্তিকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া বা না হওয়ার বিষয়ে অবহিত করিবে ৷

৫৭৷ প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ সম্বলিত দলিল প্রস্তুত, বিতরণ, ইত্যাদি

(১) ক্রয়কারী বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয়ের প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধসম্বলিত দলিল সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত আবেদনকারীগণের নিকট বিতরণ করিবে ৷

(২) প্রত্যেক আবেদনকারী কারিগরী এবং আর্থিক প্রস্তাব দুইটি পৃথক খামে সীলগালা করিয়া অন্য একটি বহিঃস্থ খামে উক্ত দুইটি খাম স্থাপন ও সীলগালা করিয়া প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধসম্বলিত দলিলে বর্ণিত স্থান ও সময়ে উহা দাখিল করিবে ৷

(৩) আবেদনকারী স্বয়ং প্রস্তাব প্রস্তুত এবং দাখিলের ব্যয় ও ঝুঁকি বহন করিবে ৷

(৪) প্রস্তাব দাখিলের নির্দিষ্ট সময়সীমার পর প্রাপ্ত কোন প্রস্তাব না খুলিয়া আবেদনকারীকে ফেরত প্রদান করিতে হইবে ৷

৫৮৷ প্রস্তাব উন্মুক্তকরণ

(১) ধারা ৫৭ এর অধীন প্রস্তাব দাখিলের পর প্রস্তাব উন্মুক্তকরণ কমিটি কারিগরী প্রস্তাবসমূহ খুলিবে এবং কারিগরী প্রস্তাবসমূহের মূল্যায়ন সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আর্থিক প্রস্তাবসমূহ একটি নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করিবে ৷

(২) প্রস্তাব উন্মুক্তকরণ কমিটি কারিগরী প্রস্তাব ও উন্মুক্তকরণ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধি অনুসারে মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির নিকট দাখিল করিবে ৷

৫৯৷ প্রস্তাব মূল্যায়ন

(১) প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি গোপণীয়তা রক্ষা করিয়া এবং প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধসম্বলিত দলিলে বর্ণিত যোগ্যতা ও মূল্যায়নের নির্ণায়কসমূহ কঠোরভাবে অনুসরণপূর্বক আবেদনকারীর কারিগরী যোগ্যতা নির্ধারণের জন্য সকল কারিগরী প্রস্তাব পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করিবে এবং উক্ত মূল্যায়ন অনুমোদনের জন্য ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান বা তত্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নিকট উহা দাখিল করিবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কারিগরী মূল্যায়ন অনুমোদিত হইবার পর প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি, কারিগরী প্রস্তাব পরীক্ষা ও মূল্যায়নে কারিগরী যোগ্যতা অর্জনকারী ব্যক্তিগণকে, অতঃপর এই অধ্যায়ে পরামর্শক বলিয়া উল্লিখিত তাহাদের দাখিলকৃত আর্থিক প্রস্তাবসমূহ প্রকাশ্যে উন্মুক্তকরণের সময়, তত্কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে, উপস্থিত থাকিবার জন্য আহ্বান জানাইবে ৷

(৩) প্রস্তাব মূল্যায়নের ক্ষেত্রে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমটি-

(ক) গুণগতমান ও ব্যয়ভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতির ক্ষেত্রে, প্রত্যেক আর্থিক প্রস্তাব বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করিয়া কারিগরী ও আর্থিক নির্ণায়কসমূহের সম্বিলিত বিবেচনায় সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনকারী পরামর্শককে নিগোসিয়েশনের জন্য আমন্ত্রণ জানাইবে;
(খ) নির্দিষ্ট বাজেটের অধীন নির্বাচন পদ্ধতির ক্ষেত্রে, উক্ত বাজেটের মধ্যে সর্বোচ্চ কারিগরী পয়েন্ট অর্জনকারী পরামর্শককে নিগোসিয়েশনের জন্য আমন্ত্রণ জানাইবে;
(গ) সর্বনিম্ন ব্যয়ভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতির ক্ষেত্রে, কারিগরী, যোগ্যতার মানদন্ডে উত্তীর্ণ সর্বনিম্ন ব্যয় উদ্ধৃতকারী পরামর্শককে নিগোসিয়েশনের জন্য আমন্ত্রণ জানাইবে ৷

৬০৷ নিগোসিয়েশন

(১) প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি, চুক্তি সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, প্রস্তাব বাস্তবায়ন কৌশল, কর্মপরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে কৃতকার্য পরামর্শকের সহিত নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রাক-চুক্তি নিগোসিয়েশন সম্পন্ন করিবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন নিগোসিয়েশন ফলপ্রসূ না হইলে, প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি পরবর্তী সর্বোচ্চ মূল্যায়িত পরামর্শক এবং চুক্তি সম্পাদিত না হওয়া পর্যন্ত অনুরূপভাবে অন্যান্য মূল্যায়িত পরামর্শকগণের সহিত নিগোসিয়েশন সম্পন্ন করিবে, তবে একইভাবে উক্ত কমিটি একাধিক পরামর্শকের সঙ্গে নিগোসিয়েশন করিতে পারিবে না ৷

(৩) অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাগত সেবা ক্রয় সংক্রান্ত প্রস্তাব আর্থিক মূল্যায়নে ব্যয় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কর এবং মূল্য সংযোজন কর প্রদানের বিষয়টি বিবেচনায় আনা যাইবে না ৷

(৪) এই ধারার অধীন নিগোসিয়েশন সমাপ্ত করিবার লক্ষ্যে, প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি এবং কৃতকার্য পরামর্শক একটি সম্মত কার্যবিবরণী সম্পাদনক্রমে প্রস্তাবিত খসড়া চুক্তিপত্র অনুস্বাক্ষর করিবে ৷

৬১৷ অনুমোদন প্রক্রিয়া

(১) প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি উহার সুপারিশসহ মূল্যায়ন প্রতিবেদন ধারা ৭(৫) অনুসারে অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করিবে ৷

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পেশকৃত প্রতিবেদন বিবেচনা করিয়া অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে এবং উক্ত সিদ্ধান্তের বিষয়টি ক্রয়কারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করিবে ৷

৬২৷ চুক্তি স্বাক্ষর

(১) ক্রয়কারী, চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদন প্রাপ্তির পর, এই আইনের ধারা ২৯ ও ৩০ এর অধীন কোন অভিযোগ দায়ের করা না হইয়া থাকিলে, কৃতকার্য পরামর্শককে চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আহ্বান জানাইবে।

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী আহ্বান জানানো হইলে পরামর্শক, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, ক্রয়কারীর অনুকূলে কার্যসম্পাদন জামানত প্রদানপূর্বক, প্রস্তাব দলিলে নির্দিষ্টকৃত চুক্তিপত্রের ছকে স্বাক্ষর করিবে।

৬৩৷ প্রস্তাব প্রক্রিয়ার পরিসমাপ্তি

ক্রয়কারী, কৃতকার্য পরামর্শকের সহিত চুক্তি স্বাক্ষরের পর, অন্যান্য সকল আবেদনকারী বা পরামর্শককে তাহাদের অকৃতকার্য হওয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে অবহিত করিবে।

সপ্তম অধ্যায়ঃ পেশাগত অসদাচরণ, অপরাধ, ইত্যাদি

সপ্তম অধ্যায়: পেশাগত অসদাচরণ, অপরাধ, ইত্যাদি (ধারা ৬৪)

৬৪৷ পেশাগত অসদাচরণ, অপরাধ, চুক্তি বাতিল, ইত্যাদি

(১) এই আইনের অধীন পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয় কর্মকান্ডের সহিত সংশ্লিষ্ট কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী এই আইন বা তদধীন প্রণীত কোন বিধির বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোন পণ্য, সেবা বা কার্য ক্রয় বা সংগ্রহ করিবেন না বা করিবার চেষ্টা করিবেন না ৷

(২) ক্রয়কারী, ক্রয় প্রক্রিয়াকরণ ও চুক্তি বাস্তবায়নকালে, উহার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ যেন কোন দুর্নীতি, প্রতারণা, চক্রান্ত, জবরদস্তিমূলক বা অন্য কোন কর্মকান্ডে জড়িত না হন তাহার নিশ্চয়াতা বিধান করিবে এবং একইভাবে, এই আইনে সংজ্ঞায়িত কোন দরপত্রদাতা বা পরামর্শক বা ব্যক্তি নৈতিক বিধি পালন করিবে এবং এই মর্মে নিশ্চয়তা বিধান করিবে যে, উহা বা উহার কর্মচারীগণ বা উহার পক্ষে কোন মধ্যস্ততাকারী যেন অনুরূপ কোন কর্মকান্ডে জড়িত না হন ৷

(৩) এই আইন প্রযোজ্য হয় এমন কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোন কার্য করিয়া থাকিলে তিনি Government Servants (Discipline and Appeal) Rules, 1985 এর rule 3(b) এবং 3(d) বা উক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সাধারণ আচরণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত চাকুরী বিধি অনুযায়ী অসদাচরণ বা দুর্নীতির জন্য দায়ী হইবে এবং উক্ত কারণে তাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে ৷

(৪) উপ-ধারা (৩) এর ব্যবস্থার বিকল্প বা অতিরিক্ত হিসাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কর্মচারী বা কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে Prevention of Corruption Act, 1947 এর সংশ্লিষ্ট ধারা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে Penal Code, 1860 এর অধীনেও ফৌজদারী কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে ৷

(৫) কোন ব্যক্তি যদি এই আইনের কোন বিধান লঙ্ঘন করিয়াছে বলিয়া প্রতীয়মান হয়, তাহা হইলে ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান উক্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট ক্রয় কার্যক্রমে বা ভবিষ্যতে অন্য কোন ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণে অযোগ্য বলিয়া ঘোষণা করিতে পারিবেন ৷

(৬) কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন ক্রয়কারীর সহিত সম্পাদিত চুক্তির কোন মৌলিক শর্ত ভঙ্গ করিলে বা এই আইন ও বিধির সহিত সঙ্গতিপূর্ণ নহে এইরূপ কোন কার্যসম্পাদন করিলে, ক্রয়কারী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে চুক্তি বাতিল করিতে পারিবে এবং উক্ত ব্যক্তি, ঠিকাদার, সরবরাহকারী বা পরামর্শককে উপ-ধারা (৫) অনুযায়ী, বিধি দ্বারা নির্ধারিত মেয়াদ উল্লেখ ক্রমে, সকল সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণে অযোগ্য বলিয়া ঘোষণা করিতে পারিবে।

অষ্টম অধ্যায়ঃ সরকারী ক্রয়ে ইলেকট্রনিক পরিচালন পদ্ধতির ব্যবহার, ইত্যাদি

প্রথম অধ্যায়ঃ প্রাথমিক বিষয়াদি (ধারা ৬৫)

৬৫৷ ইলেকট্রনিক পরিচালন পদ্ধতিতে সরকারী ক্রয় (e-Government Procurement)

(১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, এই আইনের অধীন কোন বা সকল সরকারী ক্রয় ইলেকট্রনিক পরিচালন পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা যাইবে ৷

(২) ইলেকট্রনিক পরিচালন পদ্ধতি ও তত্সশ্লিষ্ট নীতিমালা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে ৷

ব্যাখ্যাঃ এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, “ইলেকট্রনিক পরিচালন পদ্ধতি” অর্থ ওয়েবসাইটে সরাসরি (online) তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ৷

নবম অধ্যায়ঃ বিবিধ

নবম অধ্যায়: বিবিধ (ধারা ৬৬-৭৩)

৬৬৷ কনসেশন চুক্তি সম্পর্কিত বিধান

এই আইনের অন্য কোন বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকারী ও বেসরকারী যৌথ অর্থায়নে বা সম্পূর্ণ বেসরকারী অর্থায়নে, নির্মাণ মালিকানা পরিচালনা; নির্মাণ পরিচালনা হস্তান্তর; নির্মাণ মালিকানা পরিচালনা হস্তান্তরের মাধ্যমে জন-উপযোগমূলক এবং তত্সংশ্লিষ্ট সেবার সংস্থান বা পরিচালনার জন্য সরকার তত্কর্তৃক জারীকৃত নির্দেশনা ও নমুনা চুক্তিপত্র অনুযায়ী কোন ব্যক্তির সহিত কনসেশন চুক্তি করিতে পারিবে ৷

৬৭৷ পরিবীক্ষণ, ইত্যাদির ব্যাপারে সরকারের দায়িত্ব

এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরিবীক্ষণ, সমন্বয় সাধন, ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সরকার একটি সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট বা তদ্‌কর্তৃক গঠিত অন্য কোন ইউনিটের মাধ্যমে নিম্নরূপ দায়িত্ব পালন করিবে, যথাঃ-

(ক) সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এই আইনের বাস্তবায়ন ও প্রয়োগ পরিবীক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ;
(খ) সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ও আনুষঙ্গিক কার্যাবলী সম্পাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ;
(গ) নির্ধারিত অন্য কোন দায়িত্ব সম্পাদন ৷

৬৮৷ রাষ্ট্রীয় জরুরী প্রয়োজন, ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকারী ক্রয় সম্পর্কিত বিশেষ বিধান

(১) সরকার, রাষ্ট্রীয় জরুরী প্রয়োজনে বা বিপর্যয়ের কোন ঘটনা মোকাবেলার জন্য, জনস্বার্থে, সরকার কর্তৃক গঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশক্রমে, ধারা ৩২ এ বর্ণিত সরাবসরি ক্রয় পদ্ধতি বা অন্য কোন ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করিয়া ক্রয়কার্য সম্পন্ন করিতে পারিবে ৷

(২) জাতীয় নিরাপত্তা বা জাতীয় প্রতিরক্ষার স্বার্থে, সরকার ভিন্নরূপ কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করিলে, এই আইন অনুসারে সরকারী ক্রয় সম্পন্ন করিতে হইবে ৷

৬৯৷ সরল বিশ্বাসে কৃত কাজকর্ম রক্ষণ

এই আইনের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কিছুর জন্য বা সরল বিশ্বাসে কোন কিছু সম্পাদন করিবার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য, সরকার বা কোন সরকারী কর্মচারীর (Public Servant) বিরুদ্ধে কোন মামলা বা অন্য কোন আইনগত কার্যধারা গ্রহণ করা যাইবে না ৷

৭০৷ বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে ৷

৭১৷ জটিলতা নিরসনে সরকারের ক্ষমতা

এই আইনের কোন বিধানের অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধান দেখা দিলে, সরকার অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত বিধানের স্পষ্টিকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক উক্ত বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা দিতে পারিবে ৷

৭২৷ ইংরেজীতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজীতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ প্রকাশ করিবে, যাহা এই আইনের নির্ভরযোগ্য ইংরেজী পাঠ (Authentic English Text) নামে অভিহিত হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, এই আইনের বাংলা ও ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে ৷

৭৩৷ রহিতকরণ ও হেফাজত

(১) এই আইনে উল্লিখিত বিধি, ক্রয় সংক্রান্ত অন্যান্য সকল বিধি-বিধান বা অন্য কোন দলিল, উহা যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, এই আইনের কোন বিধানের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ হইলে সংশ্লিষ্ট বিধান বা বিধানসমূহ এই আইন বলবত্ হওয়ার তারিখে রহিত হইবেঃ

তবে শর্ত থাকে যে, এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি, ক্রয় সংক্রান্ত সকল বিধি-বিধান বা অন্য কোন দলিল, উহা যে নামেই অভিহিত হউক না কেন, এই আইনের কোন বিধানের সহিত অসংগতিপূর্ণ হইবে না ৷

(২) এই আইন বলবত্ হইবার পূর্বে ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রচলিত বিধি, প্রবিধান ও নির্দেশনাবলী অনুসারে গৃহীত সকল কার্যক্রম, উপ-ধারা (১) এর অধীনে রহিতকরণ সত্তেও, রহিতকৃত উক্ত বিধি, প্রবিধান ও নির্দেশনাবলী অনুসারে উহা নিষ্পত্তিযোগ্য হইবে, যেন উহা রহিত করা হয় নাই ৷

(৩) এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি জারী না হওয়া পর্যন্ত “The Public Procurement Regulations, 2003” এর কার্যকারিতা বলবৎ থাকিবে ৷

জাতীয় পে বেতন স্কেল গেজেট ২০১৫। Pay Scale 2015

0

এস.আর.ও নং ৩৬৯-আইন/২০১৫।Services (Reorganization and Conditions) Act. 1975 (Act No XXXII of 1975) এর Section 5 এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার নিম্নরূপ আদেশ জারি করিল, যথা:

১। শিরোনাম, প্রবর্তন ও প্রয়োগ।-(১) এই আদেশ চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৫ নামে অভিহিত হইবে।

(২) এই আদেশ, উপ-অনুচ্ছেদ (৩) এর বিধান সাপেক্ষে, ১ জুলাই ২০১৫ তারিখ হইতে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(৩) নিম্নবর্ণিত শর্ত সাপেক্ষে, ১ জুলাই ২০১৫ তারিখে এই আদেশের অনুচ্ছেদ ৩ এ উল্লিখিত জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ কার্যকর হইবে, যথা:

(ক) অনুচ্ছেদ ৫ এর বিধান অনুযায়ী ১ জুলাই ২০১৫ তারিখে বেতন নির্ধারণ হইবে এবং এইরূপ নির্ধারিত বেতন ১ জুলাই ২০১৫ তারিখ হইতে প্রদান করা হইবে;

(খ) কর্মচারীগণ ১ জুলাই ২০১৫ তারিখ হইতে এই আদেশ জারির তারিখ পর্যন্ত সময়ের বেতন বকেয়া হিসাবে প্রাপ্য হইবেন;

(গ) এই আদেশের অধীন প্রদেয় অন্যান্য সকল ভাতা ৩০ জুন ২০১৫ তারিখে প্রাপ্য অংকে ৩০ জুন ২০১৬ তারিখ পর্যন্ত প্রদান করা হইবে;

(ঘ) জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ কার্যকর হইবার তারিখ হইতে মহার্ঘ ভাতা বিলুপ্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং ১ জুলাই ২০১৫ তারিখ হইতে ইতোমধ্যে আহরিত মহার্ঘভাতা দফা (খ) এর অধীন প্রাপ্য বকেয়ার সহিত সমন্বয় করিতে হইবে;

ব্যাখ্যা-দফা (ঙ) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, যে কর্মচারী ১ জুলাই ২০১৫ তারিখে অবসরোত্তর ছুটিতে আছেন তিনি ৩০ জুন ২০১৫ তারিখে যে হারে মহার্ঘভাতা পাইতেন সেই হারে অবসরোত্তর ছুটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রাপ্য হইবেন।

(৪) এই আদেশ নিম্নবর্ণিত ব্যক্তি, কর্মচারী ও শ্রমিক ব্যতীত প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে নিয়োজিত সকল কর্মচারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে, যথা:

(ক) বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ;

(খ) যে সকল বেসামরিক কর্মচারীকে প্রতিরক্ষ প্রাক্কলন হইতে বেতন প্রদান করা হয় তাঁহারা ব্যতীত প্রতিরক্ষা সার্ভিসসমূহে নিয়োজিত কর্মচারীগণ;

(গ) পুলিশ বাহিনী এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এ নিয়োজিত কর্মচারীগণ;

(ঘ) পণ্য উৎপাদনশীল রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান (চাকরির শর্তাবলী) আইন, ২০১২ (২০১২ সনের ২৪ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (ঘ) তে সংজ্ঞায়িত শ্রমিক;

(ঙ) শিক্ষানবীশ অথবা প্রশিক্ষণার্থী হিসাবে অথবা আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ; এবং

(চ) চুক্তি অথবা খন্ডকালীন ভিত্তিতে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ।

(৫) উপ-অনুচ্ছেদ ৪ এর দফা (চ) এবং অন্য কোন বিধি-বিধান বা চুক্তিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আদেশ কার্যকর হইবার তারিখে যে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর অবসর উত্তর ছুটি অব্যাহত থাকিত, যদি না অবসর উত্তর ছুটি বাতিলের শর্তে তাহাকে, জনস্বার্থে, প্রজাতন্ত্রের কর্মে চুক্তিভিত্কি বা অন্য কোন ভাবে নিয়োগ করা হইত, সেই কর্মচারী এই আদেশের অধীন প্রদেয় অবসর সুবিধাদি প্রাপ্য হইবেন।

জাতীয় বেতন স্কেল বা পে স্কেল কি?

সরকারি কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি সংক্রান্ত বিধি বিধান যে আদেশে বা গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করা থাকে তাকেই সাধারণত পে স্কেল বলে।  সর্বশেষ জাতীয় বেতন স্কেল জারি করা হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ খ্রি: তারিখে।

শিরোনাম, প্রবর্তন ও প্রয়োগ:

এই আদেশ চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৫ নামে অভিহিত হইবে।

সংজ্ঞা: জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অর্থ ৩০ জুন ২০১৫ তারিখে প্রাপ্ত বা প্রাপ্য মূল বেতনসহ সরকার কর্তৃক সময় সময়, জারিকৃত আদেশাবলী অনুসারে কোন পদের বা কাজের সহিত সম্পৃক্ত ব্যক্তিগত বেতন বা ব্যক্তিগত ভাতা ব্যতীত অন্যান্য ব্যক্তিগত বেতন বা ভাতা।

জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ এর ধাপ সমূহ:
  • গ্রেড-০১ টাকা ৭৮০০০ (নির্ধারিত)
  • গ্রেড-০২ টাকা ৬৬০০০-৭৪৪০০
  • গ্রেড-০৩ টাকা ৫৬৫০০০-৭৭৪০০
  • গ্রেড-০৪ টাকা ৫০০০০-৭১২০০
  • গ্রেড-০৫ টাকা ৪৩০০০-৬৯৮৫০
  • গ্রেড-০৬ টাকা ৩৫৫০০-৬৭০১০
  • গ্রেড-০৭ টাকা ২৯০০০-৬৩৪১০
  • গ্রেড-০৮ টাকা ২৩০০০-৫৫৪৭০
  • গ্রেড-০৯ টাকা ২২০০০-৫৩০৬০
  • গ্রেড-১০ টাকা ১৬০০০-৩৮৬৪০
  • গ্রেড-১১ টাকা ১২৫০০-৩০২৩০
  • গ্রেড-১২ টাকা ১১৩০০-২৭৩০০
  • গ্রেড-১৩ টাকা ১১০০০-২৬৫৯০
  • গ্রেড-১৪ টাকা ১০২০০-২৪৬৮০
  • গ্রেড-১৫ টাকা ৯৭০০-২৩৪৯০
  • গ্রেড-১৬ টাকা ৯৩০০-২২৪৯০
  • গ্রেড-১৭ টাকা ৯০০০-২১৮০০
  • গ্রেড-১৮ টাকা ৮৮০০-২১৩১০
  • গ্রেড-১৯ টাকা ৮৫০০-২০৫৭০
  • গ্রেড-২০ টাকা ৮২৫০-২০০১০
জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ এর প্রাপ্যতা:

৩০ জুন ২০১৫ তারিখে বা উহার পূর্বে কোন কর্মচারী সংশ্লিষ্ট পদে যে মূল স্কেল, ব্যক্তিগত স্কেল, সিলেকশন গ্রেড স্কেল, সিনিয়র স্কেল বা উচ্চতর স্কেল (টাইম স্কেল) পাইতেছিলেন, তিনি ১ জুলাই ২০১৫ তারিখ হইতে অনুচ্ছেদ ৩(১) এ বর্ণিত তাহার সংশ্লিষ্ট বর্তমান বেতনস্কেলের বিপরীতে প্রদর্শিত জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ এর অনুরূপ স্কেল প্রাপ্য হইবেন।

জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ এ বেতন নির্ধারণ:

যে কর্মচারী বর্তমান বেতনস্কেলে পদের মূল স্কেল, সিনিয়র স্কেল, সিলেকশন গ্রেড স্কেল, ব্যক্তিগত স্কেল অথবা উচ্চতর স্কেল (টাইম স্কেল) পাইতেছিলেন, তাঁহার বেতন বর্তমান বেতনস্কেলের অনুরূপ জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ এ অনুচ্ছেদ ৪ এর শর্তাধীনে এবং নিম্নবর্ণিত পদ্ধতিতে নির্ধারিত হইবে।

যে সকল বিষয় জাতীয় বেতন ভাতাদি আদেশে উল্লেখ থাকে:

সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া বিল পরিশোধে প্রয়োজন পড়ে পে স্কেলের কপি। যা আপনি সংগ্রহে রেখে দিতে পারেন। 

  • সিভিল সার্ভিস এ চাকুরি (বেতন ও ভাতাদি আদেশ)
    বেতন স্কেলের ধাপ।
  • বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ।
  • সংযুক্তিতে কর্মরত কর্মচারীর বসবাসরত স্থানের হারে প্রাপ্য বাড়ি ভাড়া নির্ধারণে।
  • যাতায়াত ভাতা নির্ধারণ।

সরকারি চাকরি আইন – ২০১৮| সরকারি চাকুরি আইন ও বিধিমালা

সরকারি চাকরি আইন – ২০১৮| সরকারি চাকুরি আইন ও বিধিমালা

প্রজাতন্ত্রের কর্মবিভাগ সৃজন ও পুনর্গঠন, একীকরণ, সংযুক্তকরণ এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীগণের নিয়োগ ও তাহাদের কর্মের শর্তাবলি নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং এতৎসংক্রান্ত বিদ্যমান বিধানাবলি সংহতকরণকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু সংবিধানের ১৩৬ অনুচ্ছেদে আইনের দ্বারা প্রজাতন্ত্রের কর্মবিভাগ সৃজন, সংযুক্তকরণ ও একীকরণসহ পুনর্গঠন এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তির কর্মের শর্তাবলির তারতম্য করিবার ও উহা রদ করিবার বিধান রহিয়াছে; এবং

যেহেতু সংবিধানের ১৩৩ অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীগণের নিয়োগ ও তাহাদের কর্মের শর্তাবলি আইন দ্বারা নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করিবার বিধান রহিয়াছে; এবং

যেহেতু প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীগণের নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলি সম্পর্কিত বিদ্যমান বিধানসমূহ সংহতকরণের মাধ্যমে আইন প্রণয়ন করিবার প্রয়োজনীয়তা রহিয়াছে; এবং

যেহেতু সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য হইবে বলিয়া ঘোষণা করা হইয়াছে; এবং

যেহেতু সংবিধানে বর্ণিত নীতি ও নির্দেশনাসমূহের বাস্তবায়ন ও প্রতিফলনে দক্ষ, জনবান্ধব, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক জনপ্রশাসন নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

প্রজাতন্ত্রের কর্মবিভাগ সৃজন ও পুনর্গঠন, একীকরণ, সংযুক্তকরণ এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীগণের নিয়োগ ও তাহাদের কর্মের শর্তাবলি নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ এবং এতৎসংক্রান্ত বিদ্যমান বিধানাবলি সংহতকরণকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু সংবিধানের ১৩৬ অনুচ্ছেদে আইনের দ্বারা প্রজাতন্ত্রের কর্মবিভাগ সৃজন, সংযুক্তকরণ ও একীকরণসহ পুনর্গঠন এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তির কর্মের শর্তাবলির তারতম্য করিবার ও উহা রদ করিবার বিধান রহিয়াছে; এবং

যেহেতু সংবিধানের ১৩৩ অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীগণের নিয়োগ ও তাহাদের কর্মের শর্তাবলি আইন দ্বারা নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করিবার বিধান রহিয়াছে; এবং

যেহেতু প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীগণের নিয়োগ ও কর্মের শর্তাবলি সম্পর্কিত বিদ্যমান বিধানসমূহ সংহতকরণের মাধ্যমে আইন প্রণয়ন করিবার প্রয়োজনীয়তা রহিয়াছে; এবং

যেহেতু সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য হইবে বলিয়া ঘোষণা করা হইয়াছে; এবং

যেহেতু সংবিধানে বর্ণিত নীতি ও নির্দেশনাসমূহের বাস্তবায়ন ও প্রতিফলনে দক্ষ, জনবান্ধব, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক জনপ্রশাসন নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়;

সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল:-

সূচি

ধারাসমূহ

প্রথম অধ্যায় – প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রয়োগ ও প্রবর্তন

১। (১) এই আইন সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ নামে অভিহিত হইবে।

(২) উপ-ধারা (৩) এর বিধান সাপেক্ষে, এই আইন প্রজাতন্ত্রের কর্ম ও উহাতে নিয়োজিত কর্মচারীগণের জন্য প্রযোজ্য হইবে।

(৩) অন্য কোনো আইন, চুক্তি বা সমজাতীয় দলিলে ভিন্নরূপ কোনো বিধান না থাকিলে, 1[এই আইনের বিধানাবলি, উপ-ধারা (৪ক) সাপেক্ষে,] নিম্নবর্ণিত কর্ম বা কর্ম বিভাগ বা উহাতে নিয়োজিত ব্যক্তিগণের জন্য প্রযোজ্য হইবে না, যথা:-

(ক) সংবিধান দ্বারা সৃষ্ট কোনো 2[***] পদ;

(খ) বিচার-কর্ম বিভাগ;

(গ) প্রতিরক্ষা-কর্ম বিভাগ;

(ঘ) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়;

(ঙ) জাতীয় সংসদ সচিবালয়;

(চ) বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট;

(ছ) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়;

(জ) স্ব-শাসিত সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান;

(ঝ) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান;

(ঞ) সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প, কর্মসূচি বা অনুরূপ কোনো কার্যক্রমের আওতাধীন চাকরি; এবং

(ট) এ্যাপ্রেনটিস, চুক্তি বা এডহক ভিত্তিক অথবা অন্য কোনো প্রকার অস্থায়ী, সাময়িক বা খণ্ডকালীন চাকরি।

(৪) উপ-ধারা (৩) এ উল্লিখিত যে সকল কর্ম বা কর্মবিভাগ বা উহাতে নিয়োজিত ব্যক্তিগণের জন্য ধারা ৬১ এর অধীন রহিতকৃত যে কোনো আইনের বিধান যেভাবে প্রযোজ্য ছিল, সেই সকল বিধানের বিষয়বস্তুর প্রতিফলনে যে সকল বিধান এই আইনে সংযোজিত হইয়াছে উহা প্রযোজ্য থাকিবে।

3[(৪ক) উপ-ধারা (৪) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, এই আইনের ধারা ১৫, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪ ও ৪৫ এর বিধানসমূহ স্ব-শাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মচারীগণের জন্যও প্রযোজ্য হইবে।]

*(৫) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে।

* এস, আর, ও নং ৩০৫-আইন/২০১৯, তারিখঃ ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ইং দ্বারা ১০ আশ্বিন, ১৪২৬ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১ অক্টোম্বর, ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ তারিখ হইতে আইনটি কার্যকর হইয়াছে ।

সংজ্ঞা

২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে-

(১) “আইন” অর্থ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫২ এ সংজ্ঞায়িত আইন;

(২) ‘‘উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারী’’ অর্থ কোনো সরকারি কর্মচারী, যাহার পদ প্রশাসনিক পুনর্গঠন, জনবল যৌক্তিকীকরণ বা অন্য কোনো কারণে সরকার কর্তৃক বিলুপ্ত করা হইয়াছে;

(৩) “উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ” অর্থ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অথবা আপাতত বলবৎ কোনো আইন বা সরকারি আদেশ দ্বারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দায়িত্ব পালন বা ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ; এবং এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারীও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(৪) “‌‌এ্যাপ্রেনটিস” অর্থ প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ প্রাপ্ত নহেন, তবে অনুরূপ নিয়োগের উদ্দেশ্যে কোনো বৃত্তি বা পেশা সম্পর্কে প্রশিক্ষণরত কোনো ব্যক্তি যিনি উক্ত প্রশিক্ষণকালে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাতা প্রাপ্ত হন;

(৫) “কমিশন” অর্থ বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন;

(৬) “প্রজাতন্ত্রের কর্মবিভাগ” অর্থ প্রজাতন্ত্রের কর্মের অন্তর্ভুক্ত যে কোনো কর্মবিভাগ, সার্ভিস, ক্যাডার বা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোনো স্বতন্ত্র ইউনিট;

(৭) “প্রেষণ” অর্থ কোনো সরকারি কর্মচারীকে তাহার নিজস্ব অথবা নিয়মিতভাবে নিয়োগযোগ্য কর্ম, পদ বা কর্মবিভাগ হইতে ভিন্নতর কোনো কর্ম, পদ বা কর্মবিভাগে অস্থায়ীভাবে প্রেরণ;

(৮) “‌‌বেতন” অর্থ একজন কর্মচারী প্রতি মাসে বেতন, ওভারসিজ পে, বিশেষ বেতন, ব্যক্তিগত বেতন বা সরকার কর্তৃক বেতন হিসাবে বিশেষভাবে শ্রেণিভুক্ত অন্য যে কোনো প্রকার আয় বাবদ যে অর্থ প্রাপ্য হন; তবে কোনো পদে স্থায়ীভাবে বা অফিসিয়েটিং হিসাবে অধিষ্ঠিত থাকিবার কারণে বা কোনো কর্মবিভাগে তাহার অবস্থানের কারণে বিশেষ বেতন বা তাহার ব্যক্তিগত যোগ্যতার কারণে মঞ্জুরিকৃত বেতন ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে না;

(৯) “বৈদেশিক বা বেসরকারি চাকরি” অর্থ কোনো বিদেশি রাষ্ট্র অথবা কোনো স্বীকৃত আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক, বহুজাতিক বা বেসরকারি সংস্থার অধীন চাকরি;

(১০) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি; এবং অনুরূপ বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত প্রজাতন্ত্রের কর্ম ও উহাতে কর্মচারীগণের নিয়োগ এবং কর্মের শর্তাবলি সম্পর্কিত আপাতত বলবৎ অন্যান্য বিধিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;

(১১) “রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান” অর্থ সরকার অথবা কোনো স্ব-শাসিত সংস্থার মালিকানাধীন বা উহাতে ন্যস্ত অথবা শতকরা ৫০ (পঞ্চাশ) ভাগের অধিক সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত কোনো ব্যবসায়-উদ্যোগ, কোম্পানি, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা শিল্প-বাণিজ্য সম্পর্কিত বা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান;

(১২) “লিয়েন” অর্থ প্রজাতন্ত্রের কর্মের কোনো স্থায়ী পদে স্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তির উক্ত পদে স্থায়ীভাবে অধিষ্ঠিত থাকিবার অধিকার;

(১৩) “‌‌শিক্ষানবিস (Probationer)” অর্থ প্রজাতন্ত্রের কর্মের কোনো স্থায়ী পদের বিপরীতে সরাসরি বা পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগকৃত কোনো কর্মচারী, যাহার চাকরি এখনও স্থায়ীকরণ করা হয় নাই;

(১৪) ‘‘সরকার’’ অর্থ এই আইনে বর্ণিত কোনো কার্য সম্পাদনের জন্য Rules of Business, 1996 এর Schedule-I (Allocation of Business Among the Different Ministries and Divisions) অনুসারে ক্ষমতা বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ;

(১৫) ‘‘সরকারি আদেশ’’ অর্থ Rules of Business, 1996 এর অধীন বা উহাতে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার কর্তৃক, সময় সময়, প্রদত্ত আদেশ, নির্দেশ, প্রজ্ঞাপন বা পরিপত্র;

(১৬) “সরকারি কর্মচারী” অর্থ এই আইনের আওতাভুক্ত প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি;

(১৭) “সংবিধান” অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান;

(১৮) “স্ব-শাসিত সংস্থা” অর্থ আপাতত বলবৎ কোনো আইনের বিধান দ্বারা অথবা উহার অধীন প্রতিষ্ঠিত বা গঠিত এবং স্ব-শাসনে পরিচালিত দফা (৫) এ উল্লিখিত কমিশন ব্যতীত অন্য কোনো কমিশন অথবা কোনো কর্তৃপক্ষ, কর্পোরেশন, ইন্সটিটিউশন বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, যাহার স্বতন্ত্র আইনগত সত্তা রহিয়াছে;

(১৯) “স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান” অর্থ সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, আইন দ্বারা বা উহার অধীন প্রতিষ্ঠিত বা গঠিত কোনো কর্তৃপক্ষ;

(২০) “স্থায়ী পদ” অর্থ একটি নির্দিষ্ট বেতন-গ্রেডে অসীমিত সময়ের জন্য মঞ্জুরিকৃত প্রজাতন্ত্রের কর্মের কোনো পদ; এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শর্ত পূরণ সাপেক্ষে, নির্দিষ্ট সময় অন্তে স্থায়ী করিবার উদ্দেশ্যে রাজস্বখাতে অস্থায়ীভাবে সৃজিত পদও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।

আইনের প্রাধান্য

৩। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্ম বা উহার আওতাভুক্ত কোনো বিশেষ শ্রেণির জন্য আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন অথবা অনুরূপ আইনের অধীন প্রণীত বিধি, প্রবিধি বা আদেশে কোনো বিশেষ বিধান থাকিলে, অনুরূপ বিশেষ বিধান প্রাধান্য পাইবে।

চাকরি সম্পর্কিত অন্যান্য বিধানের শর্তসাপেক্ষ কার্যকারিতা

৪। প্রজাতন্ত্রের কর্ম বা উহাতে নিয়োজিত কর্মচারীগণের নিয়োগ এবং কর্মের শর্ত সম্পর্কিত আপাতত বলবৎ কোনো আইন ও আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন দলিলের বিধান এবং এতদসংক্রান্ত সরকারি আদেশসমূহ, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, কার্যকর থাকিবে।

দ্বিতীয় অধ্যায় – প্রজাতন্ত্রের কর্ম এবং কর্মবিভাগ সৃজন ও পুনর্গঠন

প্রজাতন্ত্রের কর্ম এবং কর্মবিভাগ সৃজন ও পুনর্গঠন

৫। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে আদেশ দ্বারা, প্রজাতন্ত্রের যে কোনো কর্ম বা কর্মবিভাগ সৃজন, সংযুক্তকরণ, একীকরণ বা বিলুপ্তকরণসহ অন্য যে কোনোভাবে পুনর্গঠন করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন জারিকৃত আদেশ দ্বারা কোনো সরকারি কর্মচারীর কর্মের শর্তাবলির তারতম্য করা বা উহা রদ করা যাইবে।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন জারিকৃত আদেশের ভূতাপেক্ষ কার্যকরতা প্রদান করা যাইবে।

তৃতীয় অধ্যায় – সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও এখতিয়ার

সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও এখতিয়ার

৬। (১) সরকারি কর্মচারীগণের উপর সরকারের এবং, সরকারের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে, তাহার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আইনানুগ কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ থাকিবে ।

(২) সরকার, এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীগণের নিয়োগ ও কর্ম সম্পর্কিত সাধারণ বা বিশেষ, যে কোনো শর্ত নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(৩) সরকার বা, ক্ষেত্রমত, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সরকারি কর্মচারীর পদ, পদবি, কর্মপরিধি, কর্ম বা চাকরি সম্পর্কিত দায় ও এখতিয়ার নির্ধারণ বা পরিবর্তন করিতে পারিবে এবং জনস্বার্থে, তাহাকে আইনানুগ যে কোনো কর্ম বা দায়িত্বে নিয়োজিত করিতে পারিবে।

চতুর্থ অধ্যায় নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন, ইত্যাদি

নিয়োগ

৭। (১) এই আইনের আওতাভুক্ত কোনো কর্ম বা কর্মবিভাগে সরাসরি জনবল নিয়োগের ভিত্তি হইবে মেধা ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা।

(২) সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৯(৩) এর উদ্দেশ্যে পূরণকল্পে, পদ সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৩) বাংলাদেশের নাগরিক নহেন এমন কোনো ব্যক্তিকে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ করা যাইবে না।

(৪) যে সকল পদের ক্ষেত্রে কমিশনের পরামর্শ গ্রহণ বা সুপারিশের আবশ্যকতা রহিয়াছে, সেই সকল পদে কমিশনের এবং অবশিষ্ট পদে সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে গঠিত কমিটি বা কর্তৃপক্ষের সুপারিশ ব্যতিরেকে, কোনো ব্যক্তিকে প্রজাতন্ত্রের কর্মে সরাসরি নিয়োগ করা যাইবে না।

(৫) প্রজাতন্ত্রের কর্মে সরাসরি নিয়োগের অন্যান্য বিষয় ও শর্তাদি সরকার কর্তৃক, এই আইন ও আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, নির্ধারিত হইবে।

পদোন্নতি

৮। (১) কোনো স্থায়ী সরকারি কর্মচারীকে সততা, মেধা, দক্ষতা, জ্যেষ্ঠতা, প্রশিক্ষণ ও সন্তোষজনক চাকরি বিবেচনাক্রমে পদোন্নতি প্রদান করিতে হইবে।

(২) এই আইন ও আপাতত বলবৎ কোন আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, প্রজাতন্ত্রের কর্মে পদোন্নতি প্রদান সম্পর্কিত বিষয় ও শর্তাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

শিক্ষানবিসকাল ও চাকরি স্থায়ীকরণ

৯। শিক্ষানবিসকাল ও চাকরি স্থায়ীকরণ সম্পর্কিত বিষয় ও শর্তাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

প্রেষণ ও লিয়েন

১০। প্রেষণ ও লিয়েন সম্পর্কিত বিষয় ও শর্তাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

বদলি, পদায়ন ও কর্মস্থল নির্ধারণ

১১। (১) সরকার বা, ক্ষেত্রমত, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ উহার প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো সরকারি কর্মচারীকে এতৎসংক্রান্ত বিধানাবলি অনুসারে বদলি, পদায়ন বা তাহার কর্মস্থল নির্ধারণ করিতে পারিবে।

(২) যেক্ষেত্রে বদলি, পদায়ন বা কর্মস্থল নির্ধারণের জন্য বিদ্যমান বিধানাবলিতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না থাকে, সেইক্ষেত্রে সুষ্ঠু জনবল ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, সরকারের অনুমোদনক্রমে, উহার প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারি কর্মচারীগণের বদলি, পদায়ন ও কর্মস্থল নির্ধারণের পদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

বৈদেশিক বা বেসরকারি চাকরি গ্রহণ

১২। বৈদেশিক বা বেসরকারি চাকরি গ্রহণ সম্পর্কিত বিষয় ও শর্তাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

জ্যেষ্ঠতা

১৩। (১) আপাতত বলবৎ কোনো আইনের বিধান অনুসারে সরকারি কর্মচারীগণের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারিত হইবে।

(২) কোনো পদের ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা সংক্রান্ত সুস্পষ্ট বিধান না থাকিলে, বা উপ-ধারা (১) এর অধীন জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা সম্ভব না হইলে, সরকার যেরূপ উপযুক্ত মনে করে সেইরূপে উহা নির্ধারণ করিতে পারিবে।

উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারী আত্তীকরণ

১৪। (১) প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মের বিলুপ্তি, প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস বা জনবল যৌক্তিকীকরণের ফলে উদ্বৃত্ত কোনো সরকারি কর্মচারীকে, যতদূর সম্ভব, অনুরূপ উদ্বৃত্ত হইবার অব্যবহিত পূর্বের বেতন স্কেলের সমস্কেলভুক্ত পদে আত্তীকরণ করিতে হইবে।

(২) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ব্যতীত, কোনো উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারীকে প্রজাতন্ত্রের কর্মের কোনো পদে আত্তীকরণ করা যাইবে না।

(৩) উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারী আত্তীকরণ সম্পর্কিত পদ্ধতি, শর্ত ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

পঞ্চম অধ্যায়

বেতন, ভাতা, সুবিধা, ইত্যাদি

বেতন, ভাতা ও সুবিধাদি নির্ধারণ

১৫। সরকার, সরকারি গেজেটে আদেশ দ্বারা, কোনো সরকারি কর্মচারীর বা সকল সরকারি কর্মচারীর বা সরকারি কর্মচারীগণের কোনো অংশের জন্য বেতন, ভাতা, বেতনের গ্রেড বা স্কেল, অন্যান্য সুবিধা ও প্রাপ্যতা বা অবসর সুবিধা সম্পর্কিত শর্তাদি নির্ধারণ করিতে পারিবে।

ষষ্ঠ অধ্যায়

ছুটি

ছুটি

১৬। (১) একজন সরকারি কর্মচারী তাহার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধানাবলি ও সরকারি আদেশ অনুসারে ছুটি প্রাপ্য হইবেন এবং উহা ভোগ করিতে পারিবেন ।

(২) ছুটি সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয় ও শর্তাদি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।

সপ্তম অধ্যায়

প্রশিক্ষণ, কর্মজীবন, কর্ম-মূল্যায়ন, পরিকল্পনা, ইত্যাদি

প্রশিক্ষণ

১৭। সরকারি কর্মচারীর পেশাগত দক্ষতা ও সক্ষমতার উত্তরোত্তর উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে, সরকার বা, ক্ষেত্রমত, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে, প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন কর্ম বা কর্মবিভাগের উপযোগী করিয়া প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত নীতিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে।

কর্মজীবন পরিকল্পনা

১৮। সরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানসমূহের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন এবং সুষ্ঠু জনবল ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যে, সরকার বা, ক্ষেত্রমত, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে, প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন কর্ম বা কর্মবিভাগের উপযোগী করিয়া কর্মজীবন পরিকল্পনা প্রণয়ন করিবে।

কর্ম-মূল্যায়ন

১৯। সরকারি কর্মচারীগণের বস্তুনিষ্ঠ কর্ম-মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে ফলাফলমুখী কার্যসম্পাদনগত নিরীক্ষা বা মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রণয়ন করিতে হইবে।

প্রতিষ্ঠানভিত্তিক মূল্যায়ন

২০। সরকার, সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহে দক্ষতা, জবাবদিহিতা, কার্যকারিতা ও গতিশীলতা নিশ্চিতকল্পে, ইহার উদ্দেশ্য ও অর্জিতব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং উহার নিরিখে দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

চাকরি বহি, চাকরি-বৃত্তান্ত, ইত্যাদি

২১। সরকার বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, উহার প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারি কর্মচারীর চাকরি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি অন্তর্ভুক্ত করিয়া হালনাগাদ চাকরিবহি, চাকরি-বৃত্তান্ত বা, ক্ষেত্রমত, চাকরির রেকর্ডপত্র (ডোসিয়ার) ও কর্মচারীভিত্তিক ইলেকট্রনিক তথ্য ভাণ্ডার, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত উপায়ে, সংরক্ষণ করিবে।

অষ্টম অধ্যায়

কল্যাণ ও সহায়তা

কল্যাণমূলক ব্যবস্থা

২২। (১) সরকার বা, ক্ষেত্রমত, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সরকারি কর্মচারী ও তাহার পরিবারের সদস্যগণের কল্যাণে শিক্ষা, চিকিৎসা, আবাসন ও অনুরূপ অন্যান্য বিষয়ে কর্ম-কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

ব্যাখ্যা।- এই উপ-ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘‘পরিবার” অর্থ-

(অ) কর্মচারী পুরুষ হইলে, তাহার স্ত্রী বা স্ত্রীগণ এবং কর্মচারী মহিলা হইলে, তাহার স্বামী; এবং

(আ) কর্মচারীর সহিত একত্রে বসবাসরত এবং তাহার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল সন্তান-সন্ততিগণ, পিতা, মাতা, দত্তক পুত্র (হিন্দু কর্মচারীগণের ক্ষেত্রে), নাবালক ভাই এবং অবিবাহিতা, তালাকপ্রাপ্তা বা বিধবা বোন।

(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি কর্মচারীগণকে অনুদান, সহায়তা, সুদমুক্ত ঋণ ও অগ্রিম প্রদান বা তাহাদের কল্যাণে স্বাস্থ্যবিমাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণসহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

(৩) সরকারি স্বার্থ রক্ষার্থে কোনো কর্মচারী শারীরিক বা অন্য কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইলে, তিনি এতদুদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে, যথাযথ ক্ষতিপূরণ পাইবার অধিকারী হইবেন।

কল্যাণ তহবিল, ভবিষ্য তহবিল, ইত্যাদি

২৩। সরকারি কর্মচারীগণের কল্যাণমূলক ভবিষ্য তহবিল, কল্যাণ তহবিল, বিমা বা অনুরূপ অন্যান্য বিষয় আপাতত বলবৎ আইন দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

আইনি সহায়তা

২৪। (১) কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে, সরকারি দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত কোনো বিষয়ে তাহাকে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করিয়া, ক্ষতিপূরণ, অবমাননা, মানহানি বা অন্য কোনো মামলা ‍বা আইনি কার্যধারা রুজু করা হইলে তিনি সরকারি আইন কর্মকর্তার সহায়তায় বা নিজ দায়িত্বে উহা পরিচালনা করিতে পারিবেন এবং উক্ত মামলা পরিচালনায় ব্যয়িত অর্থ নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্তে সরকার কর্তৃক প্রদেয় হইবে।

(২) দুর্নীতির অভিযোগে অথবা সরকার বা, ক্ষেত্রমত, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে কোনো কর্মচারীকে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করিয়া কোনো মামলা বা আইনি কার্যধারা ‍রুজু করা হইলে, উপ-ধারা (১) এর অধীন অনুরূপ অর্থ প্রদেয় হইবে না।

(৩) সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালন সম্পর্কিত বিষয়ে তাহাকে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করিয়া দায়েরকৃত কোনো অভিযোগ, মামলা বা আইনি কার্যধারা মিথ্যা প্রমাণিত হইলে, উক্ত কর্মচারীর আবেদনক্রমে, সরকার বা, ক্ষেত্রমত, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ অনুরূপ মিথ্যা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

নবম অধ্যায়

সরকারি সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণ

নির্ধারিত সময়ে সরকারি সেবা প্রদান

২৫। (১) কোনো ব্যক্তি, সরকারি কোনো কার্য বা সেবা প্রাপ্তির জন্য আবেদন বা অনুরোধ করিলে, আপাতত বলবৎ সংশ্লিষ্ট আইনের বিধান ও সরকারি আদেশ সাপেক্ষে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অথবা যে ক্ষেত্রে সময়সীমা নির্ধারিত নাই সেই ক্ষেত্রে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে, প্রার্থীত সেবা সরবরাহ বা অনুরূপ আবেদন নিষ্পত্তি করিতে হইবে।

(২) যে ক্ষেত্রে অনুরূপ কোনো আবেদন বা অনুরোধ যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণে, প্রত্যাখ্যান বা না-মঞ্জুর করা হয় অথবা নির্ধারিত বা যুক্তিসঙ্গত সময়ে সরবরাহ বা নিষ্পত্তি করা না যায়, সেই ক্ষেত্রে উহার কারণ সেবা প্রার্থী ব্যক্তিকে অবহিত করিতে হইবে।

(৩) কোনো কর্মচারী ইচ্ছাকৃত ও অভ্যাসগতভাবে এই ধারার বিধান লংঘন করিলে, উহা অসদাচরণ, বা, ক্ষেত্রমত, অদক্ষতা হিসাবে গণ্য হইবে।

প্রতিকার ও আপিল

২৬। (১) সেবা প্রার্থী কোনো ব্যক্তির আবেদন না-মঞ্জুর বা প্রত্যাখ্যাত হইলে অথবা নির্ধারিত বা যুক্তিসঙ্গত সময়ে উহা নিষ্পত্তি করা না হইলে, তিনি প্রতিকারকারী কর্তৃপক্ষের নিকট উহার প্রতিকার চাহিয়া আবেদন করিতে পারিবেন এবং উক্ত কর্তৃপক্ষ আবেদন বিবেচনা করিয়া যথোপযুক্ত আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল করিতে পারিবেন এবং উক্ত কর্তৃপক্ষ আপিল বিবেচনাক্রমে যথোপযুক্ত আদেশ প্রদান করিতে পারিবে ।

(৩) কোনো ক্ষেত্রে প্রতিকার বা আপিলের নিমিত্ত যথাযথ কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করা না হইয়া থাকিলে, সেবা প্রদানকারী কর্মচারীর অব্যবহিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রতিকারকারী কর্তৃপক্ষ এবং প্রতিকারকারী কর্তৃপক্ষের অব্যবহিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আপিল কর্তৃপক্ষ হিসাবে বিবেচিত হইবে।

(৪) যখন আপিল কর্তৃপক্ষ বা প্রতিকারকারী কর্তৃপক্ষ মনে করে যে, কোনো কর্মচারী পর্যাপ্ত ও যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত নির্ধারিত বা যুক্তিসঙ্গত সময়ে, উপ-ধারা (৫) এর অধীন নির্দিষ্টকৃত কোনো সরকারি সেবা প্রদানে ব্যর্থ হইয়াছেন, তখন উক্ত কর্তৃপক্ষ দায়ী কর্মচারীর নিকট হইতে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায় করিয়া উহা সেবাপ্রার্থী ব্যক্তিকে প্রদানের আদেশ প্রদান করিতে পারিবে ।

(৫) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে সকল কার্য বা সেবা প্রদানে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে উপ-ধারা (৪) এর অধীন ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশ প্রদান করা যাইবে, উহা নির্দিষ্ট করিতে পারিবে।

(৬) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ দ্বারা কোনো কর্মচারী সংক্ষুব্ধ হইলে, তিনি উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল দায়ের অথবা আদেশ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিকট পুনর্বিবেচনার আবেদন করিতে পারিবেন।

(৭) এই ধারার অধীন ব্যবস্থা গ্রহণের পদ্ধতি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে এবং যথাসম্ভব প্রতিটি কার্য বা ধাপ নিষ্পত্তির সময়সীমা উহাতে সুনির্দিষ্ট থাকিতে হইবে।

প্রণোদনা, পুরস্কার, স্বীকৃতি ইত্যাদি

২৭। সরকার, সরকারি সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণে কর্মচারীগণের বিশেষ সাফল্য, উদ্যোগ, উদ্ভাবনী প্রয়াস বা অবদানের জন্য প্রণোদনা, পুরস্কার, স্বীকৃতি বা সম্মানি প্রদান করিবার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

দশম অধ্যায়

সরকারি কর্মচারীর অনুসরণীয় নীতি, আচরণ, শৃঙ্খলা, ইত্যাদি

সরকারি কর্মচারীগণের অনুসরণীয় নীতি ও মানদণ্ড প্রণয়ন

২৮। সরকার, জনপ্রশাসনের সকল পর্যায়ে সুশাসন নিশ্চিতকল্পে, সরকারি কার্য সম্পাদনের নীতি, শুদ্ধাচার চর্চা এবং কর্মচারীগণ কর্তৃক অনুসরণীয় নৈতিকতার মানদণ্ডসমূহসহ অনুসরণের প্রক্রিয়া ও কৌশল প্রণয়ন করিবে।

নিয়মিত উপস্থিতির ব্যত্যয়ে বেতন কর্তন

২৯। (১) কোনো কর্মচারী অফিস বা কর্মস্থলে উপস্থিতি সংক্রান্ত বিধির কোনো বিধান বা সরকারি আদেশ লঙ্ঘন করিলে তজ্জন্য, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিয়া, এতৎসংক্রান্ত বিধিতে উল্লিখিত বিধান অনুসারে উক্ত কর্মচারীর বেতন কর্তন করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ কর্মচারী, অনুরূপ আদেশ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিকট পুনর্বিবেচনার আবেদন করিতে পারিবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন পুনর্বিবেচনার কোনো আবেদন করা হইলে, আদেশ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে শুনানির যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিয়া, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ সংশোধন বা বাতিল করিতে অথবা বহাল রাখিতে পারিবে।

আচরণ ও শৃঙ্খলা

৩০। এই আইনের বিধানাবলির সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, সরকারি কর্মচারীর আচরণ এবং শৃঙ্খলা সংশ্লিষ্ট বিষয় ও শর্তাদি এতৎসংশ্লিষ্ট বিধি এবং সরকার কর্তৃক সময় সময় জারিকৃত আদেশ দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

বিভাগীয় কার্যধারা

৩১। (১) সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ এতৎসংক্রান্ত আপাতত বলবৎ আইনের বিধান অনুসরণক্রমে কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা রুজু ও পরিচালনা করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন রুজুকৃত বিভাগীয় কার্যধারা এবং উহা হইতে উদ্ভূত আপিল, পুনর্বিবেচনা ও পুনঃরীক্ষণের পদ্ধতি এবং এতৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।

দণ্ড

৩২। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, বিভাগীয় কার্যধারায় দোষী সাব্যস্ত কোনো কর্মচারীকে এতৎসংক্রান্ত বিধির বিধান সাপেক্ষে, নিম্নবর্ণিত এক বা একাধিক লঘু বা গুরুদণ্ড আরোপ করিতে পারিবে, যথা :-

(ক) লঘু দণ্ডসমূহ –

(অ) তিরস্কার;

(আ) নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি স্থগিতকরণ;

(ই) বেতন স্কেলের নিম্নধাপে অবনমিতকরণ;

(ঈ) কোনো আইন বা সরকারি আদেশ অমান্যকরণ অথবা কর্তব্যে ইচ্ছাকৃত অবহেলার কারণে সরকারি অর্থ বা সম্পত্তির ক্ষতি সংঘটিত হইলে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায়।

(খ) গুরু দণ্ডসমূহ-

(অ) নিম্ন পদ বা নিম্নতর বেতন স্কেলে অবনমিতকরণ;

(আ) বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান;

(ই) চাকরি হইতে অপসারণ;

(ঈ) চাকরি হইতে বরখাস্ত।

ক্ষতিপূরণ আদায়ের পদ্ধতি

৩৩। (১) ধারা ৩২ এর দফা (ক) এর উপ-দফা (ঈ) এ উল্লিখিত ক্ষতিপূরণের অর্থ দায়ী কর্মচারীর নিকট হইতে আদায় করিতে হইবে।

(২) দায়ী কর্মচারীর নিকট হইতে উপ-ধারা (১) এর অধীন ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায় করা সম্ভব না হইলে, উহা তাহার বেতন, ভাতা বা প্রাপ্য অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা হইতে কর্তনপূর্বক আদায় করা যাইবে, এবং অনুরূপভাবে আদায় করা সম্ভব না হইলে, উহা Public Demands Recovery Act, 1913 (Bengal Act No. III of 1913) এর অধীন সরকারি পাওনা হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে।

আপিল

৩৪। ধারা ৩২ এর অধীন প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ কোনো কর্মচারী, উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে, এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল করিতে পারিবেন এবং আপিল কর্তৃপক্ষ উক্ত আদেশ বহাল রাখিতে, বাতিল বা পরিবর্তন করিতে পারিবে।

রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ আপিলযোগ্য নয়

৩৫। ধারা ৩৪ এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ধারা ৩২ বা ধারা ৩৩ এর উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাইবে না।

পুনর্বিবেচনা (review)

৩৬। (১) রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ধারা ৩২ এর অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ দ্বারা সংক্ষুব্ধ কর্মচারী, উক্ত আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট আবেদন করিতে পারিবেন।

(২) রাষ্ট্রপতি, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাপ্ত আবেদন বিবেচনাক্রমে যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন সেইরূপ আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন।

পুনঃরীক্ষণ (revision)

৩৭। রাষ্ট্রপতি, তদকর্তৃক ধারা ৩২ এর অধীন প্রদত্ত কোনো আদেশ, উহা প্রদানের ১ (এক) বৎসরের মধ্যে, পুনঃরীক্ষণ করিয়া যেরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন সেইরূপ আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন।

বরখাস্তকৃত কর্মচারীর পুনরায় নিয়োগের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা

৩৮। প্রজাতন্ত্রের কর্ম হইতে বরখাস্ত হইয়াছেন এইরূপ কোনো ব্যক্তি ভবিষ্যতে প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্ম বা রাষ্ট্রের অন্য কোনো কর্তৃপক্ষে নিয়োগ লাভের যোগ্য হইবেন না।

সাময়িক বরখাস্ত

৩৯। (১) কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের প্রস্তাব বা বিভাগীয় কার্যধারা রুজু করা হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অভিযোগের মাত্রা ও প্রকৃতি, অভিযুক্ত কর্মচারীকে তাহার দায়িত্ব হইতে বিরত রাখিবার আবশ্যকতা, তৎকর্তৃক তদন্তকার্যে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা, ইত্যাদি বিবেচনা করিয়া তাহাকে সাময়িক বরখাস্ত করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অধিকতর সমীচীন মনে করিলে, এইরূপ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করিবার পরিবর্তে, লিখিত আদেশ দ্বারা, তাহার ছুটির প্রাপ্যতা সাপেক্ষে, উক্ত আদেশে উল্লিখিত তারিখ হইতে ছুটিতে গমনের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(২) কোনো কর্মচারী দেনার দায়ে কারাগারে আটক থাকিলে, অথবা কোনো ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার হইলে বা তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গৃহীত হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ উক্তরূপ আটক, গ্রেফতার বা অভিযোগপত্র গ্রহণের দিন হইতে তাহাকে সাময়িক বরখাস্ত করিতে পারিবে।

(৩) কোনো সরকারি কর্মচারী তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ হইতে অব্যাহতি বা খালাসপ্রাপ্ত হইলে, তাহার সাময়িক বরখাস্ত আদেশ, যদি থাকে, প্রত্যাহার করিতে হইবে।

বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করিবার কারণে চাকরির অবসান

৪০। (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো সরকারি কর্মচারী বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করিতে পারিবেন না।

(২) কোনো কর্মচারী উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করিলে, সরকার বা, ক্ষেত্রমত, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শাইবার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিয়া, তাহার চাকরি অবসানের আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো বিভাগীয় কার্যধারা রুজু করিবার প্রয়োজন হইবে না।

(৪) উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত হইবে।

একাদশ অধ্যায়

সরকারি কর্মচারীর ফৌজদারি অপরাধ

ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত কর্মচারীর ক্ষেত্রে ব্যবস্থাদি

৪১। (১) কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেফতার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।

(২) কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো আদালতে ফৌজদারি মামলা বা অন্য কোনো আইনি কার্যধারা বিচারাধীন থাকিলে, বিচারাধীন কোনো এক বা একাধিক অভিযোগের বিষয়ে তাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা রুজু বা নিষ্পত্তির ব্যাপারে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকিবে না।

(৩) যদি বিচারকারী আদালতের গোচরীভূত হয় যে, তাহার আদালতে বিচারাধীন কোনো ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি একজন সরকারি কর্মচারী, তাহা হইলে আদালত অনতিবিলম্বে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী বা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিবে।

ফৌজদারি মামলায় দণ্ডিত কর্মচারীর ক্ষেত্রে ব্যবস্থা

৪২। (১) কোনো সরকারি কর্মচারী ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক মৃত্যুদণ্ড বা ১ (এক) বৎসর মেয়াদের অধিক মেয়াদের কারাদন্ডে দণ্ডিত হইলে, উক্ত দণ্ড আরোপের রায় বা আদেশ প্রদানের তারিখ থেকে চাকরি হইতে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত হইবেন।

(২) কোনো সরকারি কর্মচারী ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর মেয়াদের কোনো কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইলে, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাহাকে নিম্নবর্ণিত যে কোনো দণ্ড আরোপ করিতে পারিবে, যথা:-

(ক) তিরস্কার;

(খ) নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি স্থগিতকরণ;

(গ) নিম্ন পদ বা নিম্নতর বেতন স্কেলে অবনমিতকরণ; অথবা

(ঘ) কোনো আইন বা সরকারি আদেশ অমান্যকরণ অথবা কর্তব্যে ইচ্ছাকৃত অবহেলার কারণে সরকারি অর্থ বা সম্পত্তির ক্ষতি সংঘটিত হইলে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ আদায়।

(৩) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, রাষ্ট্রপতি যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, আদালত কর্তৃক কারাদণ্ডে দণ্ডিত ও চাকরি হইতে বরখাস্তকৃত কোনো ব্যক্তিকে অনুরূপ বরখাস্ত হইতে অব্যাহতি প্রদানের বিশেষ কারণ বা পরিস্থিতি রহিয়াছে, তাহা হইলে তিনি উক্ত ব্যক্তিকে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবেন, এবং অনুরূপ আদেশ প্রদান করা হইলে উক্ত কর্মচারী চাকরিতে পুনর্বহাল হইবেন।

(৪) উপ-ধারা (২) এর অধীন দণ্ড আরোপের জন্য নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো বিভাগীয় কার্যধারা রুজু করিবার বা কারণ দর্শাইবার প্রয়োজন হইবে না এবং এতদুদ্দেশ্যে প্রদত্ত আদেশ আপিলযোগ্য হইবে না।

(৫) ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক আরোপিত দণ্ডাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে-

(ক) উপ-ধারা (১) এর অধীন বরখাস্তকৃত ব্যক্তি, পরবর্তীতে আপিল আদালত কর্তৃক খালাসপ্রাপ্ত হইলে তাহাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করিতে হইবে; এবং

(খ) উপ-ধারা (২) এর অধীন দণ্ডিত ব্যক্তি, পরবর্তীতে আপিল আদালত কর্তৃক খালাসপ্রাপ্ত হইলে, তাহার উপর আরোপিত দণ্ডাদেশ প্রত্যাহার করিতে হইবে।

(৬) খালাসপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী, অবসরে গমনের বয়সে উপনীত হইলে অথবা সংশ্লিষ্ট পদ বা চাকরির বিলুপ্তি ঘটিলে, তাহাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা যাইবে না, তবে তিনি সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত আর্থিক সুবিধা প্রাপ্য হইবেন।

দ্বাদশ অধ্যায়

অবসর, ইস্তফা ইত্যাদি

সরকারি কর্মচারীর অবসর গ্রহণ

৪৩। (১) এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে,-

(ক) একজন সরকারি কর্মচারী তাহার বয়স ৫৯ (ঊনষাট) বৎসর পূর্তিতে, এবং

(খ) একজন মুক্তিযোদ্ধা সরকারি কর্মচারী তাহার বয়স ৬০ (ষাট) বৎসর পূর্তিতে, অবসর গ্রহণ করিবেন।

(২) সরকার বা, ক্ষেত্রমত, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (১) এর দফা (খ) এ উল্লিখিত মুক্তিযোদ্ধা কর্মচারীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ বা পরিচিতি যাচাই করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ লাভকারী ব্যক্তি এইরূপ যাচাই হইতে অব্যাহতি প্রাপ্ত হইবেন।

ঐচ্ছিক অবসর গ্রহণ

৪৪। (১) চাকরির মেয়াদ ২৫ (পঁচিশ) বৎসর পূর্ণ হইবার পর যে কোনো সময় একজন সরকারি কর্মচারী অবসর গ্রহণের অভিপ্রেত তারিখের অন্যূন ৩০ (ত্রিশ) দিন পূর্বে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট চাকরি হইতে অবসর গ্রহণের অভিপ্রায় লিখিতভাবে ব্যক্ত করিয়া অবসর গ্রহণ করিতে পারিবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ব্যক্তকৃত অভিপ্রায় চূড়ান্ত হিসাবে গণ্য হইবে এবং উহা সংশোধন বা প্রত্যাহার করা যাইবে না।

সরকার কর্তৃক অবসর প্রদান

৪৫। কোনো সরকারি কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ ২৫ (পঁচিশ) বৎসর পূর্ণ হইবার পর যে কোনো সময় সরকার, জনস্বার্থে, প্রয়োজনীয় মনে করিলে কোনোরূপ কারণ না দর্শাইয়া তাহাকে চাকরি হইতে অবসর প্রদান করিতে পারিবে :

তবে শর্ত থাকে যে, যেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, সেইক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে।

অক্ষমতাজনিত অবসর

৪৬। (১) কোনো সরকারি কর্মচারী শারীরিক অথবা মানসিক অসামর্থ্য বা বৈকল্যের কারণে সরকারি কর্ম সম্পাদনে নিজেকে অক্ষম মনে করিলে, চাকরি হইতে অবসর গ্রহণের আবেদন করিতে পারিবেন এবং এতদুদ্দেশ্যে গঠিত মেডিকেল বোর্ড কর্তৃক স্থায়ীভাবে অক্ষম ঘোষিত হইলে, সরকার বা, ক্ষেত্রমত, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ তাহাকে অক্ষমতাজনিত কারণে চাকরি হইতে অবসর প্রদান করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকারি দায়িত্ব পালনের কারণে কোনো সরকারি কর্মচারীর শারীরিক অথবা মানসিক অক্ষমতার উদ্ভব হলে সরকার বিধি অনুযায়ী যথোপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ বা সুবিধা প্রদানের বিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।

অবসর-উত্তর ছুটি

৪৭। কোনো সরকারি কর্মচারী, চাকরি হইতে অবসরে গমন করিলে বা তাহার চাকরির অবসান ঘটিলে, তিনি এতৎসংক্রান্ত বিধানাবলি ও শর্ত সাপেক্ষে, সর্বোচ্চ ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত, অবসর-উত্তর ছুটি প্রাপ্য হইবেন ।

অবসর গ্রহণকারী সরকারি কর্মচারীকে পুনঃনিয়োগের ক্ষেত্রে বাধা-নিষেধ

৪৮। কোনো কর্মচারীর অবসর গ্রহণের পর তাহাকে, ধারা 1[৪৯] এর বিধান অনুসরণ ব্যতীত, প্রজাতন্ত্রের কর্ম বা রাষ্ট্রের অন্য কোনো কর্তৃপক্ষে কোনো উপায়ে পুনরায় নিয়োগ করা যাইবে না:

তবে শর্ত থাকে যে, সাংবিধানিক কোনো পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হইবে না।

অবসর গ্রহণকারী সরকারি কর্মচারীকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ

৪৯। (১) রাষ্ট্রপতি, জনস্বার্থে, কোনো কর্মচারীকে, চাকরি হইতে অবসর গ্রহণের পর, সরকারি চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করিতে পারিবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারী অবসর-উত্তর ছুটি ভোগরত থাকিলে, উক্ত ছুটি স্থগিত থাকিবে এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ সমাপ্তির পর উক্ত অবশিষ্ট অবসর-উত্তর ছুটি ও তদ্‌সংশ্লিষ্ট সুবিধা ভোগ করা যাইবে।

অবসর সুবিধা, ইত্যাদি

৫০। (১) সরকারি কর্মচারীর অবসরে গমন বা অন্য কোনো উপায়ে চাকরির পরিসমাপ্তির ক্ষেত্রে সুবিধাদির প্রাপ্যতা, শর্তাদি ও অন্যান্য বিষয়, এই আইনের বিধানাবলি এবং ধারা 1[১৫] এর অধীন জারিকৃত আদেশ সাপেক্ষে, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।

(২) অবসর সুবিধা সংশ্লিষ্ট আবেদন ও কার্যাদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যথাসম্ভব দ্রুত নিষ্পত্তি করিতে হইবে এবং, পর্যাপ্ত ও যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত, উহা করিতে ব্যর্থ হইলে, তাহা সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর দায়িত্বে অবহেলা হিসাবে গণ্য হইবে।

অবসর সুবিধা স্থগিত, প্রত্যাহার ইত্যাদি

৫১। (১) কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে সরকারি অর্থের সংশ্লেষ রহিয়াছে এমন কোনো বিচারিক বা বিভাগীয় কার্যধারা অনিষ্পন্ন থাকিলে, উহার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত, তিনি, ভবিষ্য তহবিলে প্রদত্ত তাহার চাঁদা এবং উহার সুদ ব্যতীত, অন্য কোনো অবসর সুবিধা প্রাপ্য হইবেন না।

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর অবসর সুবিধা, অনুরূপ কার্যধারায় প্রদত্ত আদেশ সাপেক্ষে প্রদেয় হইবে।

(৩) কোনো সরকারি কর্মচারীকে, এই আইনের অধীন, চাকরি হইতে অপসারণ বা বরখাস্ত করা হইলে, তিনি ভবিষ্য তহবিলে প্রদত্ত তাহার চাঁদা এবং উহার সুদ ব্যতীত, অন্য কোনো সুবিধা প্রাপ্য হইবেন না:

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার বিশেষ বিবেচনায় অনুকম্পা হিসাবে এ সংক্রান্ত বিধি অনুযায়ী অর্থ প্রদান করিতে পারিবে।

(৪) অবসর সুবিধা ভোগী কোনো ব্যক্তি গুরুতর অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত বা কোনো গুরুতর অসদাচরণের দোষে দোষী সাব্যস্ত হইলে, কারণ দর্শাইবার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করিয়া, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, তাহার অবসর সুবিধা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বাতিল, স্থগিত বা প্রত্যাহার করিতে পারিবে।

অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণমুক্ত

৫২। চাকরি হইতে অবসরে গমনের পর, ধারা ৪৯ এর অধীন চুক্তিভিত্তিক কর্মরত থাকা ব্যতীত, কোনো ব্যক্তির, বৈদেশিক বা বেসরকারি চাকরি বা কোনো প্রকল্পে চাকরি গ্রহণ, অন্য কোনো পেশা গ্রহণ, ব্যবসা পরিচালনা এবং বিদেশ যাত্রার জন্য সরকার বা কর্তৃপক্ষের অনুমতি গ্রহণের প্রয়োজন হইবে না:

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে, অনুরূপ ভিন্ন চাকরি বা পেশা গ্রহণ, ব্যবসা পরিচালনা বা বিদেশ যাত্রা বারিত করিয়া বা উহার ক্ষেত্রে অনুমতি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করিয়া আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

চাকরি হইতে ইস্তফা

৫৩। কোনো সরকারি কর্মচারী, চাকরিকালীন যে কোনো সময়ে, চাকরি হইতে স্বেচ্ছায় ইস্তফা প্রদান করিবার আবেদন করিতে পারিবেন, যাহা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিষ্পত্তি বা চূড়ান্ত হইবে।

ত্রয়োদশ অধ্যায়

বিবিধ

আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে সেবা গ্রহণ

৫৪। (১) সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে অনুমোদিত বা নির্দিষ্টকৃত কর্ম বা পদের বিপরীতে, সরকারি ক্রয় এবং এতৎসংক্রান্ত আপাতত বলবৎ কোনো আইনের বিধান অনুসরণক্রমে, আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে সেবা গ্রহণ করা যাইবে।

(২) আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে সেবা গ্রহণকে কোনো অর্থেই প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বলিয়া গণ্য করা যাইবে না।

সীমাবদ্ধতা

৫৫। এই আইনের অন্যান্য বিধান ও আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ৫, ১৪, ১৫, ২৯, ৪০, ৪২ ও ৪৫ এর অধীন, প্রদত্ত বা জারিকৃত আদেশ, নির্দেশ অথবা গৃহীত কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কোনো আদালতে প্রশ্ন বা আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে না এবং কৃত বা কৃত বলিয়া বিবেচিত কোনো কার্যের জন্য সরকার, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের বা অন্য কোনো আইনি কার্যধারা রুজু করা যাইবে না।

কমিশনের পরামর্শ গ্রহণের অপ্রয়োজনীয়তা

৫৬। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নরূপ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, নিম্নবর্ণিত বিষয়ে কমিশনের সহিত পরামর্শের প্রয়োজন হইবে না, যথা:-

(ক) ধারা ১৪ এর অধীন উদ্বৃত্ত কর্মচারী আত্তীকরণ;

(খ) ধারা ২৯ এর অধীন নিয়মিত উপস্থিতির ব্যত্যয়ে বেতন কর্তন;

(গ) ধারা ৩২ এর দফা (ক) অনুসারে লঘুদণ্ড আরোপ; এবং

(ঘ) ধারা ৪৯ এর অধীন অবসর গ্রহণকারী কর্মচারীকে প্রজাতন্ত্রের কর্মে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ।

বেতন, ভাতা, ইত্যাদি সম্পর্কিত বিষয়ে প্রদত্ত আদেশ পুনর্বিবেচনা

৫৭। (১) কোনো কর্মচারী তাহার বেতন, ভাতা, অবসর সুবিধা বা চাকরির অন্য কোনো শর্তের বিষয়ে প্রদত্ত কোনো আদেশের দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইলে, তিনি আদেশ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিকট পুনর্বিবেচনার আবেদন করিতে পারিবেন।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হইলে, আদেশ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ এতৎসংক্রান্ত বিধির অনুসরণক্রমে তৎকর্তৃক প্রদত্ত আদেশ সংশোধন বা বাতিল করিতে অথবা বহাল রাখিতে পারিবে।

(৩) এই ধারার অধীন পুনর্বিবেচনার আবেদন দাখিলের পদ্ধতি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে ।

বেতন, ভাতা, ইত্যাদি সম্পর্কিত বিষয়ে প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে আপিল

৫৮। (১) কোনো কর্মচারী তাহার বেতন, ভাতা, অবসর সুবিধা বা চাকরির অন্য কোনো শর্তের বিষয়ে প্রদত্ত কোনো আদেশের দ্বারা সংক্ষুব্ধ হইলে, তিনি, এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল করিতে পারিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, ধারা ৫৫ এ উল্লিখিত ধারাসমূহের অধীন জারিকৃত বা প্রদত্ত আদেশের বিরূদ্ধে এবং যে সকল বিষয়ে এই আইনের অন্যত্র আপিল দায়েরের বিধান রহিয়াছে, সেই সমস্ত ক্ষেত্রে এই ধারার অধীন আপিল দায়ের করা যাইবে না।

(২) যে ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত আপিল কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত নাই, সেইক্ষেত্রে আদেশ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের পরবর্তী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল দায়ের করা যাইবে ।

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো আপিল দায়ের করা হইলে, আপিল কর্তৃপক্ষ এতৎসংক্রান্ত বিধি অনুসরণক্রমে যথোপযুক্ত আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(৪) এই ধারার অধীন আপিল দায়েরের পদ্ধতি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে ।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

৫৯। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার,  1[কমিশনের সহিত পরামর্শক্রমে,] সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো বিধি প্রণীত হইবার সঙ্গে সঙ্গে উক্ত বিষয় সম্পর্কিত সংবিধানের ১৩৩ অনুচ্ছেদের শর্তাংশে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বা অন্য কোনো আইনের অধীন প্রণীত আপাতত বলবৎ বিধি বা আদেশের কার্যকরতা রহিত হইবে।

(৩) এই আইন এবং আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইন বা আইনের বিধান সাপেক্ষে, প্রজাতন্ত্রের কর্মে কর্মচারীগণের নিয়োগ ও কর্মের শর্ত সম্পর্কে Rules of Business,1996 এর অধীন ব্যবস্থা গ্রহণ অথবা সরকারি আদেশ জারি করিবার সরকারের এখতিয়ার যথারীতি অক্ষুণ্ন থাকিবে।

অসুবিধা দূরীকরণ

৬০। এই আইনের কোনো বিধান বাস্তবায়ন করিবার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা উদ্ভব বা কোনো বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদান আবশ্যক হইলে, উক্তরূপ অসুবিধা দূরীকরণ বা ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে, সরকার, এই আইনের সংশ্লিষ্ট বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রক্ষা করিয়া, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

রহিতকরণ ও হেফাজত

৬১। (১) নিম্নবর্ণিত আইনসমূহ, অতঃপর উক্ত আইনসমূহ বলিয়া অভিহিত, এতদ্দ্বারা রহিত করা হইল, যথা:-

(ক) Public Servants (Retirement) Act, 1974 (Act No. XII of 1974);

(খ) Services (Reorganization and Conditions) Act, 1975 (Act No. XXXII of 1975);

(গ) Government Servants (Special Provisions) Ordinance, 1979 (Ordinance No. XI of 1979);

(ঘ) Public Employees Discipline (Punctual Attendance) Ordinance, 1982 (Ordinance No. XXXIV of 1982);

(ঙ) Public Servants (Dismissal on Conviction) Ordinance, 1985 (Ordinance No. V of 1985); এবং

(চ) উদ্বৃত্ত সরকারি কর্মচারী আত্তীকরণ আইন, ২০১৬ (২০১৬ সনের ৩ নং আইন)।

(২) উক্তরূপ রহিতকরণ সত্ত্বেও,-

(ক) উক্ত আইনসমূহের অধীন, সময় সময়, প্রণীত বা জারিকৃত এবং এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে বলবৎ বিধি, আদেশ, নির্দেশসমূহ এই আইনের অধীন প্রণীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;

(খ) উক্ত আইনসমূহের অধীন কৃত কোনো কাজ-কর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; এবং

(গ) উক্ত আইনের অধীন গৃহীত কোনো কার্য বা ব্যবস্থা অনিষ্পন্ন বা চলমান থাকিলে, উহা উক্ত আইনসমূহের বিধান অনুসারে নিষ্পত্তি করিতে হইবে।

ইংরেজিতে অনূদিত পাঠ প্রকাশ

৬২। (১) এই আইন প্রবর্তনের পর সরকার, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের ইংরেজিতে অনূদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।

(২) বাংলা পাঠ এবং ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে।


সরকারি প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার পার্সোনেল নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ সংক্রান্ত

সরকারি প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার পার্সোনেল নিয়োগ বিধিমালা ২০১৯ সংক্রান্ত

সরকারি প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার পার্সোনেল নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে